উপার্জন বেশ ভালো হলেও ব্যয়বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে সঞ্চয় তেমন একটা হবে না। শরীর খুব একটা ... বিশদ
পুরুলিয়ার নিতুড়িয়ার সহকারি কৃষি অধিকর্তা পরিমল বর্মন জানিয়েছেন, যেসব কৃষক প্রাক খরিফ মরশুমে চিনাবাদাম চাষ করতে চান, তাঁদের এখনই জমি ভালোভাবে চাষ দিয়ে নিতে হবে। সেক্ষেত্রে লাঙল কিংবা পাওয়ার ট্রিলার দিয়ে চাষ দিলে চলবে না। ট্রাক্টরের সাহায্যে চাষ দিয়ে একেবারে জমির মাটি ওলোট-পালোট করে দিতে হবে। যাতে নীচের মাটি উপরে চলে আসে এবং উপরের মাটি নীচে চলে যায়। কারণ, মাটি বাহিত অনেক জীবাণু রয়েছে, যেগুলি চাষের পরবর্তী সময়ে চিনাবাদামের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। সেক্ষেত্রে চাষ দেওয়ার ফলে নীচের মাটি উপরে চলে আসলে সরাসরি সূর্যালোক পড়ায় মাটিবাহিত জীবাণুর সক্রিয়তা নষ্ট হয়ে যায়। পাশাপাশি এখনই কৃষককে শংসিত বীজ সংগ্রহ করে ফেলতে হবে। কারণ, ভালো বীজ ছাড়া চাহিদামতো ফলন পাওয়া সম্ভব নয়। ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে হাল্কা সেচ দিয়ে বীজ বুনতে হবে। চিনা বাদামের জমিতে ইঁদুরের উপদ্রব হয়। ফলে সেদিকে নজর রাখতে হবে। একলপ্তে অর্থাৎ পাশাপাশি জমি রয়েছে এমন বেশকিছু কৃষক একসঙ্গে চাষ করলে সুবিধা হয়।
খোসা ছাড়ানো বাদাম একর প্রতি ২৫-৩৫ কেজি বীজ লাগবে। এমএইচ ২ উন্নত জাতটির জন্য একর প্রতি ৫০ কেজির মতো খোসা ছাড়ানো বীজ বাদাম প্রয়োজন।
ক্যাপটান ৭৫ শতাংশ দুই থেকে আড়াই গ্রাম প্রতি কেজি বীজের সঙ্গে ভালোভাবে মিশেয়ে বীজ শোধন করতে হবে। এক একর জমিতে চাষের জন্য প্রয়োজনীয় বীজের সঙ্গে ৪০০ গ্রাম রাইজোবিয়াম কালচার মেশাতে হবে।
বেশ কয়েকবার লাঙল দিয়ে মইয়ের সাহায্যে মাটি সমান করে নিতে হবে। মাটি যেন ঝুরঝুরে হয়। আগাছা থাকলে তা তুলে ফেলতে হবে। বিনা সেচে খরিফ চাষের জন্য জমি তৈরির সময় শেষ চাষের আগে একর প্রতি ৮ কেজি নাইট্রোজেন, ১২ কেজি ফসফেট ও ২০ কেজি পটাশ সার মাটিতে মেশাতে হবে। সেচযুক্ত রবি মরশুমে শুধুমাত্র জমি তৈরির সময় একবার ৮ কেজি নাইট্রোজেন, ২৪ কেজি ফসফেট ও ৩২ কেজি পটাশ প্রয়োগ করতে হবে জমিতে। দু’টি গাছের মধ্যে ৩০সেন্টিমিটার দূরত্ব রেখে বীজ বুনতে হবে। এমএইচ ২ জাতটির ক্ষেত্রে দূরত্ব রাখতে হবে ১৫ সেমি। ফুল আসার আগে যদি বৃষ্টি হয়ে মাটি চেপে যায়, তা হলে কোদাল বা নিড়ানির সাহায্যে মাটি আবার আলগা করে দিতে হবে। খরিফ চাষে সাধারণত সেচের প্রয়োজন হয় না। তবে খরা দেখা দিলে মাটির অবস্থা বুঝে সেচ দিতে হবে।
প্রাক খরিফ মরশুমে প্রয়োজনমতো ২-৪টি সেচ দেওয়া দরকার। এক্ষেত্রে প্রথম সেচ দিতে হবে ২৫দিনের মাথায়। দ্বিতীয় সেচটি প্রয়োজনমতো আরও ২০-২৫দিন পর দিতে হবে। চিনা বাদামের প্রধান রোগ টিক্কা। এই রোগে গাছের পাতা ও ডাঁটিতে কালো দাগ দেখা যায়।
প্রতিকারের জন্য ম্যানকোজেব ২.৫ গ্রাম আড়াই গ্রাম প্রতি লিটার জলে গুলে স্প্রে করতে হবে। মরচে রোগের ক্ষেত্রেও একইভাবে স্প্রে করতে হবে। জাবপোকা, ল্যাদাপোকা সহ অন্যান্য পোকার আক্রমণ রোধে ফিপ্রোনিল ১ মিলি বা মনোক্রোটোফস দেড় মিলি জলে গুলে স্প্রে করলে সুফল পাওয়া যায়।