সম্প্রতি বেহালা ব্লাইন্ড স্কুলের মাঠে অনুষ্ঠিত হল চারদিনব্যাপী বেহালা উচ্চাঙ্গসঙ্গীত সম্মেলন। শ্যামসুন্দর কোম্পানি জুয়েলার্স ও বেহালা সাংস্কৃতিক সম্মিলনী আয়োজিত এই উৎসব এবার সাতে পা দিল। উদ্বোধনী সন্ধ্যায় পদ্মশ্রী ও পদ্মভূষণে সম্মানিত কণ্ঠশিল্পী বেগম পরভিন সুলতানাকে সঙ্গীতজগতে বিশেষ অবদানের জন্য জীবনকৃতী পুরস্কার ‘সর্বোত্তম সম্মানে’ ভূষিত করা হয়। এছাড়াও সম্মানিত করা হয় পণ্ডিত বিরজু মহারাজকে। প্রথম দিনের অনুষ্ঠানের সূচনা হয় বেগম পরভিন সুলতানার কণ্ঠসঙ্গীত দিয়ে। রাগ পুরিয়া কল্যাণ গেয়ে অনুষ্ঠান শুরু করেন শিল্পী। এই রাগের বিলম্বিত ও দ্রুতলয়ের খেয়াল পরিবেশন করেন। এরপর একে একে রাগ হংসধ্বনিতে তারানা, ভৈরবী রাগে খেয়াল ভবানী দয়ানী, ‘কুদরত’ ছবির বিখ্যাত গান ‘হমে তুমসে পেয়ার কিতনা’ শুনিয়ে শ্রোতাদের মুগ্ধ করেন। তাঁর সঙ্গে তবলা ও হারমোনিয়ামে সঙ্গত করেন পণ্ডিত অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় ও পণ্ডিত জ্যোতি গোহো। এই দিনই ভায়োলিন পরিবেশন করেন এল শঙ্কর। সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের মুখ্য আকর্ষণ ছিল কৌশিকী চক্রবর্তীর গান। তাঁর পরিবেশনায় ছিল বেহাগ রাগে খেয়াল ও ‘ইয়াদ পিয়া কি আয়ি’। এছাড়া তালবাদ্য পরিবেশনায় ছিলেন যোগেশ সামসি। তৃতীয় দিনের অনুষ্ঠানের সূচনা হয় সংযুক্তা দাসের কণ্ঠে রাগ মধুমন্তীতে খেয়াল দিয়ে। এরপর শিল্পীর পরিবেশনায় ছিল ‘কা করু সজনি আয়ে না বালম’। এইদিন বংশীবাদক ও সঙ্গীতশিল্পী রসিকা শেখর বাঁশিতে রাগ হংসধ্বনি, বৈরাগী, মোহনাম ও বিজয়শ্রী পরিবেশন করেন। এরপর নীলাদ্রি কুমার সেতারে রাগ ঝিঁঝোটি পরিবেশন করেন। শেষ দিন মালিনী আওয়াস্তি ঠুমরি, দাদরা, কাজরী, চৈতি গেয়ে শ্রোতাদের মুগ্ধ করেন। শেষদিনের অন্যতম আকর্ষণ ছিলেন উস্তাদ আমজাদ আলি খানের দুই পুত্র আমন আলি ও আয়ান আলি। তাঁরা যুগ্মভাবে সরোদে রাগ ঝিঁঝোটি বাজিয়ে শোনান। শিল্পী ও শ্রোতাদের মেলবন্ধনে চারদিনের বেহালা উচ্চাঙ্গসঙ্গীত সম্মেলন সর্বাঙ্গীণ রূপে সফল।

মানসী নাথ