উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে বাধার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হতে হবে। কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ যোগ। ব্যবসায় যুক্ত হলে ... বিশদ
বাধ সাধল ১০ জুলাই। হঠাৎ একটা ক্র্যাম্প। পিঠের দু’পাশে আচমকা টান। পেশি, শিরা সব যেন কামড়ে ধরছে। সঙ্গে গা-হাত-পায়ে বেশ ব্যথা। ব্যথায় জ্বর এসে গেল ১১ তারিখ। প্যারাসিটামল চললেও জ্বর একশো’র নীচে নামে না। বুকে চাপও লাগছিল। নিজে চিকিৎসক হওয়ায় বুঝলাম, বিষয়টা ভালো ঠেকছে না। যোগাযোগ করলাম এক ফুসফুস বিশেষজ্ঞের সঙ্গে। সঙ্গে সঙ্গে পরামর্শ দিলেন ‘টেস্ট করুন’। ১৩ জুলাই টেস্টের রিপোর্ট এল। করোনা পজিটিভ। সংস্পর্শে যাঁরা এসেছিলেন, তাঁদেরও সঙ্গে সঙ্গে টেস্ট হল। দেখা গেল, ড্রাইভার ও সেক্রেটারি দু’জনেই পজিটিভ।
চিকিৎসক জানিয়েছিলেন, যেহেতু মৃদু উপসর্গ, বাড়িতেই থাকতে পারব। প্রথম প্রথম দুই ছেলে এবং মায়ের জন্য ভাবছিলাম। তবে বাড়িতে যেহেতু জায়গা বেশি, একাধিক বাথরুম আছে, তাই চিকিৎসকের কথা মতো বাড়িতেই থাকি। ফোনে খোঁজখবর নিচ্ছিলেন স্বাস্থ্যভবনের চিকিৎসকরা। পুরসভার লোক এসে বাড়ি স্যানিটাইজ করে দিয়ে যান। পুরসভার চিকিৎসকও নিয়ম করে খোঁজখবর নিয়েছেন।
স্ত্রী’ই দেখাশোনা করতেন। বাড়ির কারও সঙ্গে মিশতাম না। সকলে মাস্ক পরছিলাম। দুইজনেই ডিসপোজেবল বাসনে খেতাম। খাবার বলতে, পর্যাপ্ত প্রোটিন, টক দই আর কিছু ফ্লুইড। এগুলোর সঙ্গে ভিটামিন সি ও জিঙ্ক ট্যাবলেট। দু’বেলা অক্সিমিটারে চোখ রাখা, যেন অক্সিজেন লেভেল ৯৪-এর নীচে না নামে। দিনে চারবার গার্গেল। আর যে কোনও বড় খাবারের পর গরম জলে কুলি। ব্যস, এটুকুই।
কিছুদিন বাদে আমার আবার টেস্ট হল। দেখা গেল, আমি নেগেটিভ। স্ত্রীও টেস্ট করায়। বরাবর নেগেটিভই ছিলেন। ১৪ দিন পর ফের দু’জনেই নেগেটিভ। উদ্বেগ কমল কিছুটা। তখন যুদ্ধজয়ের আনন্দ!
তবে যাঁরা মৃদু উপসর্গ বা উপসর্গহীন হিসাবে করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন, তাঁদের বলব, দরকার না পড়লে হাসপাতালে যাবেন না। বাড়ি বা সেফ হোমে থাকুন। হাসপাতালের বেডগুলো বরং সিরিয়াস রোগীদের জন্য থাক।
উপসর্গ দেখা দিলেই স্থানীয় পুরসভায় খবর দিন। চিকিৎসককেও জানিয়ে রাখুন। মেনে চলুন পরামর্শ।
তবে কী জানেন, করোনা একবার ধরলে শরীরকে বেশ দুর্বল করে দেয়। এক মাস হতে চলল, এখনও দুর্বলতা কমেনি। তাই এক মাস টানা বিশ্রামে থাকা দরকার। পেশার তাগিদে তা পারছি না ঠিকই, তবে সাবধানতা বাড়িয়ে দিয়েছি। ইচ্ছা আছে, অ্যান্টিবডি টেস্টে রিপোর্ট পজিটিভ এলে অবশ্যই প্লাজমা দান করব। কিছু বিপদগ্রস্ত রোগী যদি বাঁচেন!