উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে বাধার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হতে হবে। কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ যোগ। ব্যবসায় যুক্ত হলে ... বিশদ
করোনা সঙ্কটের মধ্যে দেশের কর্মসংস্কৃতিতে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা করে নিয়েছে ওয়ার্ক ফ্রম হোম। এই ব্যবস্থায় কর্মীরা বাড়িতে বসেই অফিসের প্রয়োজনীয় কাজ করছেন। ফলে একাধারে যেমন কর্মীর কাছ থেকে শ্রম মিলছে, আবার রাস্তাঘাটে বেরিয়ে অফিস না আসার কারণে কর্মীর করোনা হওয়ার ঝুঁকিও কম থাকছে।
সমস্যা হল, বহু কর্মীই দীর্ঘদিন বাড়িতে বসে কাজ করার সময় বেশ কিছু সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। প্রথমত তাঁরা ভুগছেন নানা উৎকণ্ঠায়। কাজে একশো শতাংশ মন দিতে পারছেন না। খারাপ হচ্ছে কাজের গুণমান। মানসিক অবসাদের কবলে পড়ছেন পেশাদার ও দক্ষরাও। এর মূল কারণগুলি হল—
ওয়ার্ক ফ্রম হোমের ধারণা বেশিরভাগ মানুষের কাছেই নতুন। বাড়িতে বসে কীভাবে অফিসের সমস্ত কাজ করা যাবে, ব্যাপারটা এখনও অনেকে আয়ত্তে আনতে পারেননি।
অতিমারীর দাপটে পরিবারের সকলেই বেশিরভাগ সময় ঘরবন্দি। ফলে বাড়ির বহু দায়িত্বও নিতে হচ্ছে। বিশেষত, বাচ্চা থাকলে তাকে সামলানোর দায়িত্বও কাঁধে পড়ছে। সবমিলিয়ে অনেকে এই অতিরিক্ত চাপ নিতে পারছেন না। তার বিরূপ প্রভাব ব্যক্তিগত জীবন থেকে শুরু করে কাজেও পড়ছে।
কাজে মন বসাতে নির্দিষ্ট জায়গা প্রয়োজন। বেশিরভাগ মানুষের বাড়িতে কাজ করার মতো আলাদা বন্দোবস্ত নেই। সকলের মধ্যে থেকে কাজ করতে গিয়ে মনঃসংযোগে ব্যাঘাত ঘটছে।
বহু মানুষের বাড়িতেই অফিসের কাজ করার মতো ল্যাপটপ, কম্পিউটার, ট্যাব, হাই স্পিড ইন্টারনেট ইত্যাদি সরঞ্জাম নেই। অনেকক্ষেত্রে বাড়িতে সরঞ্জামের ব্যবস্থা থাকলেও, একই সরঞ্জাম অনেকে মিলে ব্যবহার করছেন। বাড়ির একটি ল্যাপটপে স্বামী-স্ত্রী কাজ করছেন। ছেলেমেয়ের স্কুলের অনলাইন ক্লাসও চলছে ওই একই যন্ত্রে! ফলে সমস্যা হবেই।
কোভিড পরিস্থিতিতে গোটা বিশ্বজুড়ে মন্দা। কাজ টিকিয়ে রাখা যাবে কি না, এই নিয়েও মনে চিন্তা গ্রাস করছে। তার প্রভাব পড়ছে কাজেও।
অফিস যাওয়ার সামাজিক দিক রয়েছে। সেখানকার কাজের পরিবেশ, সহকর্মী, মিটিং, গল্প, ক্যান্টিন— সব কিছুরই অভাব বোধ করছেন বহু মানুষ। তার প্রভাব মানুষের মনে ও কাজে পড়ছে।
কর্মক্ষমতা বাড়ানোর দাওয়াই
একনাগাড়ে কাজ না করে কাজের সময় দুই-দুই ঘণ্টা ভাগ করে নেওয়া যেতে পারে। কম সময় ধরে কাজ করলে মনোযোগ বাড়বে।
চেষ্টা করুন বাড়ি বা ঘরের কাজ মিটিয়ে অফিসের কাজে বসতে। কাজ করতে বসে বারবার ঘরের কাজ করলে কোনওটাই ঠিকমতো হবে না।
কাজ করতে বসার আগে পরিবারের সকলকে অনুরোধ করে বোঝান, আপনি কাজ করছেন। কেউ যেন এই সময় আপনাকে বিরক্ত না করে।
কাজের জন্য আলাদা ঘরের বন্দোবস্ত করতে পারলে ভালো।
মন ও শরীর ভালো রাখতে নিয়মিত শরীরচর্চা করতে হবে। ধ্যান-প্রাণায়াম খুব কাজে দিতে পারে।
ঠিক সময়ে উঠুন, ঠিক সময়ে ঘুমান। খাওয়াদাওয়া ভালো করুন। নিজের খেয়াল রাখুন।
বাড়ি থেকে কাজ মানে সবসময় কাজ নয়। নিজের জন্যও সময় বের করুন।
কাজে সমস্যা হলে কর্তৃপক্ষকে জানান।
অতিরিক্ত উৎকণ্ঠার প্রয়োজন নেই। এই খারাপ সময়টাও কেটে যাবে। অতিরিক্ত সমস্যা হলে মনোবিদ বা মনোরোগ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।