উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে বাধার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হতে হবে। কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ যোগ। ব্যবসায় যুক্ত হলে ... বিশদ
করোনা সংক্রমণে রাশ টানতে বন্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির দরজা। তবে তাই বলে অনেকক্ষেত্রেই প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনার খামতি থাকছে না। বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই এই সঙ্কটের সময় শিক্ষাপ্রদানের মাধ্যম হিসেবে অনলাইন ব্যবস্থাকে বেছে নিয়েছে। কম্পিউটার, ট্যাব বা মোবাইলের এক প্রান্তে রয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষিকা, অপর প্রান্তে পড়ুয়ারা। এভাবেই চলছে। তবে এমন ভার্চুয়াল শিক্ষার সঙ্গে অনেক পড়ুয়াই মানিয়ে নিতে পারছে না। ছোট বাচ্চাদের সমস্যা হচ্ছে সবথেকে বেশি।
ছোট বাচ্চাদের জীবনের একটা বড় অংশ হল স্কুল। সেখানকার বন্ধু, শিক্ষক, ক্লাস রুম, বেঞ্চ, টেবিল— সবটারই প্রভাব রয়েছে শিশুর জীবনে। তাই দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকায় শিশু মনে যথেষ্ট প্রভাব পড়ছে।
ছোটরা অনলাইন ক্লাসে প্রবেশ করার জন্য পুরো মাত্রায় অভিভাবকের উপর নির্ভরশীল। পরিবারের সদস্যরা প্রযুক্তি ব্যবহারে সড়গড় না হলে অনলাইন ক্লাসে সমস্যা দেখা দিচ্ছে সমবয়সিদের মধ্যে পড়াশোনায় মন দিতে সুবিধে হয়। কিন্তু, বাড়ির পরিবেশে সেক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে স্কুল চালু থাকলে বাচ্চারা একটা রুটিনে থাকে। আগের দিন ব্যাগ গুছিয়ে রাখে। সকাল-সকাল ঘুম থেকে ওঠে, স্কুলে যাওয়ার প্রস্তুতি নেয়। এখন পুরো ব্যাপারটাই বদলে গিয়েছে অনলাইন ক্লাসের জন্য স্মার্ট ফোন, ট্যাব বা কম্পিউটারের প্রয়োজন। কিছু পড়ুয়ার কাছে এসব নেই। একটু বড় বাচ্চাদের মধ্যে অনেকেই এই সমস্ত বিষয় নিয়ে হীনমন্যতায় ভুগছে। আবার প্রযুক্তি থাকলেও হাইস্পিড ইন্টারনেট না থাকায় ক্লাসে ব্যাঘাত হচ্ছে। এই পরিস্থিতিও উৎকণ্ঠা বাড়াচ্ছে।
সমস্যা দেখা দিচ্ছে শিক্ষক শিক্ষিকার মধ্যেও। বহু শিক্ষক-শিক্ষিকা প্রযুক্তি ব্যবহারে অভ্যস্ত নন স্ক্রিনের সামনে ক্লাস নিতে গিয়েও অনেকে আত্মবিশ্বাসের অভাব বোধ করছেন এখন ছোট ছাত্রছাত্রীদের পাশে থাকছে তার অভিভাবক। বাবা-মায়েদের সামনে পড়াতে গিয়ে অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকাই নিজেদের নজরবন্দি ভাবছেন।
সমস্যা এড়াবেন কীভাবে?
করোনা আবহে পড়াশোনা চালু রাখার সর্বশ্রেষ্ঠ উপায় হল অনলাইন ক্লাস। তাই পড়ুয়া, অভিভাবক এবং শিক্ষকদের এই নতুন ব্যবস্থার সঙ্গে যত শীঘ্র সম্ভব অভ্যস্ত হতে হবে।
বাচ্চাদের স্কুলের মতো রুটিন মেনেই চলাতে হবে। সকালে ওঠা, প্রস্তুত হওয়া, তারপর অনলাইন ক্লাস, হোমওয়ার্ক— বাড়িতেই সব নিয়মে থাকবে।
ফোনে বা ভিডিওকলে পড়ুয়ার বন্ধুদের সঙ্গে নিয়মিত কথাবার্তা চালিয়ে যাওয়ার বন্দোবস্ত করতে হবে।
বাড়িতে পড়াশোনার জন্য অতিরিক্ত বকাবকি করা ঠিক হবে না। বরং সন্তানকে বুঝিয়ে বলতে হবে।
বয়ঃসন্ধির ছেলেমেয়েদের উপর কঠোর নজরদারি চালাবেন না। তাদের ব্যক্তিগত পরিসর দিন।
প্রযুক্তিগত দিক থেকে সমস্যা হলে নিজের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে জানান।
পড়ুয়াদের পর্যাপ্ত ঘুম জরুরি। দিতে হবে পুষ্টিকর খাবার।
মনঃসংযোগ বাড়াতে নিয়মিত ব্যায়াম এবং যোগের অভ্যেস গড়ে তুলতে হবে।
শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কোনও সমস্যা দেখা দিলে সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বলুন। দেখবেন ঠিক রাস্তা বেরিয়েছে।
আত্মবিশ্বাসের বিকল্প হয় না। অন্য সময়ের মতো অনলাইনেও সেই আত্মবিশ্বাসের প্রকাশ পাক। জয় হবেই।