আজও আদিবাসীদের বিয়েতে গাছ ও জলের সঙ্গে বিয়ে হয় প্রথমে, পরে হয় মানুষে মানুষে বিয়ে। লৌকিক বিশ্বাসের রীতি আজও ধরে রেখেছে আদিবাসী সমাজ। তারা তাদের জীবনে আম ও মহুল গাছকে ঈশ্বর জ্ঞানে বিশ্বাস করে, পূজা করে।
ধর্মেও আছি, জিরাফেও আছি। এই প্রবচন বিলকুল খেটে যায় বিয়ের ব্যাপারে। খানিক খোলসা করে বলা যাক। বংশবিস্তার বা রাজ্যবিস্তারের মোক্ষম রাজনৈতিক চাল হিসেবে বিয়ের কথা প্রচলিত।
হিন্দু পুরাণ হল ঐতিহ্যবাহী কথামালার এক বৃহৎ রূপ। রামায়ণ, মহাভারত সহ অষ্টাদশ পুরাণে নানা কথামালা গভীর ও সুস্পষ্টভাবে বর্ণিত হয়েছে। নানা রূপে এই সব আখ্যান পুরাণকথাকে সমৃদ্ধ করেছে। আজ আমরা দেখব পুরাণের পরিণয় কথা।
গোটা জীবনই লালের মধ্যে কেটেছে বসনিয়ার জোরিকা রেবার্নিকের। মৃত্যুর পরও তিনি ঠিক এভাবেই থাকতে চান। গত চার দশক ধরে মাথা থেকে পা পর্যন্ত লাল রঙা পোশাক পরছেন জোরিকা। তাঁর স্বামী জোরানের সঙ্গে বিয়েটাও হয়েছিল লাল রঙের গাউন পরেই।
তারিখটা ছিল ৩ নভেম্বর, ১৯৭৯। বয়স তখন সবে মাত্র ১০ বছর ছাড়িয়েছে। কলকাতার রাশিয়ান কনস্যুলেট জেনারেলের অফিসের সাংস্কৃতিক বিভাগ থেকে তাকে চিঠি দিয়ে ডেকে পাঠানো হল গোর্কি সদনে।
শিক্ষা আর স্বনির্ভরতা—এই দুটি ডানায় ভর করে এখন মেয়েরা অনেক বেশি বাইরে কাজ করেন। সেই কাজ অত্যন্ত দায়িত্ব নিয়ে যোগ্যতার সঙ্গে তাঁরা পালন করেন। বহু বছর সেই কাজ দায়িত্ব নিয়ে পালন করার পর হঠাৎ সেই কর্মজগৎ থেকে সরে আসায় একটা মানসিক সমস্যায় অনেককেই ভুগতে দেখা যায়।
পিতার স্বাস্থ্যহানী হতে পারে। আর্থিক ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় অর্থের অভাব হবে না। পঠন-পাঠনে পরিশ্রমী হলে সফলতা ... বিশদ
উত্তরপূর্ব ভারতের অসমে চা বাগানের ২০০ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম কোনও একজন নারী ম্যানেজারের পদে নিযুক্ত হয়েছেন। ৬৩৩ হেক্টরেরও বেশি এলাকা জুড়ে থাকা বাগানের আনাচে-কানাচে মোটরবাইক বা সাইকেল অথবা জিপে চেপে ঘুরে দেখাশোনার কাজ করবেন ৪৩ বছর বয়সি মঞ্জু বড়ুয়া।
প্রায় ২০০ বছর আগে অসমে চা বাগান শুরু করেছিল ব্রিটিশরা। কিন্তু এতদিন এইসব চা বাগানের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো অলঙ্কৃত করেছিল পুরুষরা। আর নারী শ্রমিকরা এখনও পর্যন্ত কেবল পাতা সংগ্রহের মতো কঠিন পরিশ্রমের কাজগুলোতেই নিয়োজিত ছিল। এতদিনের এই ব্যবস্থা বদলে এবার এক নারী দায়িত্ব নিয়েছেন চা বাগানের।
অসম বা উত্তর বাংলার চা বাগানগুলোতে ম্যানেজারদের বলা হয় ‘বড় সাহেব’। একসময় শুধুমাত্র ব্রিটিশরাই ওই পদে আসীন হতেন। তাই ওই সম্বোধন। এখন অসমের তিনসুকিয়া জেলার হিলিকা চা বাগানের শ্রমিক কর্মচারীরা তাঁকে ‘বড় ম্যাডাম’ বলে ডাকতে তৈরি হচ্ছেন।
মঞ্জু বড়ুয়া বলেছেন, ‘চা-বাগানের দায়-দায়িত্ব সামলানো একজন নারীর জন্য কঠিন হলেও অসম্ভব কোনও ব্যাপার নয়।’ তিনি বলেন, ‘এটা ঠিকই যে এতদিন চা বাগানে পুরুষরাই ম্যানেজারের ভূমিকা পালন করে এসেছে।
তাদের একাজে কিছু সুবিধেও আছে। কাজটা কঠিন ঠিকই। কিন্তু আজকের দিনের তা আর নারীদের জন্য কোনও বাধা নয়। শুধু শারীরিক আর মানসিকভাবে ফিট থাকতে হবে। আর যেটা খুব প্রয়োজন সেটা হল কাজের প্রতি আন্তরিকতা। এগুলো থাকলেই চা বাগানের ম্যানেজারের দায়িত্ব সামলানো নারীর জন্য অসম্ভব কোনও ঘটনা নয়।’
মঞ্জু জানান, ‘আমার বাগানের এলাকা ৬৩৩ হেক্টর। সারা বাগানের আনাচে-কানাচে ঘুরতে হয়, কখনও সাইকেলে, মোটরসাইকেলে বা জিপে চড়ে। আমি সবগুলোই চালাতে পারি। বাগানের সবখানে আমি একাই ঘুরি। সারাদিন এত ঘোরাঘুরি করতে হয় আমাকে যে আলাদাভাবে ফিট থাকার জন্য ব্যায়াম করার আর প্রয়োজন হয় না। তবে মানসিকভাবে ফিট থাকার জন্য ধ্যান করি নিয়মিত।’
বাগানে কাজ করতে গিয়ে নারী হিসেবে বড় কোনও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়নি তাঁকে। শ্রীমতী বড়ুয়া জানান, তিনি কাগজে বিজ্ঞাপন দেখে শ্রমিক কল্যাণ অফিসারের পদে আবেদন করেছিলেন। কাজে যোগ দেওয়ার পরে এই বাগানেই কাজ করছেন গত ১৮ বছর ধরে। তিনি বলেন, ‘বাগানের সব কর্মচারীর সঙ্গে আমার সুসম্পর্ক রয়েছে। ম্যানেজারের পদে আমার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেনি কেউ। সবাই আমাকে তাদের কাছের লোক বলেই মানে।’
অসমের শিবসাগর জেলার নাজিরার মেয়ে মঞ্জু বড়ুয়া। তিনি চেয়েছিলেন পুলিস সার্ভিসে যোগ দিতে। কিন্তু বাবার অবসরের পর চাকরির খুব প্রয়োজন হয়ে পড়ে। যোগ দেন চা-বাগানের কাজে। স্বামী আর কন্যাসন্তানকে নিয়ে বাগানের বাংলোতেই থাকেন মঞ্জু। ভোর থেকেই শুরু হয়ে যায় বাগানের কাজের ছুটোছুটি। সকাল সাড়ে সাতটায় একটা ব্রেক হয়। তখন ফিরে এসে মেয়েকে স্কুলে পাঠানোর জন্য রেডি করে দেন মঞ্জু বড়ুয়া। ফের কাজে ফিরে যাওয়া। দুপুরের লাঞ্চে ফিরে এসে আবার মেয়ের পরিচর্চা করেন। এভাবেই দু’দিক সামলাচ্ছেন তিনি। সংস্থার চেয়ারম্যান করণ পল বলেছেন, ‘যোগ্যতা দেখিয়েই মঞ্জু এই পদে উঠে এসেছেন। সব কৃতিত্বই তাঁর। আশা করি মঞ্জুকে দেখে অন্য মেয়েরাও অনুপ্রাণিত হবে।’ মঞ্জু বলেন, চেয়ারম্যান যেদিন তাঁকে ডেকে ম্যানেজারের পদে প্রোমোশনের কথা শুনিয়েছিলেন, সেদিন এতটাই আত্মহারা হয়ে পড়েছিলেন যে চেয়ারম্যানকে ‘থ্যাঙ্ক ইউ’ না বলে ‘কনগ্র্যাচুলেশন’ বলে ফেলেছিলেন।
