উচ্চতর বিদ্যায় সাফল্য আসবে। প্রেম-ভালোবাসায় আগ্রহ বাড়বে। পুরনো বন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাতে আনন্দলাভ হবে। সম্ভাব্য ক্ষেত্রে ... বিশদ
উপেক্ষিতা: উপেক্ষা আর অবহেলা যেন নারীর ভূষণ। সংসারে ও সমাজে নারী উপেক্ষিতা নানা কারণে-অকারণে। বিধবা নারী হলে সংসারে পরিবারে তার স্থান হয় অত্যন্ত করুণ ও অসহায়। সাদা থান পরে, মাথার চুল ছেঁটে, আমিষ আহার থেকে বঞ্চিত থেকে, নানা মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণে বিরত থেকে দিনযাপন করতে হয়। অবশেষে কাশীবাস বা ভিক্ষাবৃত্তিতেও নারীর বৈধব্যের গ্লানি শেষ হয় না, শাপমুক্তি ঘটে না। বৃদ্ধ, সিনিয়র সিটিজেন বাবা-মাও উপেক্ষা আর লাঞ্ছনার শিকার হয় সংসারে সন্তানদের লোভ, লালসা আর সম্পত্তি আত্মসাৎ করার মাধ্যমে। আবার বন্ধ্যা, বাঁজা নারী যেমন সংসারে উপেক্ষিতা তেমনি বারবার কন্যা-সন্তান জন্মদানকারিণী গর্ভধারিণীরাও উপেক্ষিতা শ্বশুর-শাশুড়ি, এমনকী নিজের পতিদেবতাটির কাছেও।
অপমানিতা: অপমান আর অসম্মান যেন নারীর পুরস্কার। বিশেষত অফিসে কর্মরতা নারীদের অপমান, হয়রানি, হেনস্তার শিকার হতে হয় বারবার। সহকর্মীদের কাছে উপহাসের পাত্রী হতে হয়, একই কাজের যোগ্যতায় স্বীকৃতি মেলে না, বসের কু-প্রস্তাব ও নিগ্রহ প্রায়শই বাধ্য হয়ে অসহায়ভাবে মেনে নিতে হয়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, আমেরিকার অভিনেত্রী অ্যালিসা মিলানের হাত ধরে ২০১৭ সালের ১৫ অক্টোবর শুরু হয়েছিল ‘#মিটু’ আন্দোলন। হলিউডের প্রভাবশালী প্রযোজক হার্ভে ওয়েনস্টাইনের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তা, শারীরিক নিগ্রহের অভিযোগ এনেছিলেন তিনি। আজও কর্মরতা মেয়েরা ‘কাস্টিং কাউচ’-এর শিকার বিভিন্ন কর্মস্থলে। এছাড়া থানায় মহিলা পুলিসকর্মীদের নানাবিধ অপ্রীতিকর পরিস্থিতিতে নাইট ডিউটি করতে হয়। মহিলা কবি-সাহিত্যিকদেরও ‘পুরুষ কবি! মহিলা কবি!’ এমন বিজাতীয় বিভাজনে অপমানিতা হতে হয় বিভিন্ন সম্পাদকীয় দপ্তরে। তাই, যে কবি লিঙ্গ পরিচয়ে নারী তাকে ‘অপর’ করে রাখা হয়। আত্মজীবনী ‘দ্বিখণ্ডিত’ লেখার পরে ঘরে-বাইরে অপমানিতা ও লাঞ্ছিতা হয়েছেন তসলিমা নাসরিন।
অত্যাচারিতা: অত্যাচার আর অবিচার যেন নারীর ভাগ্যলিপি। নারীজন্মের সঙ্গে-সঙ্গেই নারীর কপালে লেখা হয়ে যায় অত্যাচার আর অবিচারের বারোমাস্যা। পার্ক স্ট্রিট গণধর্ষণ কিংবা দিল্লির নির্ভয়াকাণ্ডে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় অত্যাচারিতার নিষ্ঠুর পরিণতি। আজও পণের জন্য বধূ-নির্যাতন ও হত্যা করা হয় নির্বিচারে। গার্হস্থ হিংসার শিকার হতে হয়। অ্যাসিড হামলায় নারীর মুখ পুড়লেও পুরুষশাসিত সমাজের মুখ পোড়ে না। আশ্চর্য মনে হলেও সামান্য নারী-স্বাধীনতা ভোগ করার জন্য কট্টর মৌলবাদি দাদার হাতে নির্মমভাবে অত্যাচারিতা হয় তার সহোদরা ভগিনী। আলোচ্য বিষয় থেকে এটা পরিষ্কার যে উপেক্ষিতা, অপমানিতা প্রভৃতি বিশেষণগুলি নারীকে অযোগ্য, অসহায় করে রেখেছে।