ব্যবসায় অগ্রগতি ও শুভত্ব বৃদ্ধি। ব্যয়ের চাপ থাকায় সঞ্চয়ে বাধা থাকবে। গলা ও বাতের সমস্যায় ... বিশদ
“সত্যং শিবং সুন্দরং বিজ্ঞানমানন্দং ব্রহ্ম।”
ঈশ্বর ব্রহ্ম। তিনি সত্যস্বরূপ। মঙ্গলময় ও সকল সৌন্দর্যের আধার। তিনি জ্ঞানময় ও আনন্দস্বরূপ। ঋষিরা দ্রষ্টা। কিন্তু সাধারণ মানুষ তো আর ঋষি নয়। নিরাকারকে চিন্তা করিতে পারে না সে। তাই, নিরাকার ঈশ্বরের উপাসনা করিয়া ভক্ত তৃপ্ত হইলেন না।
ভক্ত চাহিলেন—উপাস্যকে চোখে চোখে রাখিতে, তাঁহার কাছে কাছে থাকিতে, তাঁহার পদতলে বসিয়া তাঁহাকে মনের কথা জানাইতে। তাই—
“চিন্ময়স্যাদ্বিতীয়স্য নিষ্কলস্যাশরীরিণঃ।
উপাসকানাং কার্যার্থং ব্রহ্মণো রূপকল্পনা।।”
অদ্বিতীয় নিরাকার ঈশ্বর রূপ গ্রহণ করিয়া ভক্তের মনোবাসনা পূর্ণ করিলেন। বেদে ঈশ্বর বলিয়াছেন—“একোঽহং বহু স্যাম্।” আমি এক। আমি বহু হইয়া থাকি। ভক্তবাঞ্ছাকল্পতরু ভগবান্ রূপ গ্রহণ করিলেন। ভক্তেরা নিজেদের রুচি অনুসারে তাঁহার ভিন্ন ভিন্ন নামকরণ করিলেন। পূজার সৃষ্টি হইল। ‘পূজা’ কথাটি দ্রাবিড়দের। ইহার অর্থ পুষ্পকর্ম। যেমন বৈদিক যজ্ঞকে বলা হইত পশুকর্ম। আর্য মনীষার প্রভাবে দ্রাবিড়ী ‘পূজা’ শব্দটি সংস্কৃতে স্থান পাইল। তখন ইহার অর্থ সম্প্রসারিত হইয়া দাঁড়াইল এই—ফুল বেলপাতা প্রভৃতি উপকরণ ও উপচার দ্বারা ভগবানের আরাধনা। পূজা আমাদের পৌরাণিক কৃত্য। পূজা বলিলে সাধারণতঃ মূর্তিপূজাকেই বুঝায়। মূর্তিপূজা অনন্ত অসীম ভগবানের প্রতীক উপাসনা। দুর্গাপূজাও মূর্তিপূজা—নিরাকার ঈশ্বরের সাকার উপাসনা। ঋগ্বেদে উল্লেখ আছে। পুরাণে হইয়াছে তাঁহার রূপায়ণ। জনকল্যাণের জন্য দুর্গাপূজা। দুর্গাপূজা হিন্দুর জাতীয় পূজা। জাতির ঐহিক ও পারত্রিক কল্যাণই দুর্গাপূজার লক্ষ্য। দুর্গাপ্রতিমার লক্ষ্মী ধনের, সরস্বতী জ্ঞানের, কার্ত্তিক বীরত্বের, গণেশ সাফল্যের প্রতীক। আর দুর্গার দশটি হাত ও দশটি প্রহরণ অপরিমেয় বলবীর্যের দ্যোতক।