ব্যবসায় অগ্রগতি ও শুভত্ব বৃদ্ধি। ব্যয়ের চাপ থাকায় সঞ্চয়ে বাধা থাকবে। গলা ও বাতের সমস্যায় ... বিশদ
প্রথমতঃ, যদি বলা যায়, যা শুনিব, তাই মানিব, ইহাই বিশ্বাস, তবে একজনের নিকট শুনিলাম, ভূত আছে, মানিলাম, আবার অপর জন বলিল, নাই, আমিও অমনি বলিলাম, নাই। এইরূপ হইলেও তো সেই বিশ্বাসপরায়ণ ব্যক্তির কোন স্বতন্ত্রতাই থাকে না, দেখিতেছি। সে তো পশুতুল্য, যন্ত্রতুল্য হইয়া যায়। সে তো আর মানুষ থাকে না। ইহাতে যদি বলা যায়, আপ্তবাক্যে বিশ্বাস করিব, তাহা হইলে আমার জিজ্ঞাস্য, একজনকে আপ্ত বলিয়া বিশ্বাস করিবে কিরূপে? যদি বল, পাঁচ জনের কথায় তাহাকে আপ্ত বলিয়া বিশ্বাস করিব, তবে তো তুমি পাঁচ জনকেই অগ্রে বিশ্বাস করিলে। যদি বল, শাস্ত্রবাক্যে বিশ্বাস করিব, তাহা হইলে, তোমায় জিজ্ঞাসিব, শাস্ত্র এখন অবিকৃতভাবে আছে, তাহার মধ্যে কিছু প্রক্ষিপ্ত হয় নাই; কিরূপে জানিলে? আর যদিও অবিকৃতই থাকে, তাহা হইলেও উহার অর্থ বুঝিতেও অনেক গোল। ভিন্ন ভিন্ন ভাষ্যকার টীকাকারেরা তো ভিন্ন ভিন্ন অর্থ করিতেছেন। এখন যাইবে কোথায় যদি বল, যাহা হয় একটা ধরিয়া পড়িয়া থাকিব, তুমি তর্ক তুলিয়া আমার শান্তিভঙ্গ কর কেন, তবে তোমায় বলিব, ভাই, তুমি তোমার বিশ্বাসের ব্যাসাতি লইয়া দ্বারে অর্গল বন্ধ করিয়া বসিয়া থাক, বিশ্বাস বিশ্বাস বলিয়া অপরের শান্তিভঙ্গ করিও না।
বিশ্বাস বাস্তবিক একটি অন্তঃকরণ বৃত্তি। আমি লন্ডন দেখি নাই, কিন্তু ভূগোলে পড়িয়া বা লন্ডন-প্রত্যাগত ব্যক্তির নিকট শুনিয়া লন্ডনের অস্তিত্বে বিশ্বাস করি। এখন এই বিশ্বাসের ভিত্তি, আমার ভূগোল-লেখকের বা লন্ডন প্রত্যাগতের কথায় বিশ্বাস। কিন্তু এ-বিশ্বাসে অনেক সময় কার্য নির্বাহ হইলেও এই বিশ্বাস কি সত্যাসত্য সঠিক রূপে নির্ণয়ে সমর্থ? হইতে পারে, ভূগোল-লেখক বা আমার বন্ধু আমাকে প্রতারিত করিয়াছে। দেখিতে পাই, যাহাকে আজ পরম বন্ধু বলিয়া বিশ্বাস করিতাম, কাল সে বিশ্বাসঘাতকতা করিল। যে স্ত্রী, যে পুত্র, যে বন্ধুকে কত বিশ্বাস করিতাম, তাহারা কত প্রতারণা করিল। বিশ্বাস করিয়া সাধুর নিকট গেলাম, সাধু ঠকাইল, তবে বিশ্বাস করি কাহাকে? বিশ্বাস বলিয়া মনোবৃত্তি আছে বটে, কিন্তু বিশ্বাস-পাত্র কে?