ব্যবসায় অগ্রগতি ও শুভত্ব বৃদ্ধি। ব্যয়ের চাপ থাকায় সঞ্চয়ে বাধা থাকবে। গলা ও বাতের সমস্যায় ... বিশদ
মহারাজ: যদি কেউ evolution-এর শেষ stage-এ পৌঁছে থাকে, তাহলে তার ঈশ্বর বই আর কিছু ভাল লাগবে না। কিন্তু তা না হলে মন্দির করা, building করা, hostel করা, পরোপকার, জগৎ উদ্ধার করতে করতে প্রাণ যাবে! বাপ ছেলেকে নিয়ে exhibition দেখতে গিয়েছে। রোদে ছেলের মুখ লাল হয়ে গিয়েছে, টসটস করে ঘাম পড়ছে। বাবা ছেলেকে বললে, ‘চল চল ফিরে যাই।’ ছেলে বললে, ‘না বাবা, ওদিকটা তো দেখা হয়নি, দেখে যাই।’ বাবা জোর করে নিয়ে ফিরল, কিন্তু দুপুরে বাবা যখন ঘুমোচ্ছে তখন সে চুপিচুপি এসে বাকিটা দেখে গেল। তাই ভোগান্ত না হলে হওয়ার নয়।
আমার সামনে ঈশ্বরীয় কথা ছাড়া অন্য কোনো প্রসঙ্গ তুলবে না, আমার বড় কষ্ট হয়। তবে কী করবে? কতকগুলো আলোচনা দরকার—নিজের ব্যক্তিগত খাওয়া, থাকা, চলাফেরা সম্বন্ধেও তো জানা দরকার।
ঠাকুরের যেমন সন্তানগণ তাঁর পার্ষদ, তেমনি আমরা তাঁর ইচ্ছায় পার্ষদ হয়ে জন্মাতে পারি। এবার সাধনা করে এগিয়ে গেলাম; আমরা জীব থেকে ঈশ্বরত্বে পৌঁছাব। যাঁরা জীবন্মুক্ত তাঁরা আনন্দময় কোষে থাকেন। ঈশ্বরের ইচ্ছায় তাঁরা তাঁর লীলাসহায়ক হতে পারেন। ঢাকার তারক মাকে লিখেছিল, ‘মা, এবার তো তোমার লীলা কিছুই দেখতে পেলাম না, আগামী বার যেন পাই।’ মা লিখেছিলেন, ‘আচ্ছা বাবা, তা-ই হবে।’ তবে আমি আর লীলা দেখতে চাই না, কেননা সেখানে কেবল আনন্দ। আর এখানে সুখ ও দুঃখ, আনন্দ ও নিরানন্দ—দুই-ই ভোগ করতে হবে। [যাঁরা আজকের সারগাছি দেখেছেন তাঁরা কল্পনাই করতে পারবেন না তখন সেখানকার আবহাওয়া কীরূপ রুক্ষ ছিল। গ্রীষ্মের দাবদাহে চারিদিকে যেন আগুনের ঝলক। তখন ফারাক্কার ড্যামও হয়নি। শ্যালো পাম্প বসিয়ে ক্ষেতে জল আসবে।]
বিকালে বেড়িয়ে এসে বারান্দায় ইজিচেয়ারে প্রেমেশানন্দ মহারাজ বসে আছেন। অনেক দিন পরে অনেকখানি হেঁটেছেন। বসে পা মুড়ে রেখেছেন।
একজন বলল, “হ্যাঁ, এরকম করে পা রাখলে বেশ আরাম হবে।”
মহারাজ: দেহ, মন, বুদ্ধি থেকে পার না হলে আরাম নেই। এই তো শরীর সারল; কিন্তু তাতে হলো কী? আবার ব্যাধি, আবার আরাম। শান্তি হলো এর পারে যাওয়া। যত কথা বলবে সব ঈশ্বরীয় কথা—অন্য কথা বললেও ফিরিয়ে আনবে ঈশ্বরীয় কথায়। সাধারণ লোকের সঙ্গে ঈশ্বর-প্রসঙ্গ করা বড় কঠিন। এই তো ডাক্তার এত বিদ্বান—সেও বলে কোথায় সিনেমাতে দেখেছে—দ্বারকায় শ্রীরাধা শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে মিশে গেলেন! ঈশ্বর যে কী বস্তু তা ওরা কী করে জানবে! এই পঞ্চভূতের দেহ তো মেশে না। আমরা চৈতন্যদেব সম্বন্ধে ছোটকাল থেকে শুনে এসেছি, তিনি জগন্নাথের সঙ্গে মিশে যান, কিন্তু পরে জানা গিয়েছে যে তিনি সেপটিক হয়ে দেহত্যাগ করেন। তাঁর ‘আমি’ সমষ্টির সঙ্গে একাকার হয়ে গিয়েছে।
স্বামী সুহিতানন্দ সম্পাদিত ‘সারগাছির স্মৃতি’ থেকে