উচ্চতর বিদ্যায় সাফল্য আসবে। প্রেম-ভালোবাসায় আগ্রহ বাড়বে। পুরনো বন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাতে আনন্দলাভ হবে। সম্ভাব্য ক্ষেত্রে ... বিশদ
স্বপ্নলব্ধেন রাজ্যেন রাজানঃ মানবাস্তথা।।”
মনের ধর্ম মুখ্যতঃ দ্বিবিধ—স্মরণ করা ও চিন্তা করা। এই চিন্তাও আবার নানান ধরণের হয়। প্রথম, বর্ত্তমান পরিবেশ-সম্পৃক্ত চিন্তা; দ্বিতীয়, অতীত পরিবেশ-সম্পৃক্ত চিন্তা; তৃতীয়, পরিবেশ-বর্জিত চিন্তা; চতুর্থ, উদ্ভট চিন্তা প্রভৃতি। বর্ত্তমান পরিবেশ সম্পৃক্ত চিন্তা হচ্ছে: সেই মানুষ বা সেই জীব ঠিক বর্ত্তমান যে পরিবেশের মধ্যে রয়েছে অর্থাৎ মাটি-ঘাস-গাছ-পাথর-শত্রু-মিত্র প্রভৃতি সম্বন্ধীর চিন্তা। মানুষ দূরে একটা সাপ দেখলে অন্য চিন্তা ত্যাগ করে সেই সাপ সম্বন্ধীয় চিন্তা করে। হরিণ দূরে একটা বাঘ দেখলে সে বাঘ সম্বন্ধীয় চিন্তা করে। কোন মহিলা রন্ধন কার্যের সময় রন্ধন সম্বন্ধীয় অর্থাৎ নুন-ঝাল-তেল-পাঁচফোড়ন প্রভৃতির চিন্তা করেন। পরীক্ষার হলে এসে ছাত্ররা প্রশ্নপত্র কেমন হবে সেই সম্বন্ধে চিন্তা করে। এইগুলো হ’ল বর্ত্তমান পরিবেশ-সম্পৃক্ত চিন্তা।
দ্বিতীয়ত: অতীত পরিবেশ-সম্পৃক্ত চিন্তা। কোন রাজার ছেলে ঘটনার দুর্বিপাকে পড়ে যদি পান্তা ভাত আর কুমড়োর ঘ্যাঁট খায় তখন সে বাড়ীর রাজভোগের চিন্তা করে। শিশুকাল যে আরামে কাটিয়েছে সে অধিক বয়সে দুঃখ ভোগ করার সময় ছোটবেলার সুখের কথা ভাবে। অতীতে যে ক্লাসের সর্বোত্তম ছাত্র ছিল সে পরীক্ষায় অকৃতকার্য হলে দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলতে ফেলতে অতীতের সফলতার চিন্তা করে। এগুলো হ’ল অতীত পরিবেশ-সম্পৃক্ত চিন্তা। তৃতীয় হচ্ছে পরিবেশ-বর্জিত চিন্তা। কোন মানুষ যখন অবাঞ্চিত অবস্থায় থাকে, দুঃখে কষ্টে দিনাতিপাত করে তখন সে মনের আকাশে কল্পনার ফানুস উড়িয়ে দিয়ে রঙীন স্বপ্ন আঁকতে থাকে। সোনালি ছবির ঝলকানি লেগে কল্পনার দুনিয়ায় সে ঝলমল করে ওঠে।
“রঙীন নিমেষ ধূলার দুলাল
পরাণে ছড়ায় আবীর গুলাল
ওড়না ওড়ায় শ্রাবণের মেঘে
সঞ্চরমাণ নৃত্য
হঠাৎ আলোর ঝলকানি লেগে
ঝলমল করে চিত্ত।”
আরেক ধরণের চিন্তা আছে যাকে বলতে পারি উদ্ভট চিন্তা। কোন চিন্তার উপকরণই বাস্তব জগৎ থেকে বিচ্ছিন্ন নয়, অর্থাৎ কল্পনায় মানুষ যা দেখে, বা চিন্তায় মানুষ যা ভাবে তার মালমশলা সে সংগ্রহ করে বাহিক জগৎ থেকে। অর্থাৎ যেমন জিনিসটি সে কখনও দেখেনি বা অন্য কোন ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে গ্রহণ করেনি, সেই ধরণের কোন জিনিস সন্বন্ধে সে চিন্তা করতে পারে না। অণুমানসের এটাই সবচেয়ে বড় অসম্পূর্ণতা(imperfeetion)।
আর এই অণুমানসের সঙ্গে ভূমামানসের অনেক গুণগত পার্থক্যের মধ্যে সবচেয়ে বড় পার্থক্য হচ্ছে ভূমামানসের সকল চিন্তাধারাই মৌলিক, প্রতিটি চিন্তাধারাই নবীনতম।