উচ্চতর বিদ্যায় সাফল্য আসবে। প্রেম-ভালোবাসায় আগ্রহ বাড়বে। পুরনো বন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাতে আনন্দলাভ হবে। সম্ভাব্য ক্ষেত্রে ... বিশদ
সন্ন্যাসীরা সব ত্যাগ করেছে গৃহস্থ মানুষকে শান্তি দেবার জন্য। তারা ভিক্ষান্ন গ্রহণ করে। গৃহস্থদেরও উচিত তাদের জন্য কিছু করা, অন্তত ছোট ছোট ত্যাগ করা। ধনীরা যদি এক হাজার টাকা দেয় তাতে ওদের যায়-আসে না। অনেক অর্থের মধ্যে কিছুটা দেয়। আমায় একটা লোক এক হাজার টাকা দিক তা আমি চাই না, এক টাকা করে যদি এক হাজার মানুষ দেয়, সেটা আমি চাই। সেটা ভীষণ শক্তিশালী।
মদ্যপের স্বভাব মদ খাওয়া। সে যেখানেই খাক না কেন, মদের দোকান খুঁজে বের করবেই। ঠিক তেমনি আধ্যাত্মিক পুরুষের স্বভাবও আধ্যাত্মিকতা করা। আমি একজনকে পূর্ণ বিশ্বাস করলাম, তাকে সবকিছু সমর্পণ করলাম। কিন্তু সে যদি চোরও হয় সেই বিশ্বাসই একদিন আমাকে অন্য ঠিক পথ নিজেই দেখিয়ে দেবে। সবাই ঘর-বাড়ি করে, আমি কিছু মানুষ তৈরী করে গেলাম। ঘর-বাড়ি বানানো রাজমিস্ত্রীর কাজ। ওটা আমার দ্বারা হবে না। মানুষই ঘর বানায়, কিন্তু মানুষ ক’জন বানায়? এখন আমি একা খুব একা—‘সবাইকে দিয়েছ ঘর আমায় দিয়েছ পথ।’
শরীরকে ছোট থেকে এত যত্ন করেছি—শ্যাম্পু, তেল লাগিয়েছি, সাবান লাগিয়েছি, ভাল ভাল খাবার খাইয়েছি, ভাল ড্রেস পরিয়েছি। ছেলেবেলার যৌবনের সেই সুন্দর রূপটি কোথায় গেল? বেইমানি করেছে আমার সাথে। এখন কোমর ব্যাথা, চুল পড়ে গেছে। মন এই শরীরকে ভালবেসে এসেছে। মনও বেইমান। এই দুই বেইমানের বন্ধুত্বে আমি শেষ। আমাদের সবচেয়ে বেশি এই দু’জনকে ঘৃণা করা উচিত।
মেয়ের আর বাবা-মা’র সাথে থাকতে ভাল লাগছে না, তা দেখে বাবা-মা বুঝতে পারে, মেয়েকে বিয়ে দিয়ে দেয়। পাত্র তৈরি থাকে। তেমনি মুমুক্ষুত্ব জাগলেও খুঁজে পাওয়া যায়। এদিকে বকেছি, ওদিকে এগারোটা পর্যন্ত সমাধিতে ডুবে রয়েছি। এটা ক্রোধ নয়। তাহলে সমাধি হত না। আমি অহংকার করি, এটা অহংকার নয়। একটা জিনিসকে ভাঙতে গেলে আরেকটা আরও বড় জিনিসের দরকার।
খেলোয়াড় বলটাকে নিয়ে যেমন সোজা গোলে ঢুকিয়ে দেয়, তোমাদের মনটাকে নিয়ে আমিও সোজা ভেতরে আত্মায় ঢুকিয়ে দেই।
মানুষ সকাল থেকে রাত্রি পর্যন্ত কী খাব, কী খাব, মাছ খাব না মাংস খাব— এই করে। শুধু মাছ খেতে হলে বিড়াল হওয়াই ভাল ছিল। তাহলে অনন্ত বিনে পয়সার মাছ খাওয়া যেত। রোজ মাংস খেতে হলে সিংহ হওয়া ভাল ছিল, তাতে টন টন রোজ মাংস খাওয়া যেত। তাই অন্য কথা ছেড়ে আত্মার বা ব্রহ্মের কথা বলো।
ননী খাওয়া ভগবানকে সবাই মানতে রাজি। ধুলো ঘাটা ভগবানকে মানতে কেউ রাজি নয়। কৃষ্ণ ননী খেতেন। আমি ছোট থেকে রাস্তার ধুলো ঘেটে মানুষ হয়েছি। কিছু ছেলে থাকে না বহু কষ্টে মানুষ হয়, কেউ তাকে চেনে না? সবার অজান্তে একদিন এত বড় হয়, সবাই তাকিয়ে থাকে। কারণ সে জগতে প্রত্যেকটি জায়গা ঘেটে এসেছে, তাই সে আরও মজবুত হয়। আমিও তেমন ভগবান।
একটা রিক্সাওয়ালা রোদে রিক্সা চালাচ্ছে, ঠিক আছে। তাকে গাছের ছায়াতে অল্প বিশ্রাম করতে দেওয়া হল, শবরৎ খাওয়ানো হল। তারপর তাকে যদি আবার চালাতে হয়, সেটা তার কাছে অসুবিধা হয়ে পড়ে। রোদে রিক্সা চালাচ্ছে— ওটা ওর পক্ষে সহজ ছিল। যেই অল্প আরাম দেওয়া হল, আবার রোদে চালানো কঠিন হয়ে পড়ল। তেমনই এই সংসারে দুঃখে সবাই চলছে। আই.ভি.এস.-এ এসে শান্তি পায়, এরপর দুঃখে চলা কঠিন হয়ে যায় তার পক্ষে।