উচ্চতর বিদ্যায় সাফল্য আসবে। প্রেম-ভালোবাসায় আগ্রহ বাড়বে। পুরনো বন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাতে আনন্দলাভ হবে। সম্ভাব্য ক্ষেত্রে ... বিশদ
তাছাড়া অণু-পরমাণু-ত্র্যসরেণুর সঙ্গে ঈশ্বরের কী ধরণের সম্পর্ক, কোন্ সম্পর্ক বলে ঈশ্বর তাদের নিয়ন্ত্রণ করেছেন সেগুলোও তো বলা দরকার। যদি তা না বলা হয় তবে বৈশেষিক দর্শন স্পষ্টভাবে দ্বৈতবাদী হয়ে যায়। অদ্বৈতের ছিটেফোঁটাও এতে থাকে না। যদি দ্বৈতবাদীই হ’ল তাহলে একটি সত্তা অপর সত্তার সংস্পর্শে এল কী করে? বৈশেষিক দর্শনের আলোকে ফলনে শিবকে তাই ধরা যাচ্ছে না। তার অবিন্যস্ত আলোকের ফলনে বহু ধাঁধাঁর সৃষ্টি হচ্ছে। কিন্তু সে ধাঁধাঁ গোলক ধাঁধাঁর মতই লক্ষ্যে পৌঁছুতে পারছে না। প্রতিটি প্রকোষ্ঠে গিয়েই সে প্রস্তরফলকে মাথা খুঁড়ে কেঁদে মরছে আর বলছে, “হে প্রভু তোমার যা ব্যাখ্যা পেলুম তাতে তোমায় বুঝতে পারলুম না। তোমার পরিচিতি পেলুম না। তুমি আমার প্রাণের প্রাণ— এ কথা বুঝেও দার্শনিক তত্ত্ব এ কথা গুছিয়ে বোঝাতে পারছে না। এই দার্শনিক তত্ত্ব আমার মূক হৃদয়ে কেবল কান্নার মালাই সাজিয়ে এনেছে। মূল্যবান এই মানবাধার পেয়েও আমাকে কি চিরদিনই কেঁদে কেঁদে বলতে হবে—
“পাষাণ দেবতা পূজিব বলিয়া/বহু দূর হতে এসেছি চলিয়া/দিও না দিও না চরণে ঠেলিয়া/ কপাল আমার মন্দ।/মানবের প্রাণে কামনা অপার/ভয় নাই প্রভু ফিরাইও না আর/শুধাইব শুধু কী দোষ আমার/ঘুচে যাবে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব।।”
ত্রুটিপূর্ণ দর্শন মানুষকে ত্রুটিপূর্ণ পথে ঠেলে দেয় এ কথা এর আগেও বলেছি। বৈশেষিক দর্শন সম্বন্ধে কথা বলতে গিয়া আবারও বলতে হ’ল।
দার্শনিক যুগের মাঝামাঝি অবস্থায় এসেছিল মীমাংসকদের যুগ। মানুষের সাধারণ বুদ্ধিতে সৃষ্টির সম্বন্ধীকরণে যে সকল ছন্দপতন বা অসামঞ্জস্য দেখা দিত সেগুলোর নিরাকরণ ও দূরীকরণের দায়িত্ব নিয়েছিলেন এই মীমাংসকেরা। সৃষ্টিতে যেমন পূর্ণচ্ছেদ নেই স্রষ্টায় তেমনি পরিচ্ছেদ নেই। কেউ এই মূল তত্ত্বটা মেনে চলেছিলেন, কেউ অংশতঃ মেনেছিলেন, কেউ আবার মানেন নি। নিজেদের বুদ্ধি-বিচার অনুযায়ী কেউ বা অপ্রয়োজনে, কেউ বা প্রয়োজনে বিভিন্ন ধরণের যতিচিহ্ন এঁকে দিয়েছেন।
শ্রীশ্রী আনন্দমূর্ত্তির ‘নমঃ শিবায় শান্তায়’ থেকে