উপার্জন বেশ ভালো হলেও ব্যয়বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে সঞ্চয় তেমন একটা হবে না। শরীর খুব একটা ... বিশদ
বাপিবাবু বলেন, দুর্ঘটনায় পা হারানোর পর নিজেকে অসহায় মনে হয়েছিল। প্রথমে ভেবেছিলাম জীবনে আর ঘুড়ে দাঁড়াতে পারব না। এর ওর কাছে হাত পেতেই হয়ত জীবন চালাতে হবে। তবে কখনও কোনও বাধার কাছে নতি স্বীকার করিনি। প্রতিটি মুহূর্তেই লড়াই চালিয়ে গিয়েছি। শুরুর দিকে ট্রাই সাইকেলে চেপে দিন কাটত। এনজেপি চত্বরে ছোট একটি ঘুমটি দোকান করে স্টেশনারি সামগ্রী বিক্রি করতাম। এরপর সংসারের হাল ফেরাতে টোটো নিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে পড়ি। সেক্ষেত্রে টোটোর ব্রেকে একটু পরিবর্তন করেছি। সবাই পা দিয়ে ব্রেক কষলেও আমি হাত দিয়ে ব্রেক কষি। সেক্ষেত্রে পথে ঘাটে অনেকেই অনেকভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। ট্রাফিক পুলিস কর্মীরাও বিশেষভাবে সাহায্য করে থাকেন।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৯৩ সালে আমবাড়ির কাছে এক রেল দুর্ঘটনার বাপিবাবু দু’টি পা হারান। এরপর তিনি মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। এর ওর কাছে সাহায্যে কোনওমতে দিনপাত হচ্ছিল। তখন বয়স মাত্র ১৮ বছর। এরপর তিনি জীবনে ঘুড়ে দাঁড়ানোর লড়াই শুরু করেন। তিনি সাফল্যও পান। সমস্ত বাধা কাটিয়ে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী হিসাবে তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। এরপর তিনি সংসার পাতেন। দেখাশুনো করে বিয়ে করেন কোচবিহারের বাসিন্দা বিভে দে কে। বিয়ের পরেও কয়েক বছর ব্যবসা করেছেন। এরপর টোটো নিয়ে রাস্তায় নামেন। শুরুর দিকে সামান্য সমস্যা হলেও পরে তা তিনি কাটিয়ে ওঠেন। বর্তমানে তিনি প্রতিদিন ৪০০-৬০০ টাকা আয় করেন। এদিকে শারীরিক বাধা কাটিয়ে সফল টোটো চালক হলেও এখনও অনেক যাত্রী তাঁর টোটোতে চাপতে সাহস করেন না। অনেকে আবার কুণ্ঠা বোধ করে তাঁকে এড়িয়ে যান। আবার অনেকে সাধুবাদও জানান। বাপিবাবুর স্ত্রী বিভা দে বলেন, আমার স্বামী কখনও কারও কাছে মাথা নত করেননি। এমনকী সংসার চালাতেও আমাকে কারও কাছে কোনওদিন হাত পাততে হয়নি। আমি আমার স্বামীকে নিয়ে গর্ববোধ করি।