উপার্জন বেশ ভালো হলেও ব্যয়বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে সঞ্চয় তেমন একটা হবে না। শরীর খুব একটা ... বিশদ
মুজফ্ফপুরের সাহু রোডের পার্শ্ববর্তী গলিতে এই হোমটিকে ঘিরেই গত বছর জুলাই মাসে টলে গিয়েছিল বিহারের রাজ্য-রাজনীতি। যার আঁচ পড়েছিল দিল্লিতেও। এই বেসরকারি হোমে কিশোরীদের দিনের পর দিন ধর্ষণের অভিযোগে মুজফ্ফরপুরের প্রায় সিংহভাগ মানুষই সরকারকে কাঠগড়ায় তুলেছিলেন। সেই রেশ যে এবার এই কেন্দ্রের লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলে পড়বে, তা বুঝতে অসুবিধা হল না। এই কেন্দ্রের নির্বাচনী ইস্যুতে বিরোধী মহাজোটের কাছে এই ধর্ষণকাণ্ডই শাসক এনডিএ শিবিরের বিরুদ্ধে সবথেকে বড় হাতিয়ার। যে বিষয়টিকে ঢাল করে বিরোধী শিবির প্রচারে বলছে, আট থেকে আশি, সব বয়সের মেয়েদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ প্রশাসন। তাই এনডিএ’কে একটা ভোটও নয়।
টাটা ইনস্টিটিউট অব সোশ্যাল সায়েন্সেসের (টিস) গবেষকরা বিহারের জুভেনাইল হোমগুলি নিয়ে অডিট করতে গিয়ে রিপোর্ট দেন, বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা পরিচালিত মুজফ্ফরপুরের এই হোমে গত পাঁচ বছর ধরে আবাসিকদের উপরে যৌন নির্যাতন চালানো হয়েছে। এই রিপোর্টের ভিত্তিতে তদন্ত চালিয়ে প্রায় ৩০ জন কিশোরীকে যৌন নিগ্রহের অভিযোগে পুলিস হোমের দায়িত্বে থাকা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্তা ব্রজেশ ঠাকুর, শিশুকল্যাণ সমিতির কর্তা সহ ১১ জনকে গ্রেফতার করে। সিবিআই তদন্তের দায়িত্বভার নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে চার্জশিটও পেশ করে। যেখানে নৃশংসতার একাধিক ভয়ঙ্কর তথ্য তুলে ধরা হয়।
এহেন হোমকাণ্ডে নীতিশ সরকারের যেভাবে মুখ পুড়েছে, সেই ঘা এখনও দগদগে রয়েছে বলেই দাবি করলেন সাহু রোডের উপরে সুরিন্দ্রর রাম নামে এক পান বিক্রেতা। বললেন, ‘নির্বাচনের মুখে এই ঘটনা গোটা মুজফ্ফরপুরে শাসককে কোয়দায় ফেলেছে। চাপে পড়ে সেই সময়ের সমাজকল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী মঞ্জু বর্মা শুধু পদত্যাই করেননি, তাঁকে গ্রেপ্তারও করা হয়। এই ঘটনা অনেক আগেই বন্ধ করা যেত। কিন্তু হোমগুলিকে দরাজ সার্টিফিকেট দিয়ে প্রশাসনই আস্থা হারিয়েছে।’
বিহার রাজনীতিতে মুজফ্ফরপুর অত্যন্ত চর্চিত একটি কেন্দ্র। জর্জ ফার্নান্ডেজের মতো ব্যক্তিত্ব এই কেন্দ্র থেকেই বারবার নির্বাচিত হয়েছেন এবং কেন্দ্রে মন্ত্রিত্ব সামলেছেন। কিন্তু তারপরেও অনুন্নয়ন এবং কর্মসংস্থানের অভাবে তাড়া করে বেরায় এই লোকসভা কেন্দ্রের ভোটারদের। বিজলৌ শেরপুর, মাকরান, কাচ্ছিপাতি, ভগবানপুরে, সাকরাস কুরহানির মতো পিছিয়ে পড়া এলাকায় দারিদ্রতার ছাপ ভয়বাহ। গোটা মুজফ্ফরপুরে নাগরিক পরিষেবায় উন্নত হয়েছে। কিন্তু প্রশাসন ব্যর্থ পর্যাপ্ত কর্মসংস্থান তৈরিতে এবং চাষিদের আর্থিক সুবিধা বৃদ্ধিতে। তবে এবারের নির্বাচনে সংশ্লিষ্ট অভিযোগ-অনুযোগকে পিছনে ফেলে হোমকাণ্ডই এনডিএ শিবিরের গলার কাঁটা। যে ইস্যুকে ঢাল করে এনডিএ’র হাত থেকে আসন ছিনিয়ে নিয়ে বদ্ধপরিকর মহাজোট শিবির।