উপার্জন বেশ ভালো হলেও ব্যয়বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে সঞ্চয় তেমন একটা হবে না। শরীর খুব একটা ... বিশদ
ভূত বলে কি সত্যিই কিছু আছে? এ নিয়ে তর্কের শেষ নেই। অনেকে ভূতে বিশ্বাস করেন, অনেকে করেন না। কিন্তু আপনি যদি যুক্তিবাদী হন তবে ভূতে বিশ্বাস করতেই হবে! আজ্ঞে হ্যাঁ, করতেই হবে। কারণ, ভূত মানে তো অতীত। আমাদের ফেলে আসা, পিছনে ছেড়ে আসা অতীত, কিছু স্মৃতি, বিস্মৃতি। হ্যাঁ, বিস্মৃতি। জীবনানন্দ লিখেছিলেন, কে হায় হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালোবাসে! শুধুই কি বেদনাবিধুর অতীতকে আমরা ভুলতে চাই? সেই অতীতকে কি আমরা ভুলতে চাই না যা আমাদের ভয় পাওয়ায়, যাকে আমরা দূরে ঠেলে সরিয়ে দিতে চাই। যে অতীতে আমাদের অনেক ভুল, অন্যায়, দোষ চাপা পড়ে রয়েছে ভূত হয়ে?
থিয়েলাইটের নতুন নাটক ‘ভয়’-এর মহড়া দেখতে দেখতে এই ভাবনাগুলোই মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল। নাটককার ব্রাত্য বসু। কেন তাঁকে এ যুগের অন্যতম সো নাটককার বলা হয় তা ফের প্রমাণিত হবে এই নাটক থেকে। গা ছমছমে ভৌতিক রহস্যের আড়ালে তিনি খেলা করেছেন মানুষের মনের গভীরে ডুবে থাকা অতীত নিয়ে। মনের অবচেতনে শিকড় ছড়ানো ভয় নিয়ে।
এ নাটকে অনেক পরত। শুধুই ভয় কিংবা অতীত কিংবা মনস্তত্ব নয়। রয়েছে রাজনীতিও। ২০০৭ সালে এ নাটক লিখেছিলেন ব্রাত্য। তখন তিনি নেতা কিংবা মন্ত্রী হননি। কিন্তু রাজনীতি তো করতেনই। এ নাটকে নাটককারের তৎকালীন রাজনৈতিক দর্শনও অনেকটা খোলসা হয়ে যায়। রয়েছে ব্রাত্যসুলভ সরস সংলাপও। সবমিলিয়ে অত্যন্ত উপভোগ্য এ নাটক।
কাহিনীর কিছুটা ধরতাই দেওয়াই যায়। এক দম্পতি ছুটি কাটাতে যায় একটি জঙ্গল রিসর্টে। সেখানে তারাই একমাত্র বোর্ডার। তাছাড়া আছে ম্যানেজার। সেখানে লোডশেডিং একটা নিত্যনৈমিত্যিক ব্যাপার। অর্থাৎ গা ছমছমে ভূতের গল্পের আদর্শ ক্যানভাস। সেখানে বোরখা ঢাকা নারীমূর্তিটি কার? ম্যানেজার বলে, সেখানে অন্য কোনও মহিলা নেই। যা দেখেছে তা চোখের ভুল! সত্যিই কি চোখের ভুল? আগামী ৩১ জানুয়ারি মিনার্ভায় নাটকটির প্রথম মঞ্চায়ন।
নাট্যটির পরিচালক অতনু সরকার। অতনুর পরিচালনায় যাঁরা মেমসাহেবের ঘড়ি কিংবা অন্য নাটক দেখেছেন তাঁরা জানেন তাঁর দক্ষতা। সেই দক্ষতার আরও এক ঝলক ফের দেখা যাবে ‘ভয়’ নাট্যে। ভৌতিক নাটকের অন্যতম প্রয়োজনীয় অংশ হল আলো। সেই আলোয় রয়েছেন সুদীপ স্যান্যাল। মঞ্চ করেছেন পৃথ্বীশ রাণা। পৃথ্বীশের শিল্পভাবনার ঝলক সম্প্রতি দেখা গিয়েছে ‘অথৈ জল’ নাটকটিতে এবং তা প্রশংসিতও। এছাড়া সঙ্গীতে শ্যামসন মাথুর চক্রবর্তী ওপ্রক্ষেপণে অধীর গঙ্গোপাধ্যায়। অভিনয়ে শম্পা দাস সরকার, রাজেশ্বরী নন্দী, পুলক রায়, অশোক মজুমদার, সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়, শঙ্কুকুমার দাস, সুকুমার দাস ও দেবরাজ গঙ্গোপাধ্যায়।