উপার্জন বেশ ভালো হলেও ব্যয়বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে সঞ্চয় তেমন একটা হবে না। শরীর খুব একটা ... বিশদ
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, লোকসভা ভোটে তৃণমূলের প্রার্থী ঘোষণার পরই কান্দি মহকুমা এলাকার ৫টি ব্লকে নির্বাচন সংক্রান্ত বিভিন্ন ধরনের প্রচার শুরু হয়। সভা, পথসভা, জনসভা, মিছিল ছাড়াও বুথস্তরে আলোচনা শুরু করা হয়। এরপর সপ্তাহখানেক আগে থেকে শুরু করা হয়েছে পাড়া বৈঠক। জঙ্গিপুর কেন্দ্রের খড়গ্রাম বিধানসভা এলাকা এবং বহরমপুর কেন্দ্রের কান্দি, ভরতপুর ও বড়ঞা বিধানসভা এলাকার প্রতিটি গ্রামে পাড়া বৈঠক করা হচ্ছে। প্রতিটি গ্রামে দু-তিন দিন অন্তর পাড়া বৈঠক করা হচ্ছে। পাড়া বৈঠকগুলি পরিচালনা করছে স্থানীয় নেতৃত্ব। বৈঠকে হাজির থাকছেন বুথ কমিটির সভাপতি, সম্পাদক ছাড়াও সক্রিয় কর্মীরা। বৈঠক সন্ধ্যায় শুরু করার পর চলছে রাত ১০টা পর্যন্ত। কোথাও আবার তার থেকেও বেশি সময় লেগে যাচ্ছে। প্রতিটি পাড়া বৈঠকে হাজির থাকছেন এলাকার ২০ থেকে ৩০জন করে। কোথাও আবার তার থেকেও বেশি জমায়েত হচ্ছে। সেখানে উঠে আসছে কেউ কোনও সরকারি ভাতা পান কিনা। কারও ভাতা আটকে আছে কিনা। কেউ আবাস যোজনার ঘর পেয়েছেন কিনা। কেউ পেতে বাকি আছেন কিনা। এছাড়াও এলাকার রাস্তাঘাটের সমস্যা, পানীয় জলের সমস্যা ইত্যাদি বিষয়গুলি বৈঠকে উঠে আসছে। তবে এর মধ্যেই উঠে আসছে বিভিন্ন পারিবারিক ও সাংসারিক অশান্তির ঘটনাও। এই সমস্যা নিয়ে সরাসরি বৈঠকে নিষ্পত্তির প্রস্তাব তুলছেন বাসিন্দারা।
খড়গ্রাম ব্লক তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকার বালিয়া পঞ্চায়েতের ফকিরপাড়া গ্রামে পাড়া বৈঠকে দু’দিন আগে উঠে আসে একটি জমি সংক্রান্ত সমস্যা। স্থানীয় বাসিন্দা ইকবাল শেখ বলেন, মাঠের চারকাঠা জমির দখল নিয়ে কয়েকবছর ধরে আমার এক প্রতিবেশীর সঙ্গে ঝামেলা চলছে। দু’পক্ষ বারবার বসেও মীমাংসা করতে পারিনি। এরপর তৃণমূলের পাড়া বৈঠকে আমরা উভয় পক্ষ মীমাংসার জন্য বসি। ওখানেই সমস্যার সমাধান হয়ে গিয়েছে। শুক্রবার ওই এলাকার লক্ষ্মীনারায়ণপুরে একই সমস্যা দেখা দেয়। সেখানেও পাড়া বৈঠকে সমস্যার সমাধান হয়ে গিয়েছে।
এদিকে কয়েকদিন আগে ভরতপুর-১ ব্লকের জজান গ্রামে পাড়া বৈঠকে একটি সাংসারিক অশান্তি নিয়ে হাজির হন স্বামী ও স্ত্রী। ব্যাপারটি এমন জায়গায় দাঁড়িয়ে গিয়েছিল, যে দু’বছর আগে ওই দম্পতির বিয়ে হলেও স্ত্রী, স্বামীর ভাত না খাওয়ার বায়না ধরেন। স্বামী নেশা না ছাড়ার কারণে স্ত্রী এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু, পাড়া বৈঠকে ওই সমস্যারও সমাধান হয়েছে। সভার নেতৃত্ব স্বামীকে ছ’মাস সময় দিয়েছে নেশা ছাড়ার। এরজন্য স্বামীর ডাক্তারি খরচও জোগাবে দলীয় নেতৃত্ব।
এবিষয়ে কান্দি মহকুমা যুব নেতা শাশ্বত মুখোপাধ্যায় বলেন, জজানের সভায় আমি ছিলাম। ওই সাংসারিক অশান্তি মেটাতে প্রায় আড়াই ঘণ্টা সময় লেগেছিল। তিনি আরও বলেন, এমন সমস্যা অনেক জায়গাতেই উঠে এসেছে। তার সমাধানও হয়েছে। খড়গ্রামের তৃণমূল নেতা জ্যোর্তিময় মণ্ডল বলেন, পাড়া বৈঠকে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা উঠে এসেছে। কোথাও জমির সমস্যা, কোথাও আবার বাড়ির পরিচারিকা নিয়েও সমস্যার কথা উঠেছে।
এবিষয়ে তৃণমূলের কান্দি মহকুমা সভাপতি গৌতম রায় বলেন, বিভিন্ন ধরনের সমস্যা পাড়া বৈঠকগুলিতে উঠে এসেছে। তবে এতে আমাদের ভালোই লাগছে। মানুষ আমাদের উপর ভরসা করে বিচার চাইছেন। সেই যোগ্যতা আমাদের দলের কর্মীদের রয়েছে বলেই আমি মনে করি। আমরা নিজেদের ভাগ্যবান বলে মনে করছি যে, বাসিন্দারা অন্য কোথাও না গিয়ে তাঁদের পারিবারিক সমস্যার বিষয়েও আমাদের কাছে বিচার করতে চাইছেন।