দক্ষিণবঙ্গ

হাতে হাতে স্মার্টফোন, দীঘার সৈকতে ফটোগ্রাফারদের চাহিদা ক্রমশ কমছে

সংবাদদাতা, কাঁথি: স্মার্ট ফোন আসায় অনেক কিছুই স্মৃতি হয়ে গিয়েছে। সেই তালিকায় রয়েছে রেডিও, ক্যামেরা থেকে শুরু করে সিনেমা হল পর্যন্ত। দীঘার সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের ছবি তুলে বেড়ানো ফটোগ্রাফারদেরও কি সেই দশাই হতে চলেছে? মলিন ফুলপ্যান্টটা নীচ থেকে গুটিয়ে হাঁটুর কাছাকাছি তোলা। পায়ে রবারের চপ্পল। গলায় ঝুলছে আদ্দিকালের ক্যামেরা আর কাঁধে একটা ব্যাগ। ওই ব্যাগে রয়েছে নানা স্টাইলে তোলা ছবির স্যাম্পল। সমুদ্রের ঢেউয়ে পা ভিজিয়ে স্নানরত পর্যটক কিংবা পাড়ে বসে থাকা কপোত-কপোতির কাছে গিয়ে নিচু স্বরে অনুরোধ, দাদা ছবি তোলাবেন নাকি? যাঁরা দীঘায় গিয়েছেন, তাঁদের একবার না একবার এই অনুরোধ শুনতে হয়েছে। দীঘার সেই বিচ ফটোগ্রাফারদের ভবিষ্যত বোধহয় নস্টালজিয়া হতে চলেছে। কারণ স্মার্ট ফোন চলে আসায় পর্যটকরা আর তাঁদের কাছে ছবি তোলাতে আগ্রহী নন। এখন পর্যটকরা স্মার্ট ফোনে ছবি তুলে সমাজমাধ্যমে আপলোড করতে আগ্রহী। অনেকে রিল বানান। অথচ একটা সময় ছিল, পর্যটকরা বেড়াতে এসে এইসব ফটোগ্রাফারদের কাছে ছবি তোলাবেনই। চাহিদা কমায় অনেক ফটোগ্রাফারই এখন পেশা বদলেছেন। কেউ হোটেলে কাজ করছেন, কেউ টোটো চালাচ্ছেন, কেউ দোকানপাট করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। যাঁরা এখনও চালিয়ে যাচ্ছেন সেই ফটোগ্রাফাররা সরকারি আর্থিক সহযোগিতার প্রত্যাশী। 
ফটোগ্রাফাররা সমুদ্রসৈকতে ক্যামেরায় ছবি তোলার পর স্টুডিওতে প্রিন্ট করে তা পর্যটকদের হাতে তুলে দেন। নব্বই সালের গোড়া থেকে দীর্ঘ প্রায় দু’ দশক ওল্ড দীঘা থেকে নিউ দীঘার সমুদ্রসৈকতে প্রায় দু’হাজার ফটোগ্রাফার চষে বেড়াতেন। কিন্তু স্মার্ট ফোনের দাপটে ফটোগ্রাফারের সংখ্যা হু হু করে কমেছে। যায়রা এখনও চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁদের কারও সারাদিন গোটা পাঁচেক ছবি তোলা হয়। কারও দু’-একটাতেই আটকে থাকে। এখন ওল্ড দীঘায় শতাধিক ফটোগ্রাফার রয়েছেন। নিউ দীঘায় রয়েছেন কয়েকশো। ফটোগ্রাফি শিল্পকে কেন্দ্র করে ওল্ড ও নিউ দীঘায় প্রচুর স্টুডিও গড়ে উঠেছিল। কিন্তু এখন অনেক স্টুডিওই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ওল্ড দীঘায় এখনও ৫০-৬০টি স্টুডিও টিকে রয়েছে। নিউ দীঘায় সংখ্যাটা একটু বেশি। 
সহস্রাংশু মাইতি ও আবদুল খানের হাত ধরে দীঘায় আউটডোর ফটোগ্রাফির সূচনা হয়েছিল। প্রথমে ছিল সাদা-কালো ছবি। তারপর ইনস্ট্যান্ট ফটোগ্রাফি অর্থাৎ সঙ্গে সঙ্গেই ছবি দিয়ে দেওয়া হতো। পরবর্তীকালে এল কালার প্রিন্ট। বর্তমানে মোবাইলের যুগে সেসব ফিকে। 
ক্ষণিকাঘাটে দাঁড়িয়ে কথা হচ্ছিল এগরার বাসিন্দা আশিস পণ্ডার সঙ্গে। তিনি বললেন, আগে এক-একদিন দু’হাজার টাকাও রোজগার করেছি। কিন্তু স্মার্ট ফোন আসায় ছবি তোলার চাহিদা কমেছে। এখন দিনে দেড়শ-দু’শ টাকাও রোজগার হয় না। তবুও একশ্রেণির পর্যটক আছেন, যাঁরা এগিয়ে এসে ছবি তোলান। ক্যামেরায় তোলা ছবির কদর বোঝেন। তাঁদের জন্যই আমরা বেঁচেবর্তে আছি। পর্যটকদের একাংশ বলছেন, আমরা দীঘায় বেড়াতে এলে একবার হলেও ফটোগ্রাফারদের ক্যামেরায় ছবি তোলাই। যতই মোবাইলের ক্যামেরায় ছবি তুলি না কেন, সকলে একসঙ্গে দাঁড়িয়ে ছবি তোলার মধ্যে একটা অদ্ভুত ভালোলাগা লুকিয়ে রয়েছে। 
ওল্ড দীঘা ফটোগ্রাফি ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য সহস্রাংশুবাবু বলছিলেন, স্মার্ট ফোনের দাপটে এই পেশা ধুঁকছে। তাছাড়া বর্তমান যে ক্যামেরা ব্যবহার হয়, সেগুলি বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না। যাঁরা দামি ক্যামেরা কিনছেন, নোনা জলহাওয়ায় সেগুলি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। নানা সমস্যা থাকলেও পেটের টানে অনেকেই এখনও একাজে যুক্ত। 
দীঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন সংস্থার সদস্য তথা রামনগর-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নিতাইচরণ সার বলেন, স্মার্ট ফোনের দাপটে ফটোগ্রাফারদের কদর কমেছে এটা ঠিক। তবে আমরা যে কোনও পরিস্থিতিতে তাঁদের পাশে আছি।
1Month ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

অতিরিক্ত কর্মের চাপ গ্রহণ করে বেকায়দায় পড়তে পারেন। নতুন কর্মলাভের সম্ভাবনা। আয় বাড়বে।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮২.৬৮ টাকা৮৪.৪২ টাকা
পাউন্ড১০৯.৫৩ টাকা১১৩.১১ টাকা
ইউরো৯১.৭৫ টাকা৯৪.৯৫ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
21st     September,   2024
দিন পঞ্জিকা