কলকাতা

মধ্যরাতে নূপুরের আওয়াজ-সন্ধি পুজোর মুহূর্তে হনুমান পাঠিয়ে পদ্ম চুরি, দেবীর লীলা বোঝা ভার

বিশ্বজিৎ মাইতি, বরানগর: গঙ্গা থেকে তুলে আনা জল ও বাড়িতে তৈরি দেশি ঘি দিয়ে ভোগ রান্না করতে হয়। দশমীতে পান্তা ভাত, কচু শাকের তরকারি ও চালতার টক খান দক্ষিণেশ্বরে চট্টোপাধ্যায় বাড়ির ‘বুড়ি দুর্গা’। প্রায় চারশো বছরের প্রাচীন এই দেবীকে ঘিরে ছড়িয়ে বহু মিথ। মধ্যরাতে নূপুরের ধ্বনি, ধূপ-ধুনোর গন্ধ পান পরিবারের সদস্যরা। আর পুজোর সময় অষ্টাদশীর ছদ্মবেশে এসে কখনও নাটমন্দিরে লীলাখেলা করেন দুর্গা। কখনও সন্ধিপুজোর প্রাক মুহূর্তে হনুমান পাঠিয়ে পদ্ম চুরি করিয়ে পরীক্ষা নেন পরিবারের সদস্যদের। অসীম করুণাময়ী তিনি। ভক্তিভরে কিছু চাইলে খালি হাতে কাউকে ফেরান না। দক্ষিণেশ্বরে থাকলে নবমী পুজোয় অবশ্যই দুর্গার রূপ দর্শন করতে আসতেন রামকৃষ্ণ পরমহংস স্বয়ং।
রাজা প্রতাপাদিত্যের মন্ত্রী ও প্রধান সেনাপতি ছিলেন শঙ্করনাথ চট্টোপাধ্যায়। মোগলদের হাতে প্রতাপাদিত্যের পরাজয়ের পর কারাগারে বন্দি ছিলেন তিনি। তাঁর চণ্ডীপাঠ শুনে মুগ্ধ হয়ে যোধাবাঈ তাঁকে মুক্ত করেন। তারপর বারাসতে জমিদারি স্থাপন করে শিব ও দুর্গার পুজো শুরু করেন শঙ্করনাথ। ওই বংশের সংস্কৃত পণ্ডিত নীলকণ্ঠ ন্যায়বাগীশ সহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা গঙ্গাস্নান করতে দক্ষিণেশ্বরে আসতেন। তখন সাবর্ণ রায়চৌধুরীদের অনুরোধে দক্ষিণেশ্বরে জায়গা কিনে বাড়ি তৈরি করে থাকতে শুরু করেন। বারাসতের মতো এখানেও জোড়া শিব মন্দির ও দুর্গা মণ্ডপ স্থাপন করেছিলেন নীলকণ্ঠবাবু। ১০ পুরুষ পেরিয়ে গিয়েছে এই পুজোর। বাড়ির স্থায়ী চণ্ডীমণ্ডপ ও নাটমন্দির স্থানীয়দের কাছে অন্যতম আকর্ষণের জায়গা। মহালয়ার পরের দিন অর্থাৎ প্রতিপদ থেকে ঘট তুলে শুরু হয় দুর্গার আরাধনা। পুজো, চণ্ডীপাঠের পাশাপাশি প্রতিদিন থাকে অন্নভোগের ব্যবস্থা। প্রতিপদের দিন থেকে বাড়ির কূলদেবতা নারায়ণকে দুর্গামণ্ডপে আনা হয়। সপ্তমী থেকে দশমী ভোগে থাকে নানান নিরামিষ রান্না। ফ্রাইড রাইস, আলুর দম, সুক্তো সহ নানান ধরনের তরি তরকারি ও বিভিন্ন রকমের ভাজা, পায়েস, মিষ্টান্ন সহযোগে ভোগ সম্পন্ন হয়। নবমীতে রান্না করে রাখা অন্ন, কচু শাকের তরকারি, চালতার টক সহ একাধিক পদ থাকে। দশমীতে পান্তা ভোগ। দশমীতে দুর্গামণ্ডপে পুজো হয় মনসারও। 
পুজোর নিয়ম-নিষ্ঠা আজও আগের মতোই রয়েছে। সপ্তমীর সকালে হাড়িকাঠ বসানোর পর বাড়ির বিধবা মহিলারা আর অন্ন মুখে দেন না। দুর্গার যাবতীয় রান্না হয় বাড়িতে তৈরি ঘি দিয়ে। তার জন্য পঞ্চমীর দিন মাখন কিনে এনে তা জাল দিয়ে ঘি তৈরি করেন পরিবারের মহিলারা। দধিকর্মার জন্য কনকচুড় ধান সংগ্রহ করে মহালয়া আগের ত্রয়োদশীতে খোলা চাপিয়ে ভাজা হয়। তা থেকে মুড়কি তৈরি হয়। পরিবারের সদস্য প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় ও প্রবীর চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘বাড়ির অনেক ছেলেমেয়ে দেশের অন্যত্র ও বিদেশে থাকে। তাঁদের অনেকে নাস্তিক হয়ে পড়েছিল। সবার মানসিকতা মা বদলে দিয়েছেন। প্রতি মুহূর্তে জাগ্রত মায়ের অস্তিত্ব আমরা সকলে মিলে অনুভব করি। করুণাময়ী মায়ের কাছে মানত পূরণ হওয়ায় বহু মানুষ ভোগ নিয়ে আসেন।
3d ago
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

পেশা ও ব্যবসায় উন্নতির বড় কোনও সুযোগ প্রাপ্তি। ধর্মভাব শুভ। স্বাস্থ্য গড়বড় করতে পারে।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮২.৮৩ টাকা৮৪.৫৭ টাকা
পাউন্ড১০৯.৩৫ টাকা১১২.৯২ টাকা
ইউরো৯১.৯২ টাকা৯৫.১২ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা