কলকাতা

প্রসাদ খেয়ে সুস্থ বহু মুমূর্ষু, শতবর্ষে পা কামারহাটির চট্টোপাধ্যায় বাড়ির দুর্গার

বিশ্বজিৎ মাইতি, বরানগর : দুর্গার প্রসাদ খেয়ে বহু মুমূর্ষু রোগী সুস্থ হয়েছেন। এ বাড়ির পুজো শুরুও হয়েছিল এই শর্তে যে, মায়ের পুজোয় ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে যাঁরাই আসুন না কেন কেউ যেন অভুক্ত না ফেরত যান। সেই শর্ত মেনে ইংরেজি ১৯২৫ সালে কামারহাটির চট্টোপাধ্যায় বাড়িতে শুরু হয় পুজো। এখনও পুজোর তিন দিন এ বাড়িতে আসা কোনও মানুষ প্রসাদ না পেয়ে ফেরেন না। পাশের মুসলমান ও হিন্দু পাড়ার প্রায় হাজার মানুষ প্রতিদিন প্রসাদ খেয়ে যান।
এখন বহু বনেদি বাড়ির দুর্গাপুজো জৌলুস হারিয়েছে। খসে পড়ছে দুর্গা দালানের পলেস্তরা। এরকম অবস্থায় কামারহাটির বিপ্লবী সুরেশচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় বাড়ির পুজো যেন মরুভূমিতে মরুদ্যান। আমেরিকা,কানাডা, দুবাই, মুম্বই থেকে সহ বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা পরিবারের ভাই-বোনেরা পুজোর জন্য রাত জেগে গুগল মিটে আলোচনা করে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি করে। মণ্ডপ সাজানো, ভোগ রান্না, বাজার-হাট, সব দায়িত্ব পালন করে নতুন প্রজন্ম। 
কামারহাটিতে গঙ্গা লাগোয়া ঠাকুরদাস চ্যাটার্জি স্ট্রিটের বাসিন্দা ছিলেন রামচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। তিনি বাংলার নামকরা বীমা এজেন্ট। একটি সর্বজনীন পুজোর উদ্যোক্তা তিনি। কিন্তু মতান্তরের কারণে সে পুজো ছেড়ে বাড়িতে পুজো করার কথা ভাবেন। তাঁর ভাই বিপ্লবী সুরেশচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। তিনি দাদার প্রস্তাবে রাজি। কিন্তু শর্ত দিলেন, যিনি আসবেন তিনিই প্রসাদ খেয়ে তবে ফিরবেন। শর্ত মেনে ১৯২৫ সালে শুরু হল পুজো।
ষষ্ঠীতে বোধনের পর মাতৃ আরাধনা শুরু হয় এ বাড়ির দুর্গা দালানে। সপ্তমী থেকে দশমী পর্যন্ত ভোগের রাজকীয় আয়োজন। সাদা ভাত, ফ্রায়েড রাইস, পোলাও, ঘি-ভাত, খিচুড়ি, পাঁচ রকম ভাজা, সুক্তো, ফুলকপি সহ নানান সব্জির ব্যঞ্জন, চাটনি, পায়েস, দই, মিষ্টি। সপ্তমীতে কাতলা ও বাকি দু’দিন ইলিস মাছ। রাতে শীতল ভোগে লুচি, হালুয়া ও মিষ্টি ছাড়াও নানা পদ। দশমীতে দুর্গা খান পান্তা ভাত। সেদিন কচুশাক, পাঁচরকম ভাজা, অড়হর ডাল, চালতার চাটনি দেওয়ার রীতি। নবমীতে বেদী থেকে বলি কাঠ উঠে যাওয়ার পর সেই মাটি তুলে পরিবারের সবাই একে অপরকে মাখিয়ে দেন। তারপর গঙ্গা স্নান করেন। দশমীর সকালে পরিবারের বিবাহিত বনাম অবিবাহিতদের মধ্যে খেলার আসর বসে। আগে বাড়ির পুরুষরা যাত্রা ও নাটক করতেন। এখন ছোট বড় মিলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করেন। 
কয়েক দশক ধরে এ পুজোর দায়িত্ব সামলেছেন কেদারনাথ চট্টোপাধ্যায়। এ বছর ছেলের হাতে পুজোর দায়িত্ব তুলে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘মা এত বড় পরিবারকে বেঁধে রেখেছেন।’ পরিবারের বর্ষীয়ান সদস্য বিশ্বনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘বাড়ির নতুন প্রজন্ম দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছেন। সময় যত গড়াচ্ছে পুজোর আয়োজন তত বাড়ছে।’ এই পরিবারের সদস্য এবং কামারহাটি পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান তুষার চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘ভাই, ভাইপো-ভাইঝি, ছেলেরা আমেরিকা, কানাডা, দুবাই, ক্রোয়েশিয়া সহ দেশ-বিদেশের নানান প্রান্তে থাকেন। কেউ চিকিৎসক। কেউ ইঞ্জিনিয়ার। কেউ পড়ছেন। সবাই প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন মায়ের ইচ্ছাতেই। পুজোর যাবতীয় উত্তরাধিকার এখন নতুন প্রজন্মের হাতে। আমরা রেফারির মতো চারদিন শুধু বসে দেখি।’ 
1h 1m ago
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

পেশা ও ব্যবসায় উন্নতির বড় কোনও সুযোগ প্রাপ্তি। ধর্মভাব শুভ। স্বাস্থ্য গড়বড় করতে পারে।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮২.৮৩ টাকা৮৪.৫৭ টাকা
পাউন্ড১০৯.৩৫ টাকা১১২.৯২ টাকা
ইউরো৯১.৯২ টাকা৯৫.১২ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা