চারুপমা

• মডেল: ধ্রুবজ্যোতি সরকার, বিনতা চক্রবর্তী • মেকআপ: বিউটি সাহা, আশিষ মণ্ডল 
• ছবি: সুহাশিষ • পোশাক: রাহুল সর্দার • আয়োজক: পিয়ালী সেন (বং কানেকশন স্টুডিও)
• মডেল: আদিত্য চৌধুরী • মেকআপ: অনীতা সাধুখাঁ • পোশাক: শ্রীগোপাল পাঞ্জাবি মহল, 
• যোগাযোগ: ৯৮৩৬৫৯২৫৪৯ • ছবি: প্রদীপ পাত্র • গ্রাফিক্স: সোমনাথ পাল

খোঁপার বাঁধন

বিয়ে বা অন্য উৎসবের সাজে আভিজাত্য আনতে শাড়ির সঙ্গে হেয়ারস্টাইলে বাঁধতে পারেন খোঁপা। এতে সাজ বেশ পরিপাটি হয়, দেখতেও লাগে সুন্দর। লিখেছেন অন্বেষা দত্ত।

শ্যামল মিত্রের গলা। উত্তম কুমারের লিপে— ‘...কবরীতে ওই ঝরো ঝরো কনকচাঁপা...।’ ভোলা যায় না ‘দেওয়া নেওয়া’ ছবির গানটি। অথবা মনে করতে পারেন, ‘ভালবাসা ভালবাসা’ ছবিতে শিবাজী চট্টোপাধ্যায়ের গলায় তাপস পালের করুণ চাহনি, ‘খোঁপার ওই গোলাপ দিয়ে মনটা কেন এত কাছে আনলে...।’ চুলটি পরিপাটি করে বেঁধে তাতে ফুলের সাজ। শুধু বাঙালি নয়, ভূভারতে বেশিরভাগ মেয়েরই প্রিয়। ভাষাবিদ সুকুমার সেনের মতে, ‘খোঁপা’  শব্দটির উদ্ভব সংস্কৃত শব্দ ‘ক্ষম্পেক’ থেকে, যার অর্থ এঁটেসেটে যা রাখা যায়। অতীতের খোঁপার যে কত নাম— অমৃতিপাক, লোটন, পান, টালি, খেজুরছড়ি, এলোকেশী, বিনোদবেণী, প্রজাপতি! তবলার বিঁড়ের মতো দেখতে ছিল বিঁড়ে খোঁপা, বণিকবাড়ির মেয়েরা  কেশসজ্জার জন্য বেছে নিত যে খোঁপা তার নাম হল বেনে খোঁপা। মাথার মাঝখানে বাঁধতে হতো ব্রহ্মচূড় ও বৈষ্ণবচূড়। আরও শুনবেন? সন্ন্যাসিনীর খোঁপার মতো ছিল ভৈরবী খোঁপা। সময় না থাকলে ঝটপট চুল বাঁধতে উদ্ভব হয়েছিল ‘গোঁজ খোঁপা’র। আর মাথার যে কোনও জায়গায় হাতে যেমন-তেমন খোঁপা বাঁধা হলে তাকে বলা হতো ‘খেয়াল খোঁপা’! ‘গোলকধাঁধা খোঁপা’য় নাকি বোঝাই যেত না খোঁপার শুরু আর শেষ কোথায়। হাঁটাহাঁটি করলে সহজেই খসে পড়ে যে খোঁপা, তার নাম হল ‘সোহাগী খোঁপা’।
আঁটোসাঁটো বা টানটান করে বাঁধা নানা ধরনের খোঁপার সেই রেট্রো জমানা পেরিয়ে এখনকার আধুনিকাদের মন মজেছে হালকা বা আলগা খোপায়। খোঁপা নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষার অন্ত নেই। এযুগের আধুনিকাদের হাতে সময় কম। তার মধ্যেই তারা চায় অবিন্যস্ত এলো খোঁপায় ফুটে উঠুক কেশ-সৌন্দর্য। সহজে খোঁপা কীভাবে করা যায়, তা নিয়ে কথা হচ্ছিল এ শহরের ফিউজ স্যালঁ-র হেয়ার এক্সপার্ট অভিরূপ নন্দীর সঙ্গে।
  
খোঁপার জন্য প্রস্তুতি
তিনি কথায় কথায় জানালেন, খোঁপার স্টাইল নানারকম হতে পারে। শাড়ির সঙ্গে বা লেহেঙ্গার সঙ্গে যেভাবেই খোঁপা করতে চান, তার আগে একটা প্রস্তুতি অবশ্যই চাই। যদি মনে করেন, নিজে বাড়িতে করে নেবেন, তার জন্যও নিজের মতো কিছু স্টেপ আপনাকে ফলো করতে হবে। তার মধ্যে কী কী রয়েছে, তা বিস্তারিত জানালেন অভিরূপ। তিনি বললেন, ‘হেয়ারস্টাইল যেমনই হোক না কেন, প্রথমে চাই শ্যাম্পু এবং কন্ডিশনিং। এরপর চুল ব্লো ড্রাই করতে হবে। যে ধরনের খোঁপা আপনার পছন্দ, সেটা করার আগে এই প্রাথমিক জিনিসগুলো করে নিতে হবে। যে কোনও ধরনের চুলের ক্ষেত্রেই এটা প্রযোজ্য। চুল ড্রাই করার পরে, খোঁপার জন্য দরকার টংস। এটা আর নতুন কিছু নয়। অনেকেই জানেন। স্যালঁয় গিয়ে বা নিজেও টং ব্যবহার করে অনেকে চুলের স্টাইলিং করে থাকেন। সফট কার্লস চাইলে ব্যবহার করতে হবে বড় টং। আবার কেউ যদি মনে করেন, তাঁর পাতলা চুল, ভলিউম দেখাতে হবে, তার জন্য নিতে হবে একটু পাতলা টং। এতে বেশি করে কার্লস আসবে।’

নিজে নিজে
অভিরূপের মতে, ‘কোনও কোনও খোঁপার জন্য আবার শুধু শ্যাম্পু কন্ডিশনিং, স্ট্রেট ব্রাশে ব্লো ড্রাই করলেও হয়ে যায়। সফট ব্লো ড্রাই অথবা কার্ল। যে কোনও একটা করা যায়।’ কেউ নিজে নিজে কীভাবে সহজে খোঁপা করবেন? তাঁর কথায়, ‘চুলটা ভালো করে শুকানোর পরে ব্লো ড্রাই করে (কার্ল দরকার নেই) নিজের চুলে একটা সাধারণ পনিটেল বেঁধে নিন। সেখানেই বান হবে। আজকাল ছোবড়ার মতো বান কিনতে পাওয়া যায় যা দেখতে একটা ‘ডোনাট’-এর মতো। এই হেয়ার ডোনাট কিনে নিন। পনিটেলের মধ্যে দিয়ে এবার হেয়ার ডোনাটটা ঢুকিয়ে দিন। এবার সাইড থেকে পিন লাগিয়ে নিন। পিন লাগানোর পরে সাধারণভাবে একটা বেস তৈরি হয়ে গেল। এবার ওই বেসটার উপরে বাকি চুলটা নিয়ে ডোনাটের উপর দিয়ে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে   সেট করে নিন এবং ডোনাটটা পুরো ঢেকে দিন। চুলটা ব্রাশ করে করে  ডোনাট ঢেকে দেওয়ার পরে একটা রাবার ব্যান্ড নিয়ে ডোনাটের গোড়ায় লাগিয়ে দিন। পুরো চুল আটকে গিয়ে এতে ডোনাটের আকৃতি হয়ে গেল। সাইডে আরও চুল থাকলে পিন বা কাঁটা দিয়ে আটকে দিন। তার সঙ্গে এবার খোঁপার উপরে মরশুম বুঝে ফুলের মালা বা এমনি কোনও ফুল পিন দিয়ে লাগিয়ে নিন। এতেই সুন্দর খোঁপা হয়ে গেল, এর জন্য চুলের বেশি লেন্থ না থাকলেও চলে। বাড়িতেই নিজে করে নেওয়া যায়। জেনে রাখুন, ববি পিন আর ইউ পিন হচ্ছে দু’ধনের বিশেষ হেয়ার পিন যেটা এই ধরনের খোঁপার জন্য কিনে নেওয়া ভালো। এই ধরনের খোঁপার পুরোটাতেই ফুল দিয়ে ঢেকে দিতে পারেন। প্রতিটা ফুলের সঙ্গে ইউ পিন লাগিয়ে বানের মধ্যে বসিয়ে দিন। পুরো খোঁপাটাই এতে ফুলে ফুলে ঢেকে যাবে। আজকাল অবশ্য নেটে ফুল লাগানো কভারও পাওয়া যায়, বলছিলেন অভিরূপ। কেউ চাইলে সেটাও করতে পারেন। নেটটা তখন হাত-খোঁপার উপরে বসিয়ে দিলেই হল। যে কোনও হেয়ার অ্যাক্সেসরিজ-এর দোকানে এধরনের নেট পাওয়া যায়। ডোনাটের বদলে প্রয়োজন হলে স্পঞ্জ বান-ও কিনে নিতে পারেন। তাতেই একই কাজ দেবে। 

আলগা খোঁপা
হেয়ার স্টাইলিংয়ে ‘লুজ’ বা ‘মেসি বান’ ইদানীং ভীষণ জনপ্রিয় হয়েছে। অর্থাৎ একেবারে টান টান খোঁপা নয়, একটু এলোমেলো। এমন খোঁপার আলগা সৌন্দর্য মন কাড়বে যে কারও। ‘এথনিক বা ওয়েস্টার্ন— যে কোনও সাজের সঙ্গে এই বান খুব ভালো যায়,’ বলছিলেন অভিরূপ। এছাড়া এই বান করতে গেলে চুল যে খুব শাইনি বা উজ্জ্বল দেখাতে হবে তার কোনও মানে নেই। তাঁর কথায়, ‘এটা খুব ছড়ানো-ছেটানো স্টাইল অথচ তার মধ্যেই লুকটা হবে স্মার্ট। শ্যাম্পু ও ব্লো ড্রাইয়ের পরে এই খোঁপার জন্য হালকা কার্লস করে নিন টং দিয়ে। এমনভাবে যেন চুলটা দেখায় সামান্য উসকোখুশকো। এরমধ্যে ওই ঝকঝকে পরিপাটি ব্যাপারটাই দরকার নেই। এবার চুলের উপরিভাগ থেকে খানিকটা অংশ নিয়ে পেঁচিয়ে পেঁচিয়ে নিন। বিনুনি করবেন না যেন। শুধু পাকিয়ে বা পেঁচিয়ে বা একদিকে ঘুরিয়ে নেবেন নীচ পর্যন্ত। ছোট ছোট ভাগ করে চুল নিন। সেটাকে ঘুরিয়ে নীচ পর্যন্ত যান। তারপর গোটাটা ধরে নিয়ে একটা পনি বানিয়ে নিন। এরপরও শেষে যে চুলটা রয়ে গেল সেটাকে ট্যুইস্ট করে নিন, অর্থাৎ সেই হালকা পেঁচিয়ে নিন। তারপর পিন লাগিয়ে দিন। এবার গোটাটা হাত দিয়ে টেনে টেনে অল্প করে লুজ করে দিন। যেখানে যেখানে প্যাঁচ দেওয়া আছে, ওই অংশ থেকে আঙুল দিয়ে আলগা করে টেনে নিন। এতে গোটাটাই একটু ফোলা-ফোলা দেখতে লাগবে। পুরোটা ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে আটকে দেওয়ায় সেটায় আর ভলিউম থাকে না। তাই খোঁপায় ভলিউম আনার জন্য উপর থেকে টেনে টেনে দিন। এরপর নজর দিন সামনের দিকের চুলে। সামনের দিকে বা কানের পাশে চুল সবারই অল্পবিস্তর ছোট থাকে। কারও ফ্রিঞ্জ থাকে। এই ছোট ছোট চুলগুলো হালকা বের করে রাখুন। তাতে একটু হালকা করে টং করে নিতে পারেন এস প্যাটার্নে। তাহলে চুলটা ওভাবেই ঘুরে কানের পাশে পড়বে। দেখতে ভালো লাগবে। এর জন্য টং দশ মিনিট ধরে নীচের দিকে করলেই হয়। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে এটাও নিজে করা যায়। খোঁপাটা বেশ ন্যাচারাল দেখতে লাগে। এরপর শেষে ববি পিনে ফুল গুঁজে দিন ওই খোঁপায়।

স্যাঁলয় গিয়ে
স্যালঁয় গিয়ে খোঁপা বাঁধানোর নানা ধরন পেয়ে যাবেন। মুখের সঙ্গে কোনটা মানানসই বুঝে সেই স্টাইল বেছে নিন, বললেন অভিরূপ। তাঁর মতে, সাধারণভাবে নিয়মিত মাঝখানে পার্টিং করলে চুলটা ওখান থেকে পাতলা হয়ে যায়। তাই মাঝে ভলিউম পাওয়া মুশকিল হয়। ওইজন্য ‘হেয়ার আপ ডু বা আপস্টাইল’ করার জন্য পার্টিংটা একদিকে সরিয়ে অর্থাৎ সাইড পার্টিং করলে সেটা সঙ্গে সঙ্গে চুলে একটু ভলিউম এনে দেয়। এই স্টাইলটা ফলো করতে পারেন। সঙ্গে লাগবে হোয়াইট টুথ কম্ব। মোটা দাঁড়ার কম্ব যেগুলো মূলত জট ছাড়াতে লাগে। সাইড পার্টিং-এ খোঁপার স্টাইলের ক্ষেত্রে এই কম্ব বেশ উপযোগী। এক্ষেত্রে বেশ কয়েকটা পার্টে উপর থেকে চুলটা ভাগ করে নেওয়া হয়। পিছন দিকে একটা সাপোর্ট দিয়ে আরও ভলিউম বাড়ানো যায়। অভিরূপের দাবি, চাইলে এটাও নিজে করা সম্ভব। তবে স্যালঁতে গেলে আরও একটু নিখুঁত হবে। এরকম খোঁপায় নীচের দিকে ছোট ছোট গোলাপাকৃতিও বানানো যায়।  চুলে ক্রিম্পিং করে আরও ভলিউম দেওয়া যায়। এক্ষেত্রে এক্সটেনশন ব্যবহার করা ভালো। চুলের ক্ষতি কম হয়। অনেকে আজকাল ফুলের বদলে খোঁপায় টিয়ারাও লাগাচ্ছেন। 
7Months ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

পারিবারিক অশান্তির অবসানে গৃহ সুখ ও শান্তি বাড়বে। প্রেমের ক্ষেত্রে শুভ। কর্মে উন্নতি। উপার্জন বৃদ্ধি।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.২৬ টাকা৮৪.৩৫ টাকা
পাউন্ড১০৬.৪৬ টাকা১০৯.১২ টাকা
ইউরো৮৯.৭৬ টাকা৯২.২০ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা