চারুপমা

ত্বকে আর্দ্রতার খোঁজ

বর্ষায় ত্বক ও চুলের সার্বিক যত্ন নেবেন কীভাবে? 

আপনি কি মুডি? ঘন ঘন মুড বদলায়? তা সামলাতে নাজেহাল আপনার প্রিয়জন? উত্তর যদি সদর্থক হয়, তাহলে আপনার দলে নাম লিখিয়েছে সাম্প্রতিক আবহাওয়াও। তার খামখেয়ালিপনায় নাজেহাল হতে হচ্ছে সকলকে। বাইরে ঝরঝর করে বৃষ্টি পড়ছে। আর ঘরের ভিতরে ঘেমে যাচ্ছি আমরা! এই আবহাওয়ায় ত্বকের খুব সমস্যা। বাতাসে এখন আর্দ্রতা খুব বেশি। এত আর্দ্রতার মধ্যে ত্বকের আলাদা করে আর্দ্রতা প্রয়োজন? উত্তর দিলেন কসমেটোলজিস্ট এবং এসথেটিক কনসালট্যান্ট সায়ন্তন দাস। 
বাইরে বৃষ্টির মধ্যেও ভ্যাপসা গরম। এসির বাইরে বেরলেই ঘাম হচ্ছে। ফলে ত্বকের ডিহাইড্রেশন হচ্ছে। ত্বক থেকে জল বেরিয়ে যাচ্ছে। বাইরে বৃষ্টি পড়লেও অতিরিক্ত ঘামের জন্য ত্বক ডিহাইড্রেট হয়ে যাচ্ছে। সায়ন্তন জানালেন, ত্বকে জলের সঠিক ব্যালান্স না থাকলে বলিরেখা পড়বে। ডিহাইড্রেটেড ত্বক অর্থাৎ অসুস্থ ত্বক। এতে অনেক চর্মরোগ বাসা বাঁধতে শুরু করে। কখনও এর থেকে এগজিমাও হতে পারে। এগুলো ঠিক করতে গেলে ত্বকের হাইড্রেশন প্রয়োজন। তার জন্য কী করবেন? ‘আট থেকে দশ গ্লাস জল খান সারা দিনে। তার মধ্যে দু’গ্লাস ডিটক্স ওয়াটার খাওয়া যেতে পারে। ঘুম থেকে উঠে ত্রিফলার জল খালি পেটে খেতে পারেন। এটা লিভার ভালো রাখবে। বর্ষাকালে পেটের সমস্যা দেখা যায়। এর সঙ্গে ত্বককে আর্দ্র রাখতে অ্যালোভেরার জুরি মেলা ভার। হায়ালুরনিক অ্যাসিড নামে একটা উপাদান ত্বককে আর্দ্র রাখে। অ্যালোভেরার নির্যাস থেকে মেলে হায়ালুরনিক অ্যাসিড। সুতরাং অ্যালোভেরা ত্বকে লাগাতে পারেন’, বললেন বিশেষজ্ঞ।
কিন্তু অ্যালোভেরা ব্যবহারের কিছু নিয়ম আছে। সায়ন্তনের কথায়, ‘সরাসরি গাছ থেকে কেটে অ্যালোভেরা লাগানো উচিত নয়। অ্যালোভেরার পাতা থেকে শাঁস বের করে ডবল বয়লারে ফুটিয়ে নিলে একটা হলুদ তরল বেরিয়ে যায়। ওটা ব্যবহার করা উচিত নয়। ওটা ফেলে দিলে দেখবেন ওরপর একটা সাদা থকথকে একটা জেল থাকে। সেটাই ব্যবহার করতে হবে। এর সঙ্গে গোলাপ জলের টোনার মিশিয়ে ব্যবহার করুন। দু’-তিন ফোঁটা ল্যাভেন্ডার এসেনশিয়াল অয়েল মিশিয়ে সপ্তাহে দু’-তিন দিন মুখে লাগান। অ্যালোভেরা জেলের সঙ্গে অল্প বেসন বা কফি গুঁড়ো দিতে পারেন। সঙ্গে মেশাতে পারেন অরেঞ্জ বা অন্য কোনও এসেনশিয়াল অয়েল। মুখে প্যাক হিসেবে লাগাতে পারেন। অ্যালোভেরা জেলের সঙ্গে হলুদগুঁড়ো মিশিয়ে সারা গায়ে লাগিয়ে ১০ মিনিট রেখে ওয়াশ করে নিতে পারেন। এতে ত্বক হাইড্রেট হবে, ময়েশ্চারাইজড হবে।’ বাজারচলতি প্রচুর অ্যালোভেরা জেলও রয়েছে। খেয়াল রাখবেন তার মধ্যে সিন্থেটিক কালার বা ফ্র্যাগর‌্যান্স যাতে যোগ না করা থাকে।
এই সময় চুল পড়ে। এটাও হাইড্রেশনের সঙ্গে যুক্ত। বাইরে জলীয় আবহাওয়া তার মধ্যে ঘাম হওয়ার ফলে মাথার তালু অপরিচ্ছন্ন হয়ে থাকে। ফলে মাথা পরিষ্কার রাখতে হবে। ‘গাছের গোড়া বেশিক্ষণ ভেজা থাকলে সেই গাছ পড়ে বা মরে যায়। মাথাও তেমন। অনেকক্ষণ ভেজা থাকছে। তেল বেরচ্ছে। তার সঙ্গে মিশছে বাইরের ধুলো। এইসব মিশে ফাংগাল ইনফেকশন বাড়ছে। যে কোনও মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে মাথার তালু পরিষ্কার রাখুন। অ্যালোভেরা জেলের সঙ্গে রোজমেরি অয়েল মিশিয়ে স্ক্যাল্পে লাগাতে পারেন। এটা স্ক্যাল্পের পিএইচ ব্যালান্সের ভারসাম্য রাখবে। ফলে স্ক্যাল্পের ফাংগাল ইনফেকশন হবে না’, পরামর্শ দিলেন সায়ন্তন।
এই আবহাওয়ায় ত্বকে চুলকানি, র‌্যাশ, সাদা দাগ হতে পারে। ত্বক পরিষ্কার এবং শুকনো না থাকলে এই সমস্যাগুলো হয়। এগুলোর ঘরোয়া সমাধান রয়েছে। অ্যালোভেরা পাল্পের সঙ্গে তুলসী, আটটা কর্পূর, পুদিনা পাতা নিয়ে তাতে দু’কাপ জল দিয়ে ফোটান। এরপর এটা ছেঁকে তার সঙ্গে পেপারমিন্ট অয়েল দু’ড্রপ দিয়ে স্টোর করে রাখতে পারেন। দিনে দু’বার পুরো শরীরে এটা স্প্রে করতে পারেন। স্নানের পরে স্প্রে করতে পারেন। পাশাপাশি রোমকূপের মুখগুলো পরিষ্কার রাখার দিকে নজর দিতে হবে। বডি অ্যাকনেও হতে পারে। ‘এমন একটা বডি ওয়াশ বা ফেসওয়াশ ব্যবহার করুন যার মধ্যে স্যালিস্যালিক অ্যাসিড রয়েছে। এটা পাওয়া যায় মাশরুম, শসা, মুলো, জুকিনির মধ্যে। শসা, মুলো অনেকের বাড়িতেই থাকে। একটা মুলো, অর্ধেক শসা, চারটে পুদিনা পাতা, নিমে অ্যালার্জি না থাকলে নিম পাতাও নিতে পারেন। এর সঙ্গে সামান্য ক্লোভ অয়েল বা লবঙ্গ দিলেও হবে। এটা ভালো করে পেস্ট করে নিন। এই মিশ্রণ ত্বকে পাঁচ থেকে সাত মিনিট লাগিয়ে রেখে ধুয়ে ফেলুন’, ঘরোয়া টোটকা দিলেন সায়ন্তন।  
পাশাপাশি সারা বছরের মতো এ সময়ও সঠিক পদ্ধতিতে সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে। নাহলে যে কোনও রকম ত্বকচর্চা মাঠে মারা যাবে। এ সময় জেল বেসড সানস্ক্রিন ব্যবহার করবেন না। লোশন বেস সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। এমন একটি হেয়ার সেরাম ব্যবহার করুন যা চুলে ভলিউম দেবে। যার মধ্যে এসপিএফ থাকবে যা চুলের রং রোদ্দুরের হাত থেকে রক্ষা করবে।
ত্বক ভালো রাখতে একটি ঘরোয়া সানস্ক্রিনের সন্ধান দিলেন সায়ন্তন। তিনি জানালেন, খাঁটি নারকেল তেলের সঙ্গে জিঙ্ক অক্সাইড ২:১ মাপে নিতে হবে। এর সঙ্গে অ্যালোভেরা জেল এবং শিয়া বাটার মিশিয়ে ডবল বয়লারে ফুটিয়ে নিন। তারপর পছন্দমতো যে কোনও এসেনশিয়াল অয়েল মিশিয়ে তা স্টোর করতে পারেন ২১ দিন পর্যন্ত। তার মধ্যে ব্যবহার করে ফেলে আবার নতুন করে তৈরি করতে হবে এই সানস্ক্রিন। এটা রোদের ইউভি রশ্মি থেকে বাঁচাবে। এর কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। তিনি বলেন, ‘বাজারচলতি সানস্ক্রিন কেনার সময় দেখে নেবেন প্যাকেটের গায়ে নন কোম্যাডোজেনিক কথাটা যেন লেখা থাকে। এর অর্থ যেটা আপনার রোমকূপের গোড়াকে আটকাবে না। আটকে গেলে ত্বক শ্বাস নিতে পারবে না। তৈরি হবে নানা সমস্যা।’ 
স্বরলিপি ভট্টাচার্য
1Month ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

উপস্থিত বুদ্ধি ও প্রখর অনুমান ক্ষমতার গুণে কার্যোদ্ধার। ব্যবসা, বিদ্যা, দাম্পত্য ক্ষেত্রগুলি শুভ।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.১৩ টাকা৮৪.৮৭ টাকা
পাউন্ড১০৮.৩২ টাকা১১১.৮৭ টাকা
ইউরো৯১.২৫ টাকা৯৪.৪৩ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
5th     September,   2024
দিন পঞ্জিকা