আধুনিক প্রজন্মকে ব্যাগবিলাসী বলাই যায়। তাদের পছন্দ স্লিং ব্যাগ। তাই এমন ব্যাগে বাহারি নকশা এখন রীতিমতো ফ্যাশনদুরস্ত।
খেস ব্যাগে আধুনিক ছোঁয়া
শান্তিনিকেতনী খেসের স্লিং ব্যাগের একটা চরিত্র আছে। সব পোশাকের সঙ্গেই দিব্য মানিয়ে যায় এই ব্যাগ। শাড়ি, কুর্তি অথবা জিনস টপ— পোশাক যেমনই হোক, কাঁধে লম্বা উজ্জ্বলরঙা স্লিং ব্যাগ কেতায় ভরপুর। তার চরিত্রে বদলও আসছে। খেসের স্লিং ব্যাগেও গতানুগতিক ছোঁয়া বজায় রেখে আধুনিক প্রজন্ম সামান্য একটু নতুনত্ব খুঁজছে। সেই চাহিদা অনুযায়ী এই ধরনের খেসের ব্যাগে মানানসই লেদার প্যাচ, লেদার জিপলাইন, গোটা ব্যাগের ধার বরাবর লেদার স্ট্রিপ, ব্যাগের সঙ্গে প্রিন্টেড স্লিং ইত্যাদি বানাচ্ছেন ডিজাইনাররা। এক্ষেত্রে অনেক সময়ই প্রিন্টেড লেদার ব্যবহার করছেন ডিজাইনাররা। খেসের উজ্জ্বল রঙের সঙ্গে প্রিন্টেড লেদারই বেশি ভালো লাগে। তবে সেই প্রিন্টগুলো একটু হালকা বা সেলফ কালারের হওয়াই বাঞ্ছনীয়। নাহলে খেসের ঔজ্জ্বল্য খানিকটা হলেও ম্লান হয়ে যায়।
লেদার জুট মিলমিশ
স্লিং ব্যাগের দুনিয়ায় আরও নতুনত্ব এসেছে। তারই অন্যতম জুট ও লেদার মিক্স অ্যান্ড ম্যাচ স্লিং। জুটের স্লিং ব্যাগের সঙ্গে লেদারের মিশেল এখন ব্যাগের ফ্যাশনে খুবই প্রচলিত। স্লিং ব্যাগের অনেক ধরন হতে পারে। কখনও তাতে হাফ অ্যান্ড হাফ লেদার ও জুটের মিলমিশ থাকছে। এক্ষেত্রে উজ্জ্বল রঙের লেদারের সঙ্গে হালকা রঙের জুট দেওয়া হচ্ছে। অনেক সময় আবার প্রিন্টেড জুটের বডি আর সঙ্গে ম্যাচিং বা কনট্রাস্ট করে চামড়ার ফালি বসিয়ে উপরের দিকটা তৈরি হচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে এমন ডিজাইনে ফ্রন্ট পকেটও রাখা হচ্ছে। পকেটের পাইপিং লেদার দিয়ে। এই ধরনের ব্যাগে স্লিং সাধারণত লেদারেরই রাখা হচ্ছে। লম্বালম্বি জুট আর লেদার স্ট্রাইপ সেলাই করা হচ্ছে ব্যাগের চেহারায় বৈচিত্র্য আনতে।
কাপড়ের নানারকম
র্য সিল্ক, তসর, সুতি মিলছে স্লিং ব্যাগের নকশায়। একরঙা তসরের ফ্ল্যাপ, সঙ্গে কনট্রাস্ট রঙের প্রিন্টেড আজরাখ কাপড় দিয়ে তৈরি বডি, ফ্ল্যাপের মুখে ম্যাগনেট বোতাম আর ভেতরে চেন। সুতির কাপড়ে আজরাখ ছাড়াও মধুবনী প্রিন্ট, ভেজিটেবল ডাই, ইন্ডিগো প্রিন্ট ইত্যাদির সঙ্গে খুবই উজ্জ্বল র্য সিল্কের কাপড় মিক্স অ্যান্ড ম্যাচ করানো হচ্ছে এই ব্যাগে। র্য সিল্কের রঙে লাল, মেরুন, বটল গ্রিন, নেভি ব্লু-র প্রাধান্য চোখে পড়ছে। হলুদ, লাইম, ফ্লুরোসেন্ট গ্রিন তসর ব্যাগের নকশা এই প্রজন্মের খাস পসন্দ।
কড়ি, চুমকি, বোতাম
স্লিং ব্যাগের নকশায় এখন উজ্জ্বল উপস্থিতি গুজরাতি, কাঁথা বা কাশ্মীরি স্টিচের। একটু গাঢ় রঙের কাপড়ে কনট্রাস্ট সুতো দিয়ে ভরাট সেলাই করা হচ্ছে। এই সেলাই ব্যাগের একদিকে করা হচ্ছে। সঙ্গে রং মিলিয়ে অন্যপাশে ছোট বড় বোতাম লাগিয়ে নকশা থাকছে। কখনও বা ব্যাগের ধার দিয়ে কড়ি বসানো হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে আবার চুমকিও লাগানো হচ্ছে এই ব্যাগে। গুজরাতি সেলাইয়ের সঙ্গে মেলবন্ধন ঘটছে মিরর ওয়ার্কের। অনেক সময় এই ধরনের ব্যাগে কাপড়েও বাঁধনি প্রিন্ট দেখা যায়।
প্রিন্টেড লেদার
স্লিং ব্যাগে প্রিন্টেড লেদার এখন খুব ইন। এই ক্ষেত্রে চামড়ায় নানারকম প্রিন্ট দেখা যাচ্ছে। তার মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় এই মুহূর্তে অ্যানিমাল প্রিন্ট। বাঘ, সিংহের মুখ, কুকুর, বেড়াল, খরগোশ বা কাঠবিড়ালির পায়ের ছাপ ইত্যাদি থাকছে এই প্রিন্টে। টিনএজাররা খুবই পছন্দ করছে। বড়দের জন্য আছে জিওমেট্রিক প্রিন্ট, ফ্লোরাল প্রিন্ট এবং শেপ প্রিন্ট। শেপ প্রিন্টে একটা আকৃতিকে ছোট বড় মাঝারি রূপে ব্যাগের চারদিকে প্রিন্ট করা হয়। হেক্সাগন, ট্রায়াঙ্গল, কিউব বেশি জনপ্রিয়। তুলনায় চৌকো বা গোলাকৃতির চাহিদা কম। এমন ব্যাগে ফিকে রঙের চামড়ায় উজ্জ্বল প্রিন্টের প্রাধান্য চোখে পড়ার মতো।
কমলিনী চক্রবর্তী