চারুপমা

• মডেল: ধ্রুবজ্যোতি সরকার, বিনতা চক্রবর্তী • মেকআপ: বিউটি সাহা, আশিষ মণ্ডল 
• ছবি: সুহাশিষ • পোশাক: রাহুল সর্দার • আয়োজক: পিয়ালী সেন (বং কানেকশন স্টুডিও)
• মডেল: আদিত্য চৌধুরী • মেকআপ: অনীতা সাধুখাঁ • পোশাক: শ্রীগোপাল পাঞ্জাবি মহল, 
• যোগাযোগ: ৯৮৩৬৫৯২৫৪৯ • ছবি: প্রদীপ পাত্র • গ্রাফিক্স: সোমনাথ পাল

নির্যাসে মিলায় রূপ

ফুল ভালোবাসে না, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া ভার। এক ঝাঁক ফুলের মাঝে দাঁড়িয়ে দেখুন, এক নিমেষে মন ভালো হয়। কখনও তার সুবাস উদ্বেল করে। কখনও শুধু তার সৌন্দর্যেই মোহিত মানুষ। শুধু দেখনদারি নয়, ফুলের গুণেরও নেই শেষ। একালে ফুলের নির্যাস থেকে তৈরি হচ্ছে রূপচর্চার বিভিন্ন সামগ্রী। জনপ্রিয়ও হচ্ছে দ্রুত। কারণ সিন্থেটিক রাসায়নিকে তৈরি জিনিসে আগ্রহ কমছে। ত্বক বা কেশ চর্চায় অনেকেই এখন ঝুঁকছেন অর্গ্যানিক বা জৈব বস্তুর দিকে। আর তাই ফুল বা গাছ পাতার নির্যাস থেকে তৈরি জিনিসের কদর বাড়ছে। শুধু রূপটান নয়, ভেতর থেকে শরীরকে সুস্থ রাখার ক্ষেত্রেও এধরনের সামগ্রী সাহায্য করে। ইমিউনিটিও বাড়ায়। মাথা ধরা বলুন অথবা হজমের সমস্যা কিংবা স্ট্রেস, ক্লান্তি ইত্যাদিতে ফ্লোরাল এসেনশিয়াল অয়েলের ব্যবহার তো আমরা শুনেই থাকি। ত্বক চর্চাতেও পিছিয়ে নেই ফুলের নির্যাস। শুধু গন্ধ বা রঙের জন্য ফ্লোরাল এক্সট্র্যাক্ট কাজে লাগে না কিন্তু। এর অনেক উপকার রয়েছে। কারণ এতে আছে ভিটামিন, মিনারেলস, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট যা ত্বককে  পরিষ্কার করে ময়েশ্চারাইজ করে, এতে ত্বক মসৃণ হয়। ত্বকের অকালবার্ধক্য দূর করতেও কাজে দেয় ফুল-নির্যাস। এ ধরনের সামগ্রী থেকে পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়ার কোনও আশঙ্কা নেই। তবে নির্যাস থেকে তৈরি জৈব সামগ্রী সংরক্ষণের ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম মানতে হয়। কারণ এতে প্রিজারভেটিভ থাকে না। রূপ-বিশেষজ্ঞ সঞ্চিতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রাকৃতিক উপাদানে সমৃদ্ধ রূপটান সামগ্রী তৈরি করছেন বহুদিন। তাঁর কাছেই জানা গেল ফুলের নির্যাসের গুণ। 
................. জুঁই ...............
প্রথমে আসা যাক জুঁই ফুলের কথায়। এটি প্রাকৃতিক ডিওডোরেন্ট হিসেবে কাজ করে, বললেন সঞ্চিতা। জুঁই বলতে গন্ধটাই প্রথমে মনে আসে। দু’ভাবে এই ফুল থেকে উপকৃত হতে পারেন। এটা থেকে বানানো যায় ন্যাচারাল মিস্ট। ৩০০ মিলি মিনারেল ওয়াটারে আট-দশটা জুঁইফুল ভিজিয়ে দিতে হবে। এটা পাঁচ-সাত ঘণ্টা এসি ঘরে রাখতে হবে। তা না হলে ফুল মজে যেতে পারে। গন্ধ সেক্ষেত্রে নষ্ট হয়ে যাবে। তাই ঠান্ডায় রাখা দরকার। নির্ধারিত সময়ের পরে ওই জলটা ছেঁকে কোনও বোতলে ভরে ফ্রিজে রেখে দিন। ফেস মিস্ট বা টোনার হিসেবে কাজ করবে এটি। এছাড়া জুঁইফুল বেটে সেটা জোজোবা অয়েল, গন্ধহীন নারকেল তেল, অ্যাভোকাডো অয়েল বা সুইট আমন্ড অয়েলে মিশিয়ে সেই তেল মুখে লাগানো যায়। গ্রীষ্ম-বর্ষা সব ঋতুতেই এটা ত্বকের জন্য ভালো, জানালেন সঞ্চিতা। এই ফুল থেকে একটা প্রাকৃতিক উপাদান বেরয়, তার নাম কোটন। এই কোটনের জন্যই জুঁইয়ের তরতাজা গন্ধ দীর্ঘস্থায়ী হয়। এই কোটন তেলে মিশলে সেই তেল দিয়ে স্নান করতে পারেন। গ্রীষ্মে শরীরের দুর্গন্ধ দূর হবে প্রাকৃতিক উপায়েই। যে কোনও ক্ষত, স্ট্রেচ মার্ক ইত্যাদি অনেকটা সারিয়ে দিতে পারে জুঁইফুল। মুঠোখানেক জুঁইফুল নিয়ে বেটে নিন। তার সঙ্গে পেট্রোলিয়াম জেলি মেশান। তারপর সেটা ফ্রিজে রেখে মাঝে মাঝে ব্যবহার করতে পারেন। এতে ত্বকের ইলাস্টিসিটিও বাড়ে। কম্বিনেশন স্কিন বা সেনসিটিভ স্কিনে ব্রণ ইত্যাদির উপরেও জুঁইফুলের রস লাগালে উপকার পাবেন বলে জানালেন তিনি। 
................. জবা .................
জবা ফুল থেকে ত্বক এবং চুল দুই-ই উপকৃত হয়। এই ফুলেরও মূল উপাদান অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। উচ্চ রক্তচাপ আর ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এটি। সান বার্ন থেকে বাঁচতে জবার রসও অব্যর্থ। কীভাবে জবার নির্যাস থেকে উপকৃত হতে পারেন, তার হদিশ দিলেন সঞ্চিতা। তিনটি জবাফুল নিয়ে ৫০০ মিলি পরিশোধিত জলে ফুটিয়ে ঠান্ডা করে সেই জলটা ডিপ ফ্রিজে জমিয়ে বরফ করে নিন। পরে সেটা দু’বেলা ৫-১০ মিনিট ত্বকের উপর বোলালে রোদে পুড়ে যাওয়া চামড়া আরাম পায়। এতে ভিটামিন সি আর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকায় নিয়মিত ব্যবহার করলে ত্বকের কোলাজেন বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়। জবা ফুল বেটে রেখে দিলে সেই অংশ থেকে কিছুটা করে নিয়ে যে কোনও হার্বাল নাইট ক্রিমের সঙ্গে মিশিয়ে মাখা যেতে পারে মুখে। জবা ফুল বেটে এয়ার টাইট কন্টেনারে ফ্রিজে রাখতে হবে। ডায়েট করতে চাইলেও লা জবাব জবা। জবার পাতা চায়ে ফুটিয়ে ছেঁকে মধু দিয়ে খেলে তাতে খিদে ভাব কমে যায়। এতে ক্যালোরি ইনটেক কমে। 
.................. পদ্ম ................
পদ্মফুলের উপকারিতা অনেক। লোটাস থেকে তৈরি এসেনশিয়াল অয়েল অন্য কোনও তেলে মিশিয়ে রাখা যায়। এই মিশ্রণের ব্যবহার অনিদ্রা দূর করে, স্ট্রেস কমায়। এছাড়া এর পাতাও বেশ কার্যকরী, বললেন সঞ্চিতা। পাঁচ-সাতটি পদ্মপাতা নিয়ে ধুয়ে পরিশোধিত জলে রেখে জলটা ছেঁকে নিয়ে সরাসরি ত্বকে স্প্রে করা যায়। এটাও বলিরেখা কমায়।
 ........ গোলাপ ........
রূপচর্চায় গোলাপের ব্যবহার বহু প্রাচীন যুগ থেকেই। গোলাপের পাপড়ি শুষ্ক অবস্থায় কিনতে পাওয়া যায়। সেটা পরিশোধিত জলে (ডিসটিলড ওয়াটার) ফোটানোর পরে কালার আসবে হাল্কা,  সেটা ছেঁকে নিয়ে রাখতে পারেন। সেটাই আসল গোলাপ জল। বাজার থেকে কেনার চেয়ে এটা তৈরি করে নেওয়া ভালো। এই পাপড়ি বেটে ক্রিমও তৈরি করা যায়। সঞ্চিতা বললেন, তাঁর ব্র্যান্ড স্যানস এসেনশিয়াল-এ বিভিন্ন প্রাকৃতিক পণ্যের মধ্যে গোলাপ পাপড়ি মেশানো নাইট ক্রিম সবচেয়ে জনপ্রিয়। গোলাপে আছে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। ত্বকে কোলাজেন বাড়ায়, স্যাগিং বা ত্বক ঝুলে পড়া ঠেকায় এটি। তবে সাইনাসের সমস্যা থাকলে ঠান্ডা গোলাপ জল ব্যবহার করবেন না। প্যাক বা ক্রিমই ভালো। গোলাপে থাকে হাইড্রেটিং প্রপার্টি, যা শুষ্ক ত্বককে আরাম দেয়। কোষ পুনরুজ্জীবন ও সান বার্ন থেকেও বাঁচাতে পারে এই নির্যাস, বলেন তিনি। 
সঞ্চিতা জানালেন, গোলাপের পাপড়ি বেটে পেস্ট তৈরি করে দুধ, মধু, জাফরান মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে সপ্তাহে একবার সারা মুখে লাগিয়ে মিনিট ১৫ রেখে ধুয়ে ফেললে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় থাকে। বয়স বাড়ার সঙ্গে ত্বকের যে টান বা ভাঁজ দেখা দেয়, সেটাও দূরে রাখে। শুষ্ক ত্বকের জন্য ক্লেনজার হিসেবে গোলাপের পেস্ট আর দুধের মিশ্রণ অসাধারণ কাজ করে। হাল্কা হাতে মাসাজ করে সারা মুখে গলায় এটি মেখে জল দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। তারপর ক্রিম বা লোশন ব্যবহার করা যাবে। অয়েলি স্কিন হলে দুধের পরিবর্তে দই নিয়ে একই পদ্ধতিতে ত্বক পরিষ্কার করা যায়। এগুলো যেহেতু থেরাপিউটিক ইউজ, তাই একমাস ব্যবহার করলে ত্বকের টোন পরিবর্তন হবেই। গোলাপের ব্যবহার অনেক। এর পেস্টের সঙ্গে অলিভ অয়েল, মধু আর লেমন এসেনশিয়াল অয়েল দিয়ে প্যাক বানিয়ে ত্বকের কালো ছোপ ধরা যে কোন জায়গাতে যেমন কনুই বা হাঁটু, আঙুলের করগুলোয় লাগিয়ে ১৫ মিনিট রেখে অল্প চিনি হাতে নিয়ে স্ক্রাব করে ভালো করে জলে ধুয়ে নিতে হবে। এটা টানা ১৫ দিনে একবার করে অন্তত তিন মাস করতে পারলে কালো ছোপ চলে যায়।
............ ক্যামোমিল ............
ক্যামোমিল ফুল ঠিকই, তবে এর ব্যবহার মূলত চা পাতা হিসেবে, বললেন সঞ্চিতা। রাতে ঘুমের জন্য খুব ভালো এটি। স্ট্রেস দূর করতেও সাহায্য করে। ডিনার শেষে এই চা খেলে সুনিদ্রার পাশাপাশি স্কিন ভালো হয়। হজমের সমস্যা দূর করে। ১৫-২০ দিন টানা খেলেই বুঝতে পারবেন এর উপকার। এটা শরীরের টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে। কেউ যদি চান, না খেয়ে এই চা পাতা গরম জলে ডুবিয়ে রেখে জলটা ঠান্ডা করে ফ্রিজে রেখে দিতে পারেন। ওই জল থেকে অল্প করে নিয়ে প্যাক বানিয়ে লাগাতে পারেন। চা পাতা ভিজিয়ে রেখে পরে বেটে সেটা ক্রিম বা 
তেলে মিশিয়ে লাগাতে পারেন। সান বার্ন বা ব্রণ থেকে বাঁচায় এই মিশ্রণ। তবে মনে রাখবেন, এই চা পাতা বেশ দামি, কারণ বিদেশ থেকে আসে। 
স্যানস এসেনশিয়াল, 
যোগাযোগ: ৯৮৩১১৬২৯৯৬
13Months ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

পারিবারিক অশান্তির অবসানে গৃহ সুখ ও শান্তি বাড়বে। প্রেমের ক্ষেত্রে শুভ। কর্মে উন্নতি। উপার্জন বৃদ্ধি।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.২৬ টাকা৮৪.৩৫ টাকা
পাউন্ড১০৬.৪৬ টাকা১০৯.১২ টাকা
ইউরো৮৯.৭৬ টাকা৯২.২০ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা