চারুপমা

• মডেল: ধ্রুবজ্যোতি সরকার, বিনতা চক্রবর্তী • মেকআপ: বিউটি সাহা, আশিষ মণ্ডল 
• ছবি: সুহাশিষ • পোশাক: রাহুল সর্দার • আয়োজক: পিয়ালী সেন (বং কানেকশন স্টুডিও)
• মডেল: আদিত্য চৌধুরী • মেকআপ: অনীতা সাধুখাঁ • পোশাক: শ্রীগোপাল পাঞ্জাবি মহল, 
• যোগাযোগ: ৯৮৩৬৫৯২৫৪৯ • ছবি: প্রদীপ পাত্র • গ্রাফিক্স: সোমনাথ পাল

দূরে থাক  ডার্ক সার্কল

অফিসে কাজের চাপ। কখনও বাড়িতে সমস্যা। স্ট্রেস এখন আমাদের নিত্যসঙ্গী। রাতের ঘুম উধাও। তার ছাপ সবার আগে পড়ে চোখের উপর। কীভাবে বাঁচবেন ডার্ক সার্কল থেকে? বিউটি থেরাপিস্ট ব্লসম কোচর-এর সঙ্গে কথায় অন্বেষা দত্ত।

কাজলকালো আঁখি নয়। চোখের চারপাশে এ যেন কৃষ্ণগহ্বর! পরিচিত নাম, ডার্ক সার্কল। এই সমস্যায় জেরবার হতে হয় নানা বয়সের মহিলাকে। সাজগোজ যতই জমিয়ে হোক, ফোলা ফোলা চোখের কোল বা চারপাশে কালো ছোপ সব মাটি করে দেয়। মেকআপের পুরু আস্তরণ যতই তা ঢেকে দিক, সাধারণ সময় আয়নায় মুখমণ্ডল জানান দেয়, কোথাও যেন সব ঠিক নেই। কীভাবে এই সমস্যার নিরসন সম্ভব? হাতের কাছে প্রাকৃতিক কোনও উপায় আছে কি? সেসব নিয়েই পরামর্শ দিলেন অভিজ্ঞ বিউটি থেরাপিস্ট ব্লসম কোচর। 
   তিনি বললেন, দেখুন রাতারাতি হঠাৎ ডার্ক সার্কল তৈরি হয় না। দীর্ঘ দিনের অযত্নের ফল এটা। আর এখন তো ঘরে ঘরে এই সমস্যা। অথচ সঠিক সমাধান কারও কাছেই নেই। অপর্যাপ্ত ঘুম, মোবাইল ফোন বা ল্যাপটপের অতিরিক্ত ব্যবহার, ডিহাইড্রেশন বা শরীরে ঠিকমতো জলের অভাব, অপুষ্টি, হাইপারপিগমেন্টেশন, স্মোকিং বা ড্রিঙ্ক করা এবং সর্বোপরি স্ট্রেস— চোখের আশপাশে অন্ধকার গহ্বর তৈরির পিছনে এগুলোই মূল কারণ। এই সমস্যা খুব ছোট বয়স থেকেই শুরু হতে পারে বলে জানালেন ব্লসম। এর জন্য তিনি দায়ী করেন অপুষ্টি, জিনগত সমস্যা এবং ব্লু লাইট ডিভাইস-এর অতিরিক্ত ব্যবহারকে। কোভিড পরবর্তীতে যেটা মারাত্মক বেড়েছে। বড়দের ক্ষেত্রেও এগুলো আরও বেশি সমস্যা করে, কারণ বয়সের ছাপ কালের নিয়মে এমনিতেই চোখেমুখে পড়তে থাকে। আর এই ধরনের গ্যাজেট ব্যবহার করে চোখের ক্লান্তি বাড়ে। ঘনঘন হাত দিয়ে চোখ রগড়ানো থেকে জটিলতা ক্রমে বাড়ে।
সবসময় মনে রাখতে হবে চোখের চারপাশের চামড়া খুব পাতলা এবং স্পর্শকাতর। ত্বকের এই অংশে যে প্রোডাক্টই ব্যবহার করুন, খুব সতর্ক হয়ে করতে হবে। ব্লসমের মতে এর জন্য সেরা পথ, প্রাকৃতিক উপাদান সমৃদ্ধ কোনও জিনিস। ন্যাচারাল এক্সট্র্যাক্ট থেকে আজকাল নানা প্রসাধনী তৈরি হচ্ছে। নজর দিতে হবে সেগুলোর দিকে। তবে কোনও প্রসাধনী ব্যবহার করার আগে প্যাচ টেস্ট করে অর্থাৎ হাতের কোনও অংশে সেটা সামান্য একটু লাগিয়ে দেখে নেবেন আপনার জন্য সেটা উপযোগী কিনা। 
বাড়িতে হাতের কাছে কিছু সমাধানের কথা জানালেন রূপবিশেষজ্ঞ। 
পোট্যাটো স্লাইস কিংবা পোট্যাটো জুস:  আলু থেকে কয়েকটা স্লাইস করে কেটে নিন অথবা আলু গ্রেট করে তার থেকে রসটা বের করে নিন। স্লাইস কাটলে প্রথমে দু’টি স্লাইস চোখের উপরে রাখুন। পাঁচ মিনিট রেখে আগেরটা বদলে আবার নতুন দু’টি স্লাইস নিন। তারপর মিনিট পাঁচেক পর আবার দু’টি। সব মিলিয়ে মোট ১৫-২০ মিনিট এইভাবে রাখুন। আর যাঁরা পোট্যাটো জুস বের করে রেখেছেন, তাঁরা তাতে চারটে কটন প্যাড ডুবিয়ে রাখুন। ভালো করে ভিজে গেলে প্রথমে দু’টি কটন প্যাড নিন। অতিরিক্ত জুস সেই কটন প্যাড থেকে চেপে বের করে দিন। তারপর দু’চোখে দু’টি লাগিয়ে দিন। ১০ মিনিট রেখে আবার ফ্রেশ দু’টি কটন প্যাড দিয়ে একইভাবে ব্যবহার করুন। আলুর মধ্যে প্রাকৃতিক ব্লিচিং এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান থাকে। এতে চোখের আশপাশে ফোলাভাব, জ্বালাভাব কমে। একটা আরামের অনুভূতি হয়। পাশাপাশি চোখের চারপাশে কালো অংশ হালকা হয়।    
অর্গ্যানিক আমন্ড অয়েল: রাতে শুতে যাওয়ার আগে এক চামচ অর্গ্যানিক আমন্ড অয়েল নিন। দু’হাতের আঙুলের মাথায় কয়েক ফোঁটা তেল নিয়ে চোখের চারপাশে মাসাজ করুন। ১০-১৫ মিনিট মাসাজ করে ঘুমাতে যান। আমন্ড অয়েলে থাকে রেটিনল, ভিটামিন ই এবং ভিটামিন কে। এগুলো ত্বককে আরাম দেয়। জ্বালাভাব কমায় এবং ত্বকের পুষ্টিতে সাহায্য করে।  
গ্রিন টি ব্যাগ: ডার্ক সার্কল কমাতে এর জুড়ি মেলা ভার। দু’টি গ্রিন টি ব্যাগ নিয়ে জলে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখুন। তারপর জল থেকে তুলে দু’টি টি ব্যাগ ফ্রিজে রেখে দিন আধ ঘণ্টা। ঠান্ডা হলে সেই ব্যাগ দু’চোখে ১০-১৫ মিনিট করে রেখে দিন। গ্রিন টি-তে আছে ক্যাফাইন যা ব্লাড ভেসেলে ইনফ্লামেশন কমায়। চোখের নীচের ফোলাভাবও দূর করে। গ্রিন টি-র ছোঁয়ায় চোখের চারপাশের চামড়া নরম হয় এবং তরতাজা থাকে। 
শসার স্লাইস বা জুস: কুচি কুচি করে কেটে শসা...। সে তো আমরা কবে থেকেই জানি! কিন্তু ব্যবহার করা হয় না মোটেই। সেটাই করে দেখুন না একবার। কাজে দেবে ঠিক। দু’টি বা চার টুকরো শসার স্লাইস করে নিন। দু’টি স্লাইস চোখের উপরে রেখে দিন মিনিট দশেক। তারপর আবার অন্য দু’টি স্লাইস একইভাবে রেখে দিন আরও ১০ মিনিট। কেউ চাইলে শসা গ্রেট করে তার রস বের করে নিন। এর মধ্যে চারটি কটন প্যাড ডুবিয়ে দিন। অতিরিক্ত রসটা বের করে দু’টি প্যাড প্রথমে নিয়ে চোখে দিন। সেটাও দশ মিনিট রাখুন। তারপর আবার একইভাবে অন্য কটন প্যাড দু’টি লাগান। শসায় আছে অ্যাস্ট্রিনজেন্ট এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। পাশাপাশি ত্বককে উজ্জ্বল রাখার উপাদানও রয়েছে। চোখের চারপাশের কালো অংশ হালকা করে তুলতে শসা তাই খুবই কার্যকরী। শসা থেকে আরও উপকার হয় ত্বকের। আমাদের রক্তনালী আরও শক্তিশালী হয় এই সব্জির পরশে, তাই চোখের ফোলাভাব দূর হয়।
পর্যাপ্ত ঘুম: ডার্ক সার্কল তাড়ানোর এই সব প্রাকৃতিক উপাদানের পাশাপাশি অবশ্য প্রয়োজন যেটি, সেটি হল ঠিকমতো ঘুম। দিনশেষে বিশ্রাম এবং ঘুম পর্যাপ্ত পরিমাণে না হলে চোখের চারপাশ ফোলা ফোলা লাগবেই। আর চোখের চারপাশের ত্বকেও ক্রমশ কালচে ভাব তৈরি হবে। বাজারচলতি আন্ডারআই জেল বা ক্রিম কখনও ট্রাই করে দেখতেই পারেন, তবে ত্বক-বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে এগবেন। যে ধরনের ক্রিম বা জেল-এ এসেনশিয়াল অয়েল রয়েছে, সে ধরনের প্রোডাক্ট ডার্ক সার্কল এবং ত্বকের কুঁচকে যাওয়া ঠেকাতে পারে। তাছাড়াও লবঙ্গ, জায়ফল, মঞ্জিষ্ঠা, কালোজামের পাতা সমৃদ্ধ ক্রিম ডার্ক সার্কেল তো বটেই, হাইপারপিগমেন্টেশন, বলিরেখা ইত্যাদি সব কিছুকেই নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করতে পারে। 
ঠান্ডা লাগার ধাত রয়েছে যাঁদের, সতর্ক থাকুন তাঁরাও। এই সমস্যা থেকেও ধীরে ধীরে ডার্ক সার্কল তৈরি হয়। নাক বন্ধ থাকা বা অ্যালার্জি হয় যাঁদের, তাঁদের চোখের নীচে ব্লাড সার্কুলেশন বা রক্তপ্রবাহে কিছুটা সমস্যা থাকে। আর এর ফলে ভেতরকার শিরায় সমস্যা থেকে ওই অংশ কালচে হয়ে যায়। একইভাবে অ্যানিমিয়ায় ভোগেন যাঁরা, বা রোদে অতিরিক্ত সময় বাইরে কাটাতে হয় যাঁদের, ঝুঁকি বেশি তাঁদেরও। পুদিনা পাতা, অ্যালোভেরা জেল, গোলাপ জল, নারকেল তেল, টোম্যাটো, পাতিলেবু, আইস কিউব— হাতের কাছে থাকা এইসব উপাদানও বেশ উপযোগী ডার্ক সার্কলের সমস্যায়। এর সঙ্গে যাদের সমস্যা গুরুতর নয়, তাঁরা ফেসিয়াল যোগা, মেডিটেশন এবং পর্যাপ্ত জল খাওয়ার অভ্যাস দিয়ে চোখের কালোভাব দূর করতে পারেন। 
জীবন সমস্যাসঙ্কুল হবেই, মাথা ঠান্ডা রেখে কিছু স্বাস্থ্যকর অভ্যাসকে আপন করে নিলে ডার্ক সার্কল পিছু ছাড়তে পারে। প্রিয় আঁখিতে আপনার জনকে রাখিতে চাইলে এটুকু চেষ্টা তো করতেই হয়, তাই না!  
16Months ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

পারিবারিক অশান্তির অবসানে গৃহ সুখ ও শান্তি বাড়বে। প্রেমের ক্ষেত্রে শুভ। কর্মে উন্নতি। উপার্জন বৃদ্ধি।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.২৬ টাকা৮৪.৩৫ টাকা
পাউন্ড১০৬.৪৬ টাকা১০৯.১২ টাকা
ইউরো৮৯.৭৬ টাকা৯২.২০ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা