বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
চারুপমা
 

মডেল: কৌশাম্বী চক্রবর্তী, দিয়া মুখোপাধ্যায় ও ইন্দ্রাণী পাল, ছবি: অরিজিৎ দত্ত, শুভাশিস পাচাল, পোশাক: রাহুল সর্দার, আয়োজক: মধুরিসা শীল, ব্যবস্থাপনা: রাজ বন্ধন, মেকআপ: মল্লিকা দাস, সুপ্রভা দাস, পম্পা, গ্রাফিক্স : সোমনাথ পাল

ভালোবাসাব মবশুম

কয়েকদিন পরেই মুক্তি পাচ্ছে পরমা নেওটিয়ার প্রথম ছবি ‘মিথ্যে প্রেমের গান’। তার আগে চতুষ্পর্ণীর জন্য ফোটোশ্যুট আর সাজগোজ নিয়ে আড্ডায় ছবির দুই অভিনেতা অনির্বাণ ভট্টাচার্য এবং ইশা সাহা। কথায় অন্বেষা দত্ত।

অভিনয়ের প্রয়োজন বাদ দিয়ে আপনারা কে কতটা আয়নাবিলাসী?

অনির্বাণ: আয়না যদি সামনে থাকে, তাহলে মাঝে মাঝেই আয়নার দিকে চোখ যায়। সেটা কেন যায়, প্রকৃত কারণ কিছু বলতে পারব না। হয়তো বা নিজেকে কেমন দেখাচ্ছে, দেখতে চাই। তার মধ্যে নার্সিসিজম থাকতে পারে। তার মানে যে, পোশাক পরে সেজেগুজে আয়না দেখি, তা নয়। আমি একদম ফ্যাশনেবল নই। সাধারণ জামাকাপড়ই পরি। সেটা আলাদা করে আয়নায় দেখার মতো কিছু থাকে না। আয়নায় মূলত দেখি মুখ। বাড়িতে হয়তো মাঝে মাঝে মুখ ভেঙিয়ে দেখি আয়নায়! কিন্তু অভিনয়ের জন্য নয় (হাসতে হাসতে)। 

ইশা: (আয়নাকে পিছনে রেখে বসে) একদম সময় নেই আয়নার জন্য। আমার বেডরুমে আয়না নেই। খুব সচেতনভাবেই। ঘুম থেকে উঠেই নিজেকে দেখতে হবে, এমন বাতিক আমার নেই। নিজেকে দেখতে ভালো লাগে না। নিজের বড় সমালোচক বলতে পারেন আমাকে। মেকআপ-এর সময় একটু দেখতে বাধ্য হই। শ্যুটিং-এর সময়েও অনেকেই জানে, ‘মিরর আনো, মিরর চাই’ এসব নেই আমার। কিছু সময় এলোমেলো জিনিসটাই ভালো লাগে। ঘেঁটে থাকবে, ন্যাচারাল। নায়িকা হওয়ার পর থেকে এটা বেশি হয়েছে। তবে আয়না দেখার অভ্যাস আমার কোনওকালেই তেমন ছিল না। ‘মেয়েলিপনা’ থেকে একটু দূরেই ছিলাম। টমবয়িশ। আর আয়নার সামনে অভিনয় প্র্যাকটিস করা যায়, এটাও আমি মনে করি না। ফ্লোর থেকেই শেখা যায়। আমি আইনের ছাত্রী ছিলাম। তাতে বলা হতো বই পড়ে নয়, কোর্টরুম থেকে বেশি শেখা যায়। এখানেও তাই। আমি প্রশিক্ষিত অভিনেত্রী নই, ইনস্টিঙ্কটিভ। তাই সামনে কে দাঁড়িয়ে আছে, কেমন সিন— তার উপর নির্ভর করে অভিনয়টা শুরু হয়। আর ফ্যাশনের জন্যও খুব বেশি কিছু করতে চাই না। খুব কুঁড়ে। এখানে যে শাড়ি আর স্নিকার্সে লুকটা আছে, এরকম সাজে আমি খুব স্বচ্ছন্দ! আয়নার সামনে বসা বা বেশি মেকআপে আমি স্বচ্ছন্দ নই।  আড্ডা মারতে গেলে ওভারসাইজড জামাকাপড় গলিয়ে বেরিয়ে পড়ি। সঙ্গে খুব বেশি 
হলে কাজল, মাস্কারা। লিপ বাম। সানস্ক্রিন মাস্ট।

চরিত্রের প্রয়োজনে ছবি বা নাটকে অনেক অ্যাক্সেসরিজ নিতে হয়। বাস্তব জীবনে স্টাইলিশ লুকের জন্য একটা চশমার ফ্রেম কতটা গুরুত্বপূর্ণ?

অনির্বাণ: আমি অনেকদিন চশমা পরছি। ২০১৯ সাল থেকে। দুটো চোখে অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছিল। তারপর থেকে চোখের ডাক্তারই আমাকে বলেন, তোমার পাওয়ার নেই, কিন্তু চোখটা সাবধানে রাখতে হবে। তাই পাওয়ারলেস প্রোটেক্টর গ্লাসেস পরা দরকার। মানে একেবারে ধর্মতলার ফুটপাত থেকে কিনলে হবে না। একটু ভালো দোকান থেকে পরতে হবে। তারপর যা হয়, অভিনেতা...শো-বিজ-এ আছি। ফ্যাশন কিছুটা তো মেনটেন করতেই হয়। আমায় অ্যাভিয়েটর শেপটা মানায় বলে মনে হয় (নিজেরটা দেখিয়ে)। আবার রেট্রো স্কোয়্যার শেপ-ও ভালো লাগে। সানগ্লাসেসও ভালো লাগে। কিন্তু ওই রেট্রোটাই পছন্দ। তবে সবটাই চোখের ক্ষতি না করে।

ইশা: চশমা আছে। তবে সবসময় পরার মতো নয়। আর আমি ভীষণ চুজি এ ব্যাপারে। এবার নিউ ইয়ারেই একটা ফ্রেম গিফট পেয়েছি। ব্ল্যাক মোটা রেট্রো ফ্রেম আমারও খুব ভালো লাগে। তবে মুখটা ছোট বলে মানায় না। চশমা খুব ভালো একটা অ্যাক্সেসরি। চরিত্রকে অবশ্যই একটা অন্য মাত্রা দিতে পারে। দুর্ভাগ্যবশত শুধু ‘গোরা’ সিরিজ ছাড়া আমায় কেউ চশমা দিয়ে ব্যবহার করেনি। কেন, আমি জানি না! যে কোনও শেপের চশমা পরলে মানিয়ে যায় আমার মুখে। 

ভাবনার পোশাক এবং নির্ভাবনার পোশাকে ভাগাভাগি আছে?  

অনির্বাণ: একেবারেই আছে। ছোটবেলা থেকেই আছে— যেমন বিয়েবাড়ির পোশাক (হেসে)! এখন আবার যাওয়ার নানারকম জায়গা হয়েছে। পার্টিতে খুব যাই, তা নয়। তবে কিছু কিছু তো অ্যাটেন্ড করতেই হয়। আলাদা করে পার্টিওয়্যার আছে আমার, এমন নয়। বেসিক ব্লেজার আছে। আমার মনে হয়, খুব সাধারণ বেশভূষাতেই একটা ব্লেজার চড়িয়ে নিলে, একটা ভালো জুতো পরে নিলে বেশ সাজগোজ হয়ে গেল। ওর বেশি কিছু আমি পরি না। আর আমাদের গরমের জায়গা। তাই আরামের পোশাক বলতে ফুল শার্ট, কনুই পর্যন্ত হাতা গুটিয়ে পরতে ভালোবাসি। সঙ্গে জিনস। পায়ে জুতো। জুতো সারাবছরই পরি। কারণ পা ভালো থাকে। আর থিয়েটার পারফরম্যান্সে পা ভালো রাখাটা দরকারি। তবে এসবের ব্র্যান্ড নিয়ে কোনও মাথাব্যথা নেই। 

ইশা: ভাবনার পোশাক বলতে গেলে শাড়ি। কারণ সঙ্গে ভালো জুয়েলারি লাগবে। হেয়ারটা সুন্দর করে রাখতে হবে। আর নির্ভাবনার হচ্ছে একটা জিনস আর টপ। যেভাবে আছি, সেভাবে বেরিয়ে গেলাম। শীতে কালারফুল বড় সোয়েটার পরতে ভালো লাগে। সলিড, প্যাস্টেল 
শেডস পছন্দ। 

সরস্বতী পুজো চলে গেল। প্রেমের দিন আসছে। এই শ্যুটে হলুদ পাঞ্জাবি। সব মিলে বাসন্তী রংমাহাত্ম্য কেমন?

অনির্বাণ: রং হিসেবে খুব প্রিয় হলুদ। সরস্বতী পুজোর সময়টার সঙ্গে, ছোটবেলার স্মৃতির সঙ্গে খুবই জড়িয়ে বাসন্তী রং। হলুদ গাঁদা খুব পছন্দ। দেখতে ভালো লাগে। তবে হলুদ খুব উজ্জ্বল রং। নিজে সবসময় পরি না। কারণ ব্রাইট কালার নয়, আমার পছন্দ গ্রে শেডস বা ডার্ক ব্লু, ব্ল্যাক। কিন্তু হলুদ রং কেউ পরেছে দেখলে 
ভালো লাগে। 

ইশা: বাসন্তী রংমাহাত্ম্য এখন হয়তো অনেকটাই ফিকে। কারণ প্রতি বছর এক রং দেখে একটা একঘেয়েমি এসেছে। এটা বললে অনেকে রে রে করে তেড়ে আসতে পারেন। কিন্তু বাসন্তী বা অন্য হলুদ শেডস প্রতি বছর এত পরা হয়, যে এবার হোয়াইট শাড়ি আর রেড ব্লাউজ আমার সঙ্গী ছিল। অনেক সরস্বতী পুজো পেরিয়ে এসে এখন পছন্দ পাল্টাচ্ছে বলা যায়। আগে মায়ের শাড়ি পরতাম। একবার ক্লাস এইটে ব্লু জমিতে হোয়াইট ববি প্রিন্ট জর্জেট শাড়ি নন ম্যাচিং ব্লাউজের সঙ্গে পরেছিলাম। মায়ের শাড়ি। সেই একটা এলোমেলো ব্যাপার। এখন চাইলেও পারব না। কিন্তু ওই বয়সটার একটা সারল্য ছিল। এখন সেটাও হয়তো সেভাবে নেই। এখনকার কিশোরীদের কাছে শিখতে হয় কীভাবে মেকআপ করা যায়, সোশ্যাল মিডিয়ায় সেসব পোস্ট করতে হয়! কিশোরীবেলাটা বোধহয় এসবের 
জন্য নয়। 

আপনাদের ছবিটা তো প্রেম নিয়েই।  এই সূত্রেই জেনে নিই প্রেমিকা কেমন হলে ভালো লাগে? অব্যর্থ প্রেমের জন্য প্রেমিকের চেহারাই বা কেমন হবে?
 
অনির্বাণ: আমি সরস্বতী পুজোর সময় কারও প্রেমে পড়িনি। কাউকে ধাওয়াও করিনি! কারণ আমরা ক্লাবে পুজো করতাম। সেটা নিয়েই ব্যস্ত থাকতাম। এক সপ্তাহ কেটে যেত ওতেই। আমি প্রেমটা ‘অফ সিজনে’ করেছি। সরস্বতী পুজোর সঙ্গে প্রেম জড়িয়ে ফেলা নতুন ট্রেন্ড। আমাদের সময় এসব ছিল না। আর প্রেমিকার জন্য আলাদা করে কিছু ফ্যাসিনেশন নেই। শুধু চোখে একটু কাজল থাকতে হবে।

ইশা: প্রেমিকের ক্ষেত্রে ক্লিন শেভন স্যুটেড বুটেড লুকটা ভালো লাগে আমার। আর প্রেমিকার জন্য সবসময় বলব শাড়ি, যেমন ব্ল্যাক শিফন। 

অভিনয়ে থাকতে গেলে ডায়েট বড় বালাই। কোনও খাবার ছেড়ে দেওয়ার দুঃখ আছে?
 
অনির্বাণ: আমি খুব একটা ফুডি নই। বিশেষ কিছু খাবার ছেড়ে থাকতে অসুবিধা হয় না । বরং একগাদা নানা খাবার খেতে পছন্দ করি না। তাই ছেড়ে দেওয়ার কোনও দুঃখ আমার নেই!  

ইশা: বালাই বলে বালাই! তবে ছেড়ে কিছুই দিইনি। সব খাই। মিষ্টি ভীষণ ভালোবাসি। সেটা ব্যালান্স করতে হয়। কারণ আমাদের জন্য ঠিক নয়। আর ভাজাভুজিটাও কম খাই। শ্যুটে থাকলে চা-কফি বেশি খাওয়া হয়। তাতে চিনি একদম খাই না। ইচ্ছে করলে সারাদিন চিনি না খেয়ে সন্ধেয় হয়তো মিষ্টি খেলাম। ওয়ার্কআউট করি। টানা শ্যুট থাকলে সেটাও হয় না। খাওয়ারও মরশুম থাকে। যেমন ডিসেম্বর। ওই সময় কেউ কিছু না খেয়ে থাকতে পারে নাকি! 

শীতে বা সারাবছর ইশার রূপরুটিন আছে কিছু?

ইশা: না আমার সেনসিটিভ স্কিন। কিছুই সহ্য হয় না। যদি ভাবিও একটু বেসন লাগাব, চলবে না! কিছুই করতে পারি না তাই। তবে যত ক্লান্তই থাকি, ঘুমানোর আগে মেকআপ ভালো করে তুলতেই হবে। শীতকালে বেশি করে ময়শ্চারাইজার লাগাই।
                   গ্রাফিক্স: সোমনাথ পাল

4th     February,   2023
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ