খরচের চাপ এত বেশি থাকবে সে সঞ্চয় তেমন একটা হবে না। কর্মক্ষেত্রে নানান সমস্যা দেখা ... বিশদ
ইতিমধ্যে বিশ্বজুড়ে এক নতুন ভাইরাসের উপদ্রবে সবাই শঙ্কিত। এই শঙ্কার মাঝে কোথাও যেন ধ্বনিত হল: ‘এবার তো যৌবনের কাছে মেনেছ হার মেনেছ?’
হার যে তাকে মানতেই হবে। তাই তো নতুন ভাবে নতুন ছন্দে জেগে উঠেছে বাংলার মোহময় প্রকৃতি। প্রস্তুতি নিচ্ছে এক নতুন বসন্তোৎসবের। ক্রমে সেই বার্তা দিক থেকে দিগন্তে ধাবমান ‘জীর্ণ পুরাতন যাক ভেসে যাক।’
রাঢ় বাংলায় পথে প্রান্তরে পলাশের রঙে সেজে উঠেছে আমাদের গ্রাম। আর... আমাদের এই গ্রামের নামটি চন্দনী। আমরা সদলবলে এবার বসন্তোৎসবে চলেছি শান্তিনিকেতনে। সেখান থেকে আমাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে রাইন, অদ্রিজা, রুবায়াত এবং রাজন্য। এরা কেউ পড়ে পাঠভবনে, কেউ শিশুতীর্থে, কেউ নব নালন্দায়। আমরাও ঠিক করেছি সবাই মিলে এক জায়গায় হয়ে এবারের উৎসবে মুখরিত হব। কৃত্তিকা বলেই রেখেছে থাকবার কোনও অসুবিধা হবে না ওদের বাড়িতে।
অদ্রিজা বলল, ‘প্রত্যেক বছরই পলাশ ফুল ছিঁড়ে মাথায় গুঁজে গয়না পরে উৎসবে অংশ নিতে বারণ করা হয়।’
তবু কেন এক শ্রেণীর দর্শক তা মানেন না জানি না। পলাশ তার ডাল-পালায় যেভাবে রাঙায় তা কি মানব শরীরে ‘মানায়? রাইন বলল। ঠিক বলেছ রাইন দিদি। কৃত্তিকার উক্তি।
দূর-দূরান্ত থেকে কত যে দর্শক এসেছেন তার শেষ নেই। এরই মাঝে আশ্রম বিদ্যালয়ের ছেলেমেয়েরা কাঠি নাচ নাচতে নাচতে গান ধরে ‘ওরে ভাই ফাগুন লেগেছে বনে বনে’। আবার অন্য প্রান্তে অন্য একদল গান শুরু করে ‘নীল দিগন্তে ওই ফুলের আগুন লাগল।’
রাজন্য তো বলেই ফেলল, ‘প্রত্যেক বছর এত ভিড় হয় যে আমরা উৎসব প্রাঙ্গণে পৌঁছতেই পারি না।’ আমাদের মধ্যে থেকে তখন শুভ্রনীল বলল, ‘আমরা না হয় সবাই মিলে কৃত্তিকাদের বাগান বাড়িতে বসন্তোৎসবে মেতে উঠব।’ রুবায়াত হাতে গিটার নিয়ে কী যেন একটা সুর ধরেছিল। আমরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই গোগোল গান শুরু করে, ‘ঝরো ঝরো ঝরো ঝরো ঝরে রঙের ঝরনা।...’
চাঁদনি রাতের আলোয় কৃত্তিকাদের বাড়ির বাগানে আমাদের মঞ্চ তৈরির কাজ শেষ। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে, মানে বৃষ্টি যদি না হয় তাহলে এই মঞ্চেই
আমাদের ‘হুজুগ সংঘে’র অনুষ্ঠান হবে। শান্তিনিকেতনে বসন্তোৎসবের মূল অনুষ্ঠানের পরে এই অনুষ্ঠানের পরিবেশনায় একান্তভাবেই আমাদের টিম লিডার রাজন্য।
আমি ছোটবেলা থেকে দেখে আসছি আমাদের ছেলেমেয়ের দল পাঠভবন প্রাঙ্গণে প্রশিক্ষণ করতে করতে কেমন করে যেন হারিয়ে যেতাম ‘আকাশ আমায় ভরল আলোয়, আকাশ আমি ভরব গানে’-র ছন্দে।’ আমিও মোর বীণা ওঠে কোন সুরে বাজি’র তালে তালে এবার নাচের অনুষ্ঠানে যাব। অদ্রিজা বলল।
অঞ্জনা নদী তীরের চন্দনী গাঁয়ে আমরা সবাই তোমাদের অনুষ্ঠান দেখবে বলেই তো এসেছি। তার আগে আজকের এই সন্ধ্যায় চলো না আমাদের ‘হুজুগ সংঘের’ মঞ্চে কিছু একটা করি আমরা। অমনি আমাদের মাঝে এসে হাজির হল শামীম। সে আবার মুখে মুখে ছড়া বানায়। বলতে শুরু করে—
ঘাস-পাতা-ফুল দিয়ে মঞ্চ হলো।
পর্দাটা দশ ফুট ঊর্ধ্বে তোলো।
ফেসবুক খুলে দেখো করবো শেয়ার
সব্বাই মিলে হবে কালমৃগয়া।
ছবি: সংশ্লিষ্ট সংস্থার সৌজন্যে