উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে বাধার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হতে হবে। কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ যোগ। ব্যবসায় যুক্ত হলে ... বিশদ
বর্ষার উপযুক্ত স্টাইল সম্পর্কে জানালেন ফ্যাশন এক্সপার্ট রিয়া কাপুর। অনিল কাপুরের এই কন্যাটি ফ্যাশন দুনিয়ায় নিজস্ব ছাপ রেখেছেন। বলিউডে তো বটেই এমনকি আন্তর্জাতিক স্তরেও তাঁর ফ্যাশন ডিজাইনিং ও স্টাইল স্টেটমেন্টের কদর করা হয়। তাঁর মতে, ‘ফ্যাশন নিয়ে একটু আধটু এক্সপেরিমেন্ট না করতে পারলে সাজের সঠিক মূল্যায়ন হয় না। আধুনিক ট্রেন্ডের পিছনে না দৌড়ে বরং নিজস্ব একটা স্টাইল তৈরি করা ভালো। তাতে সাজ আরও উল্লেখযোগ্য হয়ে ওঠে।’ এই প্রসঙ্গে বর্ষার উপযুক্ত কিছু ফ্যাশন টিপস দিলেন রিয়া কাপুর।
পোশাকের এ টু জেড
বর্ষায় হালকা পোশাক পরাই ভালো। সুতি, লিনেন অথবা সিল্কের ফ্যাব্রিক এই ঋতুতে ব্যবহার করুন। সিন্থেটিক পোশাক খুব একটা ভালো নয়। সুতির জামাকাপড় একটু মেনটেন করতে পারলে যে কোনও ঋতুতেই আদর্শ।
বর্ষায় ঢিলে জামাকাপড় পরুন। কাফতান স্টাইলের গাউন ফ্রকের সঙ্গে সুদৃশ্য লেদার বেল্ট লাগাতে পারেন। চলতে পারে ফ্লেয়ার স্টাইল শর্ট ড্রেস। আবার লুজ ফিটিং টপের সঙ্গে ম্যাচ করে শাড়িও পরা যায়।
সুতির পোশাকের সঙ্গে একটু কেতাদুরস্ত রেনকোট ব্যবহার করুন। তাতে পোশাক নষ্ট হবে না, রোজ কাচার ঝামেলাও থাকবে না।
বর্ষায় শাড়ি বা গাউন ফ্রকের বদলে লুজ ট্রাউজার বা শর্ট ড্রেস বেশি উপযোগী। এই ধরনের পোশাকের সঙ্গে আধুনিক কায়দার লং জ্যাকেট ব্যবহার করলে ভালো লাগবে। সিন্থেটিক লেদার বা স্যাটিন-সিল্ক লুকের জ্যাকেট সহজেই ধুয়ে ফেলা যায়।
বর্ষার ঘন কালো আবহাওয়াকে টেক্কা দিতে চাই উজ্জ্বল রং। তাই পোশাক থেকে মেক আপ, সবই রঙিন হওয়া চাই। বর্ষায় বাছুন ফ্লোরাল প্রিন্ট। সাদার সঙ্গে গাঢ় লালের কম্বিনেশন অথবা হলুদ ও উজ্জ্বল সবুজের মিলমিশ, নয়তো ঘন নীলের সঙ্গে কমলা, হলুদ ও আকাশির জংলা ফুলেল প্রিন্ট বর্ষার পোশাকে অন্য মাত্রা যোগ করবে।
রেনকোট বা লং সিন্থেটিক কোট হবে একরঙা অথবা স্ট্রাইপড। জিওমেট্রিক শেপও থাকতে পারে। তবে তা যেন চোখে পড়ার মতো গাঢ় ও উজ্জ্বল রঙের হয়, সেদিকে খেয়াল রাখা জরুরি।
মানানসই ব্যাগ, জুতো, রেনকোট
শুধু তো আর পোশাক বাছলেই চলবে না, চাই মানানসই ব্যাগ, জুতো, ছাতা ইত্যাদিও। রিয়া কাপুরের মতে, ব্যাগ এবং জুতো সাজের একটি বিশেষ অংশ। আমরা পোশাক আর মেকআপের দিকে মন দিতে গিয়ে অন্য দু’টোর কথা ভুলেই যাই। তাতে পোশাকের সৌন্দর্য অনেকটাই মাটি হয়। তাই পোশাক বাছার পাশাপাশি ব্যাগ ও জুতোর দিকেও নজর দিন।
বর্ষার জন্য রংচঙে নাইলনের ব্যাগ সবচেয়ে উপযুক্ত। এমন ব্যাগ যা অন্যান্য সময় ব্যবহার করা যায় না, এই সময় অনায়াসেই তা করা যায়। এই ঋতুতে স্বচ্ছ ব্যাগও ব্যবহার করতে পারেন। তবে অনেকেই প্রাইভেসির জন্য এমন ব্যাগ নিতে চান না। তাঁদের বলি বাইরেটা স্বচ্ছ আর ভিতরে রঙিন কাপড় দেওয়া উজ্জ্বল ব্যাগ নিন বর্ষায়। পোশাকের সঙ্গে ম্যাচিং ব্যাগ নিতে পারেন অথবা কনট্রাস্ট করেও নেওয়া যায়। নাইলনের ব্যাগ ভিজে গেলেও সমস্যা নেই, ভিতরের জিনিসপত্র সুরক্ষিত থাকবে।
জুতোর ক্ষেত্রে বর্ষায় সবচেয়ে ভালো স্যান্ডেল। স্ট্র্যাপ দেওয়া রঙিন স্যান্ডেল পরুন পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে। একটু বেশি কায়দা করতে চাইলে লং রবার বুট পরতে পারেন। বিভিন্ন রঙে পাবেন এই বুট। তবে শর্ট ড্রেসের সঙ্গেই এই বুট মানানসই। শাড়ি বা গাউন পরলে স্যান্ডেলই ভালো। বর্ষার কাদামাখা রাস্তার জন্য হিল কখনওই উপযুক্ত নয়। ফলে অন্যান্য ঋতুতে হিল পরলেও বর্ষায় সাধারণ ফ্ল্যাট জুতো পরুনা।
বর্ষা মানেই বৃষ্টি, আর বৃষ্টি মানেই ছাতা বা রেনকোট। ফ্যাশনেবল সাজ পোশাকের সঙ্গে চাই স্টাইলিশ ছাতা আর রেনকোট। ছাতায় ফ্রিল, লেস ইত্যাদি থাকলে তা আধুনিক সাজ পোশাকের সঙ্গে মানানসই হবে। তবে খুব বড় ছাতা ব্যবহার করবেন না। বরং এমন ছাতা বাছুন যা সহজেই ব্যাগে ঢোকানো যায়। রইল বাকি রেনকোট। রঙিন রেনকোট ব্যবহার করুন বর্ষায়। এখন বিভিন্ন শেপ ও স্টাইলের রেনকোট পাওয়া যাচ্ছে বাজারে। কোনওটায় ট্রেঞ্চ কোটের কাট কোনওটা বা লং কোটের আকারে তৈরি। তেমনই রেনকোট রাখুন সঙ্গে। শাড়ির সঙ্গেও এই ধরনের রেনকোট বেশ মানানসই।
বর্ষায় ত্বক ও চুলের যত্ন নিন
বর্ষার জন্য সাধারণ কিছু স্কিন ও হেয়ার কেয়ার টিপস দিলেন ল্যাকমে বিউটি এক্সপার্ট ডোনাল্ড সিমরক ও হেনা দলভি।
বর্ষায় বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকে বলে আমাদের ত্বক অতিরিক্ত তৈলাক্ত হয়ে ওঠে। ফলে এই ঋতুতে ত্বক ময়েশ্চারাইজ করার জন্য চাই অ্যালোভেরা অ্যাকোয়া জেল সলিউশন। এই লোশন ওয়াটার বেসড বলেই তা বর্ষায় ভালো কাজ করে। এই জেল দিনে দু’বার ব্যবহার করলে শুষ্ক ত্বকের সমস্যা কেটে যাবে এবং তা তৈলাক্ত ও কোমল থাকবে।
বর্ষায় আকাশ মেঘে ঢাকা থাকলেও সানস্ক্রিন লোশন বাদ দেওয়া যায় না। কিন্তু সাধারণ সান ব্লক ক্রিম ব্যবহার না করে এই সময় আল্ট্রা ম্যাট সানস্ক্রিন জেল ব্যবহার করুন। বর্ষায় এমন কসমেটিকস ব্যবহার করবেন না, যা অতিরিক্ত ক্রিমযুক্ত।
প্রাকৃতিক পদার্থ দিয়ে তৈরি কসমেটিকস ব্যবহার করাই এই সময় সবচেয়ে ভালো। যেমন মধু, অ্যালোভেরা, লেবু ইত্যাদি যুক্ত ফেস প্যাক বা জেল লোশন লাগালে ত্বক উজ্জ্বল থাকবে।
লিপস্টিক এবং আই মেকআপের ক্ষেত্রেও ম্যাট ফিনিশের কসমেটিকস ব্যবহার করুন। ফাউন্ডেশন লাগাতে চাইলে লাইট ওয়াটার বেসড ফাউন্ডেশন লাগান। আরও ভালো হয় যদি ফাউন্ডেশনের বদলে ফেস পাউডার বর্ষায় ব্যবহার করেন। ওয়াটারপ্রুফ মেকআপ এই ঋতুর জন্য উপযুক্ত।
বৃষ্টির জল চুলের পক্ষে একেবারেই ভালো নয়। তাই বর্ষাকালে বৃষ্টিতে ভিজে বাড়ি ফিরলে অবশ্যই হালকা গরম জলে চুল ধুয়ে ফেলবেন। মাইল্ড শ্যাম্পু লাগাতে পারেন। নয়তো ভালো হেয়ার টনিক দিয়ে স্ক্যাল্প মাসাজ করে নিন। তারপর চুল একটু শুকিয়ে গেলে তা ধুয়ে ফেলুন। তাতেও চুল ভালো থাকবে।
মনে রাখবেন, সব সাজেরই শেষ কথা ফিল গুড ফ্যাক্টর। অর্থাৎ আপনি যেমন সাজলেন, তাতে নিজে স্বচ্ছন্দ কি না, সেদিকে খেয়াল রাখা দরকার।
শুধুমাত্র ট্রেন্ড বা আধুনিকতা অনুযায়ী সাজবেন না। বরং যেমনটা আপনাকে মানায় তেমনই সাজুন। তাহলেই দেখবেন ভিড়ের মাঝেও আপনি হয়ে উঠেছেন অনন্যা।