পিতার স্বাস্থ্যহানী হতে পারে। আর্থিক ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় অর্থের অভাব হবে না। পঠন-পাঠনে পরিশ্রমী হলে সফলতা ... বিশদ
‘এই আকাশে আমার মুক্তি আলোয় আলোয়...’
গানটা গাইতে গাইতে ঘরে ঢুকল রণজয়। মেঘা তখন দীপাবলির প্রদীপ সাজাতে ব্যস্ত। মোমের ছাঁচ বসানো প্রদীপ পছন্দ নয় মেঘার। সেই পুরনো দিনের মতো মাটির প্রদীপ কিনে রং তুলির ছোঁয়ায় সাজিয়ে তোলে মেঘা। সারাটা দিন সলতে পাকায়, তেল দিয়ে প্রস্তুত করে মাটির প্রদীপকে। আকাশের আলো ম্লান হয়ে এলে একে একে প্রদীপ বসায় বারান্দায়, ছাদের পাঁচিলে, ঠাকুরঘরের সিংহাসনের সামনে। রণজয় অনেকবার বলেছে মেঘাকে, এতো পরিশ্রমের প্রয়োজন কী, রেডিমেড প্রদীপই যখন বাজারে পাওয়া যায়?
মেঘার বক্তব্য, বছরে এই একটা দিনই তো প্রদীপ সাজাই। এইটুকু সময় না হয় আলোর জন্য দিলাম।
আলোর দিনের জন্য মেঘার সাজ চাই ঝলমলে। আজ তিনরকম যুগল সাজে সেজেছে দুজনে। কোন সাজটায় আপনাদের মানাবে তা বেছে নেওয়ার ভার রইল আপনাদেরই ওপর— মুচকি হেসে মন্তব্য রণজয়ের।
ধুতি-পাঞ্জাবিতে গুজরাতি সিল্ক
কালীপুজোর দিন একেবারে বাঙালিবাবুর মতো সাজতে চাইলে অবশ্যই হাত বাড়াতে হবে ধুতি-পাঞ্জাবিতে। সাইডে বাটন, গোল গলা এমব্রয়ডারি করা র-সিল্কের মেরুন পাঞ্জাবি আর ধুতির যুগলবন্দিতে খুব সুন্দর দেখাচ্ছে রণজয়কে। ধুতি-পাঞ্জাবি সেটটি ‘শ্রীগোপাল পাঞ্জাবি মহল’ থেকে নেওয়া। জানা গেল, এবার সাইড বাটন গোল গলা পাঞ্জাবিই ট্রেন্ডে রয়েছে। বনেদিয়ানার সঙ্গে আধুনিক এমব্রয়ডারির মিক্স অ্যান্ড ম্যাচে তৈরি হচ্ছে পাঞ্জাবি। ধুতিতে সিল্ক এবং তাঁত দুইই চলছে। তবে বাংলাদেশি তাঁতে গোল্ড প্রিন্ট ও পাঞ্জাবির রঙে ব্লক প্রিন্টও চাহিদায় রয়েছে। ভাইফোঁটার দিন ক্যাজুয়ালি পরার জন্য কটনের নানারকম উইভের পাঞ্জাবি এসেছে।
মেঘার পছন্দ পিওর বিষ্ণুপুরি সিল্কে গুজরাতি কারুকাজ করা ট্র্যাডিশনাল শাড়ি। পাড়ের ধারে মেরুন স্যাটিন পাইপিং আর হাতের কাজের গুজরাতি এমব্রয়ডারি শাড়িটিতে অন্য মাত্রা যোগ করেছে। এটি ‘শিল্পীনিকেতন’ থেকে নেওয়া। ডিজাইনার জয়শ্রী বসু জানালেন, দেওয়ালি, ভাইফোঁটা তো বটেই সামনের বিয়ের মরশুমেও সিল্কে গুজরাতি কাজ করা শাড়ির খুব চাহিদা হবে। ইয়াং জেনারেশন পিওর হ্যান্ড ওয়ার্ক পছন্দ করছেন। গুজরাতির সঙ্গে কাশ্মীরি, আড়ি ও কাঁথাকাজ করা সিল্ক তসরেরও ডিমান্ড রয়েছে।
চান্দেরি-সিল্ক ও চুড়িদার-পাঞ্জাবি
কালীপুজোর রাতে প্রদীপ সাজানোর সময় পরার জন্য মেঘা বেছে নিয়েছে একটি এক্সক্লুসিভ চান্দেরি-সিল্ক। গোল্ডেন ইয়োলো জমিনের চান্দেরির চওড়া পাড় রানিরঙা সিল্কের। শাড়িটি ‘দশভুজা’ থেকে নেওয়া। ডিজাইনার ডালিয়া বি মিত্র জানালেন, কম রেঞ্জে ডিজাইনার শাড়ি তৈরি করেন তিনি। কারণ আজকাল সবাই চান দুই-আড়াই হাজার রেঞ্জের শাড়ি, অথচ দেখতে হবে অভিনব। তাই নানান মেটিরিয়াল মিলিয়ে মিশিয়ে নতুন ধরনের শাড়ি উপহার দিতে চান তিনি।
রণজয়ের পছন্দ ডুপিয়ান সিল্কের পাঞ্জাবি আর চুড়িদার সেট। পিঙ্ক আর ব্লু কম্বিনেশনে তৈরি এই পোশাকটি ডিজাইনার তপন দাসের তৈরি। তপন জানালেন, আগে যে ধরনের রং ছেলেরা মেয়েলি বলে সরিয়ে রাখতেন এখন তাকেই বেশি আপন করে নিচ্ছেন। পিঙ্ক, রেড, রানি, ম্যাজেন্টা, মেরুন ইত্যাদি রঙের পাঞ্জাবির চাহিদা সব থেকে বেশি।
নেট-সিল্ক ও পাজামা-পাঞ্জাবি
নীচের দিকের ছবিতে মেঘা পরেছেন নেটে এমব্রয়ডারি করা পাড় আর আঁচলের সিল্ক শাড়ি। লাল হলুদ কম্বিনেশন সত্যিই নজরকাড়া। শাড়িটি পরে চলে যেতে পারেন দেওয়ালি পার্টিতে। ম্যাচ করে রণজয় পরেছেন হলুদ পাঞ্জাবি। লাল সুতোর এমব্রয়ডারিতে পাঞ্জাবিটি বেশ গর্জিয়াস। শাড়ি ও পাঞ্জাবি ‘স্বস্তিকা’ বুটিকের দীপাবলি কালেকশন থেকে নেওয়া। ডিজাইনার মালা চক্রবর্তী জানালেন, সামনেই বিয়ের সিজন আসছে। তাই এই ধরনের ডুয়েট সেটে মন দিয়েছেন তিনি।