পিতার স্বাস্থ্যহানী হতে পারে। আর্থিক ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় অর্থের অভাব হবে না। পঠন-পাঠনে পরিশ্রমী হলে সফলতা ... বিশদ
যিনি আচার্য্য, তিনি প্রতিটি বিষয় স্বয়ং আচরণপূর্বক জগৎকে শিক্ষা দেন। উপরে ত্যাগ ও কঠোরতার যে আদর্শের কথা বলা হইল, আচার্য্যদেব স্বয়ং আবাল্য সেই আদর্শের প্রতিমূর্ত্তি ছিলেন। তাঁহার দিব্য জীবনের শত শত ঘটনার মধ্য দিয়া তাহা লক্ষ্য করা যাইত। তিনি বলিতেন—“সরু চাউল মোটা চাউল কাহাকে বলে জীবনে কখনো জানিতাম না; তাহা তোরাই আমাকে শিখাইয়াছিস।”
একটি ঘটনা। এক মাঘী পূর্ণিমা উৎসবের পর সমুদয় সঙ্ঘসন্তানকে নিয়া আচার্য্যদেব কলিকাতা আসিয়াছেন। তিনি নিজ বিশ্রাম-কক্ষে কয়েকজন সঙ্ঘসন্তান কর্তৃক পরিবৃত হইয়া উপবিষ্ট। এমন সময় জনৈক সেবক আসিয়া বলিল—“উপরে পাকের জন্য ডাল আনিতে হইবে; পয়সা দরকার।” আচার্য্যদেব গম্ভীর ভাবে উত্তর দিলেন—“আমি কি ডাল খাই? ভারতবর্ষের কয়জন লোক একসঙ্গে ডাল-তরকারী খাইতে পায়? ডাল লাগিবে না। তরকারী যাহা আছে তাহাতেই আজ চলিয়া যাইবে। এই গরীব দেশে ডাল-তরকারী একসঙ্গে খাওয়া পাপ।”
আচার্য্যদেবের জীবন কত অনাড়ম্বর ছিল এবং কোটী কোটী আর্ত্ত, বিপন্ন, দারিদ্র্যক্লিষ্ট নরনারীর জন্য তিনি কি গভীর বেদনা অনুভব করিতেন, তাহারই একটি বাস্তব চিত্র উক্ত ক্ষুদ্র ঘটনা দুইটির মধ্যে সুস্পষ্ট।
আচার্য্যদেবের স্ব-মুখের উক্তি—“আমি তোমাদের সব জানিতে, শুনিতে ও বুঝিতে পারি। এখানে কেহ চালাকী, চাতুরী করিতে পারে না।” সর্বজ্ঞ আচার্য্যদেবের এই উক্তি যে কত সত্য, তাহা তাঁহার আশ্রিত সন্তানগণ নানা ঘটনার মধ্য দিয়া প্রতিনিয়ত অনুভব করিতেন। যাঁহারা তাঁহার মন্ত্রদীক্ষিত শিষ্য নহেন, অথচ নানা কর্মসূত্রে তাঁহার সহিত যুক্ত ছিলেন, অথবা সাময়িক উপদেশপ্রার্থী বা দর্শনাকাঙ্ক্ষী হইয়া যাঁহারা তাঁহার সান্নিধ্যে আসিতেন, তাঁহারাও তাঁহার অলৌকিক যোগবিভূতি দর্শনে আশ্চর্য্যন্বিত।
স্বামী নির্ম্মলানন্দের ‘শ্রীশ্রীপ্রণবানন্দের শত রূপে, শত মুখে’ থেকে