হঠাৎ নেওয়া সিদ্ধান্তে বিপদে পড়তে পারেন। চলচিত্র ও যাত্রা শিল্পী, পরিচালকদের শুভ দিন। ধনাগম হবে। ... বিশদ
কেন্দ্রের দেওয়া তথ্যই বলছে, ২০১৮-১৯ সালের অর্থবর্ষে ভর্তুকি বাবদ কেন্দ্র খরচ করেছিল ৩৭ হাজার ২০৯ কোটি টাকা। ২০২০-২১ এর অর্থবর্ষে সেটাই নেমে হয়েছে ১১ হাজার ৮৯৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ তিনবছরে ভর্তুকির অঙ্ক কমেছে ২৫ হাজার কোটি টাকার বেশি। সন্দেহ নেই, ভর্তুকির ফাঁকি দেওয়া এই টাকা আয় হিসাবে ঢুকেছে কেন্দ্রীয় কোষাগারে। কিন্তু এটা মুদ্রার এক পিঠ। অন্য পিঠে গ্যাসের ‘গিভ ইট আপ’ প্রকল্প থেকে পাঁচবছরে প্রায় ৫৮ হাজার কোটি টাকা বাঁচিয়ে তা কোষাগারে ঢেলেছে মোদি সরকার। ‘গিভ ইট আপ’ প্রকল্পটি কী? কোনও ব্যক্তি গ্যাসে ভর্তুকি না নিয়ে পুরোদামে তা কিনতে পারেন। সেক্ষেত্রে তাঁদের ভর্তুকির টাকা গরিব মানুষকে গ্যাস সংযোগ দেওয়ার কাজে ব্যবহার করা হবে। হিসাব বলছে, দেশের গরিব মানুষের স্বার্থে মোদির এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে ১ কোটি ৮ লক্ষ সহৃদয় গ্রাহক ভর্তুকি ছেড়ে দিয়েছেন। পাশাপাশি যাঁদের পারিবারিক আয় বছরে ১০ লক্ষ টাকা, ভর্তুকি থেকে তাঁদের নাম বাদ দিয়েছে কেন্দ্র। কেন্দ্রের তথ্যই বলছে, ‘গিভ ইট আপ’ প্রকল্পে ভর্তুকির টাকা বাঁচিয়ে ২০১৫-১৬ থেকে ২০২০-২১ সালের মধ্যে ৫৮ হাজার কোটি টাকা আয় করেছে দেশের সরকার। অথচ উজ্জ্বলা যোজনায় বিনামূল্যে গ্যাস সংযোগ মিললেও সিলিন্ডার কিনতে প্রায় হাজার টাকা খরচ হচ্ছে গরিবের। এই সামর্থ্য না-থাকায় অনেকেই গ্যাস বাদ দিয়ে ফের কাঠের আগুন জ্বালিয়ে রান্না করার পুরনো অভ্যাসে ফিরে গিয়েছেন। তাই প্রশ্ন উঠছে, গ্যাসে ভর্তুকি ফাঁকি দিয়ে উপার্জিত টাকা কি সরকারের উদরপূর্তিতে ব্যয় হচ্ছে? কারণ প্রতিদিনই তো লোপাট হচ্ছে গরিবের পাওনা।
আসলে এই স্বার্থান্বেষী সরকার গরিবের কথা আদৌ ভাবে না। দেশের এক কোটির উপর হৃদয়বান গ্রাহক গরিব কল্যাণে গ্যাসের ভর্তুকি ছেড়ে দিলেও হৃদয়হীন এই সরকার ছলচাতুরির আশ্রয়ে চুপিসারে ভর্তুকির টাকার অঙ্ক কমিয়েই চলেছে! সেই সঙ্গে গ্যাসের দাম আকাশছোঁয়া হলেও নির্বিকার থেকেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি তাঁর স্বপ্নের উজ্জ্বলা প্রকল্প ফেরি করেই চলেছেন। কিন্তু ভুক্তভোগীরা বেশ বুঝতে পারছেন গরিব মানুষের জন্য প্রধানমন্ত্রীর একাধিক ঘোষণায় আন্তরিকতার বদলে রয়েছে নানা কৌশল। রয়েছে মানুষকে হাতে না মেরে ভাতে মারার চেষ্টা। গরিব মানুষকে আর্থিক সুরাহা দেওয়ার বদলে সরকার যেন কোষাগার ভরাতেই বেশি আগ্রহী। তার জন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় গ্যাসকেও বেছে নিতে ছাড়েনি। ঘুরপথে কখনও গ্যাসে ভর্তুকি ফাঁকি দিয়ে, কখনও বা ভর্তুকির তালিকা থেকে নাম বাদ দিয়ে টাকা বাঁচিয়ে উপার্জনের যে-পথ খুলেছে কেন্দ্রের সরকার তা অবশ্যই গরিরেব স্বার্থের পরিপন্থী।