হঠাৎ নেওয়া সিদ্ধান্তে বিপদে পড়তে পারেন। চলচিত্র ও যাত্রা শিল্পী, পরিচালকদের শুভ দিন। ধনাগম হবে। ... বিশদ
প্রশান্ত কিশোরের টিম দেড়-দু’মাস যাবৎ ত্রিপুরায় রয়েছে। তাতেই সিঁদুরে মেঘ দেখেছে বিপ্লব দেবের প্রশাসন। পিকের কর্মীদের নড়চড়া করতে দেয়নি। গতমাসের শেষদিকে তাদের মধ্যে ২৩ জনকে গৃহবন্দি করে রাখে ত্রিপুরা পুলিস। বিপর্যয় মোকাবিলা আইনে তাঁদের টাইট দেওয়ারও ফন্দি আঁটে ত্রিপুরা প্রাশসন। যতদূর জানা যায়, তাতেও দমেনি পিকের টিম। তাদের রাজনৈতিক সমীক্ষা ও পর্যবেক্ষণের কাজ অব্যাহত। অন্যদিকে, দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূলের যুবশক্তির ভিতরে নতুনভাবে অর্জিত আত্মবিশ্বাস সঞ্চার করতে উদ্যোগী হয়েছেন। যুব সংগঠন পরিচালনার অভিজ্ঞতার সূত্রে তিনি জানেন, যুবশক্তিই তাঁর দলের সম্পদ। যুবশক্তিকে সামনে রেখেই তিনি ত্রিপুরাজয়ের লক্ষ্য স্থির করেছেন। পিকের টিমকে নিয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই ২ আগস্ট, সোমবার শুরু হয় অভিষেকের ত্রিপুরা অভিযান। প্রথম সফরেই বিজেপির হামলার শিকার হন তিনি। তৃণমূলের ব্যানার, ফ্ল্যাগ, মমতার ছবি ইত্যাদি ছিঁড়ে দেওয়া হয়। দলের সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করেন। অভিষেকের নামে ‘গো ব্যাক’ ধ্বনির পাল্টা হিসেবে দেবাংশু ভট্টাচার্য, জয়া দত্ত, সুদীপ রাহারা শুনিয়ে দেন ত্রিপুরাতেও ব্যাপক ‘খেলা হবে’। তাঁরা তৃণমূলের পতাকা লাগাতে গেলে তাঁদের উপরেও হামলে পড়ে বিজেপি। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই শনিবার ফের হামলার শিকার হয়েছেন দেবাংশুরা। তাঁদের এগারোজন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তারও করেছে পুলিস।
দলের যুব নেতৃত্বের উপর হামলা ও গ্রেপ্তারির পর দ্রুত ত্রিপুরায় পৌঁছে গেলেন অভিষেক। রবিবার আগরতলায় পা রেখেই তিনি নরেন্দ্র মোদি-অমিত শাহের পার্টিকে হুঁশিয়ারি দেন, ‘একছটাকও জমি ছাড়বে না তৃণমূল।’ অভিষেকের অভিযোগ, বিপ্লব দেবের ত্রিপুরা ‘সমাজবিরোধীদের মুক্তাঞ্চল’ হয়ে উঠেছে। এই রাজ্যে গণতন্ত্র এবং আইনের সুশাসন ফেরানোরও অঙ্গীকার শোনা গিয়েছে তাঁর কণ্ঠে। অভিষেকের নেতৃত্বে তৃণমূল নেতাদের একটি দল সোজা খোয়াই থানায় উপস্থিত হয়। ‘বিজেপির দালাল’ পুলিসের সঙ্গে তর্কাতর্কিতে জড়িয়ে পড়েন অভিষেক স্বয়ং। পশ্চিমবঙ্গে সিপিএম-তৃণমূল সম্পর্কটা অহি-নকুল। তবু, ত্রিপুরায় তৃণমূলের উপর সংঘটিত পরিকল্পিত আক্রমণের তীব্র নিন্দা করেছে সিপিএম। পার্টির রাজ্য কমিটি এক বিবৃতিতে বলেছে, তৃণমূলের নেতা-কর্মী এবং দলীয় অফিসের উপর বিজেপির দুর্বৃত্ত বাহিনী হামলা করেছে। ঘটনাটিকে ‘ফ্যাসিস্টসুলভ’ বলেই মন্তব্য করেছে তারা। বস্তুত রাজনৈতিক মহল সিপিএম নেতৃত্বের এই ভূমিকাকে ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়ানো হিসেবেই দেখছে। হিতাহিতজ্ঞানশূন্যের ন্যায় আচরণই করছে বিজেপি ও বিপ্লব দেবের সরকার। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেলেই না সবাই এমন অস্বাভাবিক আচরণ করে! কয়টি প্রশ্ন: তৃণমূলের অল্পবয়সি নেতা-কর্মীদের অপরাধ কী? তাঁরা তাঁদের দলের কথা, গণতন্ত্রের কথা বলছেন। অধিক কিছু নয়। স্বাধীন ভারতের সংবিধান কাকে তা বারণ করেছে? আসলে এতেই যেন বিজেপি সরকার আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের নগ্নরূপ প্রত্যক্ষ করছে! কোথায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশন? কোথায় রাজ্যপাল? কোথায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী? তাঁর হাতে গণতন্ত্র বিপন্ন বলে যাঁরা কথায় কথায় মমতার মুণ্ডপাত করেন! বিপ্লব দেবের সরকার এবং পার্টি দেওয়াল লিখনটা নিশ্চয় দ্রুত পড়তে পারছে। তারা কি ধরেই নিচ্ছে, ত্রিপুরাতেও খেলা শুরু করে দিয়েছে তৃণমূল? খেলাটা বিজেপির হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে দ্রুত, এখানেও!