হঠাৎ নেওয়া সিদ্ধান্তে বিপদে পড়তে পারেন। চলচিত্র ও যাত্রা শিল্পী, পরিচালকদের শুভ দিন। ধনাগম হবে। ... বিশদ
দশবছর আগে ক্ষমতায় এসেই স্বাস্থ্য পরিষেবার রোগ সারাতে যে বিশেষ নজর দিয়েছেন তা মুখ্যমন্ত্রীর একের পর এক সিদ্ধান্তেই স্পষ্ট হয়েছে। বাম আমলে সরকারি হাসপাতাল মানেই আম আদমির নরকযন্ত্রণার কাহিনি। হাসপাতালের পূতিগন্ধময় পরিবেশ সুস্থ মানুষকেও অসুস্থ করে তুলত। দশ কোটি মানুষের এই রাজ্যের স্বাস্থ্যব্যবস্থার ভোল বদলাতে দপ্তরের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন তিনি। শুরু হয় একের পর এক জনকল্যাণমূলক ঘোষণা। পরিসংখ্যান বলছে, দশবছরে জেলায় জেলায় বহু নতুন হাসপাতাল হয়েছে। সেখানে স্বাস্থ্য পরিষেবার হাল আগের থেকে অনেক উন্নতও হয়েছে। তাই এখন আর আগের মতো কথায় কথায় জেলা থেকে ‘রেফার’ করে রোগী পাঠানো হয় না কলকাতার হাসপাতালে। তাঁর যুগান্তকারী ঘোষণা হল, সরকারি হাসপাতালে সম্পূর্ণ বিনা খরচায় চিকিৎসার সুযোগ, স্বল্পমূল্যে ওষুধ সরবরাহ, ন্যায্যমূল্যে ওষুধের দোকান ও সকলের জন্য স্বাস্থ্যসাথী কার্ড। সরকারি হাসপাতাল এখন অনেক ঝাঁ চকচকে, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। পরিষেবার পরিকাঠামো ও মান অনেক উন্নত। উন্নত স্বাস্থ্য পরিকাঠামো গড়ে তোলার ফলও মিলছে হাতেনাতে। ২০১৫ সালের ‘এনএফএইচএস’-র সমীক্ষার সময় বাংলায় সদ্যোজাতের মৃত্যুর হার ছিল ২২শতাংশ। এখন তা কমে হয়েছে ১৫.৫ শতাংশ। আগে ওই সময়ে যেখানে রাজ্যে প্রতিষ্ঠানিক প্রসবের হার ছিল ৭৫.২ শতাংশ, এখন তা বেড়ে হয়েছে প্রায় ৯২ শতাংশ। গত পাঁচবছরে রাজ্যে কন্যাসন্তান জন্মের হারও অনেকটাই বেড়েছে। অথচ উত্তরপ্রদেশ হরিয়ানার মতো বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে কন্যাভ্রূণ হতার খবর প্রায় নিত্যনৈমিত্তিক। শুধু স্বাস্থ্য পরিষেবার মানোন্নয়নই নয়, মমতার জমানায় অপুষ্টি দূরীকরণেও বাংলার সরকার উল্লেখযোগ্য সাফল্য দেখিয়েছে। বাচ্চাদের পুষ্টির সূচকের গত পাঁচবছরে অনেক উন্নতি করেছে বাংলা। অর্থাৎ রাজ্যে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে হয়েছে অভাবনীয় উন্নতি। মোদি সরকারের রিপোর্ট কার্ডই তার প্রমাণ। দূরদর্শী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ে মস্তিষ্কপ্রসূত প্রকল্প কন্যাশ্রী যেমন বাল্যবিবাহ আটকাতে সমর্থ হচ্ছে, পরোক্ষে তা শিশুমৃত্যুর হার কমানোর সহায়কও হচ্ছে। বাল্যবিবাহের কারণে বহু নাবালিকা সময়ের আগেই অপুষ্ট দুর্বল শিশুর জন্ম দিত। প্রসবের পর যাদের অনেকেই হয়তো পৃথিবীর আলো দেখার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হতো। কন্যাশ্রীর সুবাদে এরাজ্যের কন্যাসন্তানরা যেমন নিজেদের শিক্ষিত করে তোলার সুযোগ পাচ্ছে তেমনই বাল্যবিবাহের অভিশাপ থেকে মুক্ত থাকতে পারছে। রাজ্যে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে এই উন্নতির পিছনে কন্যাশ্রীর অবদান নেহাত কম নয়।
বলার অপেক্ষা রাখে না সার্বিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থার মতো সদ্যোজাতের পরিষেবা ক্ষেত্রে যে গভীর ক্ষত বাম আমলে ছিল তা দূর করতে পেরেছে তৃণমূল কংগ্রেস সরকার। আর তাই, মমতার হাতে থাকা স্বাস্থ্যদপ্তরের কাজের প্রশংসায় পঞ্চমুখ কেন্দ্র। তবে আত্মতুষ্টির যে কোনও অবকাশ নেই তা মমতার বক্তব্যেই স্পষ্ট। আগেই তিনি জানিয়েছেন, সপ্তাহে একদিন তিনি এসএসকেএমে বসবেন। এতে যে পরিষেবার জমি আরও ভালো হওয়ার সম্ভাবনা আছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।