হঠাৎ নেওয়া সিদ্ধান্তে বিপদে পড়তে পারেন। চলচিত্র ও যাত্রা শিল্পী, পরিচালকদের শুভ দিন। ধনাগম হবে। ... বিশদ
মেডিক্যাল জার্নাল ল্যানসেট-এর পর্যবেক্ষণে নজর করলে মন আরও খারাপ হয়ে যায়। স্বাস্থ্য পরিষেবা সাধারণ মানুষের কাছে কতটা পৌঁছচ্ছে এবং তার গুণমান কেমন তার ভিত্তিতে একটি সূচক তৈরি হয়। ২০১৮ সালে তৈরি ১৯৫টি দেশের ওই তালিকায় ভারতের স্থান ১৪৫তম। সেখানে ভারতের নাগরিকরা বাংলাদেশের নাগরিকদের থেকেও বঞ্চিত ভাবতে বাধ্য। কারণ, ওই তালিকায় বাংলাদেশের স্থান ১৩৩তম। আর আমাদের সবচেয়ে বেশি টক্কর যে চীনের সঙ্গে এই গুরুত্বপূর্ণ সূচকে তাদের স্থান ৪৮তম। দক্ষিণের প্রতিবেশী শ্রীলঙ্কাও ভারতের থেকে ঢের এগিয়ে রয়েছে (৭১তম)। সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবায় ভারতের মাথাপিছু ব্যয়ের পরিমাণও কয়েক বছর যাবৎ বেশ হতাশাজনক। ন্যাশনাল হেলথ প্রোফাইল ২০১৯ অনুসারে ২০১৮-১৯ সালে অঙ্কটি ছিল ১,৬৫৭ টাকা—যা শ্রীলঙ্কার তিনভাগের একভাগ কিংবা ইন্দোনেশিয়ার অর্ধেক! ২০২১-২২ অর্থবর্ষের বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে সামান্য ব্যয়বৃদ্ধি (বাস্তবে মাত্র ১২ শতাংশ) বস্তুত কোনও আশা জাগাতে পারেনি।
মানুষকে এখন আর পৃথিবীর বোঝা মনে করা হয় না। প্রতিটি সুসভ্য দেশের কাছে তার মানবসম্পদই হল সেরা সম্পদ। আর মানুষের সম্পদ হল তার স্বাস্থ্য। স্বাস্থ্যরক্ষার উপরেই সর্বাধিক গুরুত্ব আরোপ হওয়াই উচিত। একজন নারী সন্তানসম্ভবা হওয়া থেকেই এই স্বাস্থ্যচিন্তা জরুরি। কারণ, জন্মের তিনবছরের ভিতরেই একজন মানবসন্তান মূল পুষ্টিলাভ করে। সে সারাজীবন কতটা সুস্থ সবলভাবে বাঁচবে সেটা ওই পর্বের যত্নআত্তির উপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। মায়ের স্বাস্থ্যটাও ধরা থাকে এর ভিতরে। এইভাবে ছেলেমেয়েরা শিক্ষাঙ্গন কিংবা ক্রীড়াজগতে পা রাখে, ধীরে ধীরে এগিয়ে যায় কর্মজীবনে। একদিন অবসর নিয়ে চূড়ান্তভাবে উপনীত হয় বার্ধক্যে। আমাদের দেশের মানুষের অভিজ্ঞতা বলে, জন্মটা যেমন তেমন, জীবনের দীর্ঘ পরিক্রমাতেও সুচিকিৎসা অধরা থেকে যায়। এই অবস্থায় মৃত্যুটাও সুখের হওয়া সম্ভব নয়। মোদি সরকারের বাগাড়ম্বরের পাশে চিকিৎসা পরিষেবার প্রকৃত চেহারা কতটা করুণ তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে করোনা পরিস্থিতি। এই দৈন্য এখনও বিরাট ক্ষত ৭৫ বছরের স্বাধীন রাষ্ট্র ভারতের বুকে। কেন্দ্রীয় শাসক যখন এতটা অবিবেচক তখন সীমিত আর্থিক ক্ষমতার মধ্যেই দু-একটি রাজ্যকে এগিয়ে যেতে হয়েছে নিজস্ব মানবিক মুখ নিয়ে। বিশেষ প্রশংসা প্রাপ্য বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তাঁর সরকার ২০১৬ থেকে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের মাধ্যমে বহু গরিব অসুস্থ মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়ে চলেছে। অত্যন্ত ব্যয়বহুল চিকিৎসারও সুযোগ পাচ্ছেন তাঁরা স্বাস্থ্যসাথী স্কিমে। শুধু গত একবছরে এই স্কিমে রাজ্য সরকার পেমেন্ট করেছে দেড় হাজার কোটি টাকা! কোনও একটি রাজ্য সরকারের পক্ষে এই কৃতিত্ব সম্ভবত বেনজির। অন্য রাজ্যগুলিও এই নীতি গ্রহণ করলে সার্বিকভাবে সমস্ত মানুষের আরও সুরাহা হবে। রাজ্যের এই মহৎ উদ্যোগের পাশে মোদি সরকারের উচিত আন্তরিকভাবে দাঁড়ানো। এমন বিষয়ে ইগোর লড়াই অন্যায়।