উপস্থিত বুদ্ধি ও সময়োচিত সিদ্ধান্তে শত্রুদমন ও কর্মে সাফল্য। ব্যবসায় গোলযোগ। প্রিয়জনের শরীর-স্বাস্থ্যে অবনতি। উচ্চশিক্ষায় ... বিশদ
এত তো গেল এক দিক। তবে জনস্বাস্থ্যের প্রয়োজনে নেওয়া কোনও পরিকল্পনা তখনই পুরোপুরি সফল হয় যখন তা পর্যালোচনা করে দেখে ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকলে তা দূর করার ব্যবস্থা হয়। রাজ্যে সরকারি হাসপাতালগুলিতে চিকিৎসা পরিষেবার ক্ষেত্রেও এই পর্যালোচনা করে দেখার বিষয়টি জরুরি ছিল। এখনও কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি আছে তা দূর করা দরকার। বিষয়টির গুরুত্ব বুঝেই স্বাস্থ্য ভবনে বসেছিল এমনই পর্যালোচনা বৈঠক। সেই পর্যালোচনা বৈঠকেই কিছু কিছু সমস্যার কথা উঠে আসে। আশার কথা, তার ভিত্তিতে কোথায় কী খামতি রয়েছে তা দূর করতে স্বাস্থ্য দপ্তর উদ্যোগ নিচ্ছে। সরকারি কোনও হাসপাতালে প্রথমবার ডাক্তার দেখিয়ে ওষুধ নেওয়ার পর দ্বিতীয় বা তৃতীয় বার ওষুধ নিতে গেলে দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীরা বেশ সমস্যায় পড়েন। এরজন্য অনেকসময় তাঁদের গোটা দিনটাই চলে যায়। একদিকে আছে যাতায়াতের হয়রানি, আছে সময়াভাব। সেটা দূর করতে এবার স্বাস্থ্য দপ্তর যে উদ্যোগটি নিতে চলেছে তা যেমন প্রশংসনীয় তেমনি রোগীর স্বার্থরক্ষার সহায়কও হবে। বাড়ির কাছে যে-কোনও সরকারি হাসপাতাল থেকেই রোগী বা রোগীর আত্মীয়-স্বজন যাতে বিনা পয়সায় সেই ওষুধটি সংগ্রহ করতে পারে তার ব্যবস্থা করতে চলেছে স্বাস্থ্য দপ্তর। এমন সিদ্ধান্তে নিশ্চয় বহু মানুষ উপকৃত হবে। ওষুধ সংগ্রহ করার জন্য তাদের সময় যেমন বাঁচবে তেমনি যাতায়াতের ধকলও কমবে। অন্তর থেকে রোগীদের সমস্যাটিকে অনুভব করতে না পারলে এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া কখনওই সম্ভব ছিল না। এখানেই মমতা সরকারের সাফল্য। কারণ, মুখ্যমন্ত্রী নিজেই মানুষের প্রয়োজনের বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দেন এবং অন্তর দিয়েই অনুভব করেন তাদের সমস্যাটি।
ইতিমধ্যেই ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে স্বাস্থ্য ভবন ও জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের মধ্যে কাজে সমন্বয় রাখতে এবং যে-কোনও বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম চালু হয়েছিল। তার সুফল মিলতে শুরু করেছে ইতিমধ্যেই। গুরুত্ব পেয়েছে পরিদর্শনের কাজ। রোগীদের প্রয়োজন মেটানোকে অগ্রাধিকার দিতে সেল্ফ টিকেটিং পরিষেবা চালু করার কথা এবার ভাবা হচ্ছে, যাতে অসুস্থ শরীরে আউটডোরে টিকিট কাটার জন্য তাঁদের দীর্ঘসময় অপেক্ষা করতে না হয়। এছাড়াও আউটডোরে জল আলো বাথরুমের অভাবসহ যেসব সমস্যা এখনও থেকে গিয়েছে তা দূর করার উদ্যোগও নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি রাজ্যের সরকারি হাসপাতালে পিপিপি মডেলে চলা সিটি স্ক্যান, এমআরআই, এক্স-রে’র নীতি নিয়মে সামঞ্জস্য রাখার উদ্যোগও নেওয়া হচ্ছে। আদর্শ নিয়ম মেনে হাসপাতালে অগ্নিনির্বাপণের ব্যবস্থা, জলের গুণমান পরীক্ষা ইত্যাদি একগুচ্ছ বিষয় নিয়ে ওই পর্যালোচনা বৈঠকে আলোকপাত করা হয়। অর্থাৎ, সরকারি হাসপাতালগুলিতে পরিষেবার ক্ষেত্রে যেখানে যা ঘাটতি রয়েছে তা দূর করার চিন্তাভাবনা হচ্ছে। সত্যিই রাজ্যে স্বাস্থ্য পরিষেবার কাজে আরও উন্নতি ঘটাতে হলে এই বিষয়গুলিতেও নজর দেওয়া দরকার। পরিষেবার উন্নতি স্বার্থে এবং সরকারি প্রচেষ্টার পূর্ণ সাফল্য পেতে হলে ত্রুটি-বিচ্যুতি দূর করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করাটা জরুরি। স্বাস্থ্য দপ্তর সেই কাজটি করারই উদ্যোগ নিয়েছে, যা প্রশংসনীয়।