উপস্থিত বুদ্ধি ও সময়োচিত সিদ্ধান্তে শত্রুদমন ও কর্মে সাফল্য। ব্যবসায় গোলযোগ। প্রিয়জনের শরীর-স্বাস্থ্যে অবনতি। উচ্চশিক্ষায় ... বিশদ
জঙ্গলমহলে এক সময় দাপুটে আইপিএস অফিসার ছিলেন ভারতী ঘোষ। তিনি এবারে সেখানকার প্রার্থী। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, তিনি কী করে ভুলে গেলেন নির্বাচনী বিধি! পিপুড়দায় তিনি একটি বুথে ঢুকে মোবাইলে ছবি তুলছিলেন। নির্বাচনী বিধিভঙ্গের অভিযোগে তাঁকে ঘিরে চরম বিক্ষোভ দেখা দেয়। এই সময় তাঁর নিরাপত্তারক্ষী গুলি চালান বলে অভিযোগ করে তাঁর বিরোধীরা। এতে তৃণমূলের এক সমর্থক জখম হন। এতেই যেন ঘৃতাহুতি পড়ে। অশান্তি বাড়তে থাকে। এমনকী ভারতীদেবী যে গাড়ি করে ঘুরছিলেন, সেটিরও অনুমতিপত্র ছিল না বলে অভিযোগ। পুলিস তাই সেই গাড়িটিকে বাজেয়াপ্ত করে। ভারতীদেবী পাশের একটি মন্দিরে আশ্রয় নেন। কিন্তু ক্রমেই জনরোষ বাড়তে থাকে। সেই জনরোষ থেকে বাঁচাতে পুলিস তাঁকে সেখান থেকে উদ্ধার করে অন্যত্র নিয়ে যায়। প্রশ্ন ওঠে, সত্যিই যদি কোনও প্রার্থী নিজেই নিয়ম ঠিকভাবে না মানেন, তবে অশান্তি তো বাড়বেই। জনপ্রতিনিধি হওয়ার বাসনায় যাঁরা ভোটের ময়দানে লড়াইয়ে নামেন, তাঁদের নিয়ম মানাটাই তো দস্তুর। নাহলে গণতন্ত্রের ময়দানে বেআইনিভাবে জেতার মানসিকতা সাধুবাদ পেতে পারে না। এমন লজ্জাজনক ঘটনা যত কম ঘটে ততই জনগণের পক্ষে মঙ্গল, গণতন্ত্রের পক্ষে মঙ্গল। সুতরাং বিধি মেনে সব কিছু হলে অশান্তিও ছড়ানোর অবকাশ পায় না।
এছাড়া আরও কয়েকটি ক্ষেত্রে রাজ্যে গোলমালের ঘটনা ঘটেছে। ময়নার বাকচা, দাঁতনের সোলেমানপুর, নারায়ণগড়ের পাতলি, কেশিয়াড়ি, বিষ্ণুপুর প্রভৃতি জায়গায় ভোট ঘিরে অশান্তি দেখা দেয়। সারা দেশের নিরিখে যদি এই রাজ্যের ভোটের দিকে লক্ষ্য রাখা যায়, তবে দেখা যাবে, অন্য রাজ্যের তুলনায় এখানে ভোটও বেশি পড়ে, আবার গোলমালও বেশি হয়। গণতন্ত্রে বাংলা নাকি খুবই সচেতন এক রাজ্য। এই প্রবাদবাক্য দীর্ঘদিন ধরেই আমরা শুনে আসছি। তবু সচেতনতা ও রক্তপাত সমানভাবেই এখনও বেঁচে আছে। এখানেই আমরা অন্যদের থেকে বোধহয় কিছুটা ব্যতিক্রম।
পাশাপাশি আর একটা ব্যাপার এবারের নির্বাচনে নতুন ফিচার হিসেবে দেখা দিয়েছে। সেটি হল, ইভিএম বিভ্রাট। এবারের নির্বাচনে সবথেকে বিতর্কিত বিষয় হয়ে রইল ইভিএম। প্রত্যেকটি নির্বাচনেই দেখা গিয়েছে ইভিএম বিভ্রাটের ঘটনা ভূরি ভূরি ঘটেছে। দ্রুত তা অবশ্য বদলে ফেলার ব্যবস্থা কমিশন করেছে, কিন্তু বহুক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে ভোট কিছুক্ষণের জন্য থমকে গিয়েছে। দিল্লি, বিহার, হরিয়ানা সর্বত্রই কমবেশি ইভিএম নিয়ে কমিশনের কাছে অভিযোগ জমা পড়েছে। এই বিষয়টিও কমিশনের দেখা দরকার। নির্বিঘ্নে ভোটদানের জন্য দরকার ইভিএম সংক্রান্ত বিভ্রাট কমানো। এটাও ভোটারদের কাম্য। সেটা পূরণ করার দায়িত্ব কমিশনের।