উপস্থিত বুদ্ধি ও সময়োচিত সিদ্ধান্তে শত্রুদমন ও কর্মে সাফল্য। ব্যবসায় গোলযোগ। প্রিয়জনের শরীর-স্বাস্থ্যে অবনতি। উচ্চশিক্ষায় ... বিশদ
পণ্ডিতিয়া রোডের বস্তির ভিতর দলের কর্মীদের নিয়ে ঢুকে পড়লেন মিতাদেবী। মাইকে কংগ্রেস কর্মী বলে চলেছেন, অনেক তো দেখলেন দাঙ্গাবাজি, দুষ্কৃতীরাজ। এবার ভোটটা দিন হাত চিহ্নে। কংগ্রেস কখনও কথার খেলাপ করে না। মিতাদেবীর সামনে সামনে এগচ্ছেন জনাপনেরো কংগ্রেস কর্মী ও সমর্থক। হ্যান্ডমাইকে এক কর্মী বলে যাচ্ছিলেন কথাগুলি। আরেক কর্মী হাতে হাতে ধরিয়ে দিচ্ছিলেন লিফলেট। প্রচার এগতে শুরু করল বস্তি এলাকার সর্পিল গলিপথ ধরে। প্রার্থী এগতে এগতে বলতে থাকলেন, আমি আপনাদের পাড়ারই মেয়ে। সবসময় পাশে পাবেন। আর এটা দিল্লির নির্বাচন। জনমুখী, গণতান্ত্রিক সরকার গড়তে তাই এবারের ভোটটা হাত চিহ্নে দিন। হ্যান্ডমাইকের প্রচার শুনে অনেক মুখ বেরিয়ে এল গলিঘুপচি থেকে। অনেকে মনে করিয়ে দিলেন, মানুষের সাহায্যে মিতাদেবীর বাবা তপন চক্রবর্তীর দরাজ হস্তের কথা। চিনতে পারছেন তো প্রশ্ন করায় প্রবীণ-প্রবীণারা কেউ কেউ বললেন, তুমি তো আমাদের এখানকারই মেয়ে। কেন চিনতে পারব না? হাসি আরও উজ্জ্বল হল কংগ্রেস প্রার্থীর। নমস্কার, প্রতি নমস্কারের পাশাপাশি হাত মেলাতে মেলাতে এগতে শুরু করল প্রচার মিছিল।
বস্তির ভিতর এক গৃহবধূ বললেন, দিদি রোদে না দাঁড়িয়ে আমাদের দাওয়ায় এসে একটু দাঁড়ান। আমরা এখানে কয়েকজন আছি। প্রার্থী এগিয়ে গেলেন ছোট্ট পরিসরের উঠোনে। সেখানে কথায় কথায় তিনি বোঝালেন রাহুল গান্ধীর ঘোষণা করা ‘ন্যায় প্রকল্প’-এর কথা। এবার কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসতে পারলে গরিব পরিবারের মহিলাদের অ্যাকাউন্টে মাসে মাসে ছ’হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে কংগ্রেস। সেই কথা মনে করিয়ে দিয়ে মিতাদেবী বলে চললেন, কংগ্রেস কিন্তু ১৫ লক্ষ টাকা পাইয়ে দেওয়ার মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দেয় না। আমরা যা বলি, তা করে দেখাই। একশো দিনের কাজ, তথ্যের অধিকার, খাদ্যের অধিকার নিয়ে আইন আমাদেরই সময়ে করা। তাই ২০০৯-এর পর ২০১৪তে মানুষ আমাদের আবার ফিরিয়ে এনেছিল। আমরা বলছি, গরিব বাড়ির মহিলার অ্যাকাউন্টে ছ’হাজার টাকা করে দিতে পারব। কত টাকা কীভাবে দেওয়া যায়, তা নিয়ে রীতিমতো একটি প্রশিক্ষিত টিম দীর্ঘদিন কাজ করার পর যাবতীয় সম্ভাবনা খতিয়ে দেখেই এই প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। হাওয়া তুলে ভোট নেওয়ার পক্ষপাতী নয় কংগ্রেস। এইটুকু বলে কর্মীদের ডাকে গলিপথে আরও এগিয়ে গেলেন কংগ্রেস প্রার্থী।
প্রচারের মাঝখানে সামান্য আলাপচারিতায় জানা গেল, জেতার সম্ভাবনা কতটা, তা নিয়ে এখন কিছু ভাবছেন না তিনি। পেশায় কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার এবং একটি আইটি সংস্থার মালিক মিতাদেবী মনে করেন, কংগ্রেসের হাতেই দেশের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত। তাই রাহুল গান্ধীর ডাকে তিনি শামিল হয়েছেন নির্বাচনী লড়াইয়ে। বালিগঞ্জ প্লেসে নিজের নির্বাচনী কার্যালয়ে বসে জানিয়ে দিলেন, বামেদের সঙ্গে জোট হয়নি বলে কোনও খেদ নেই। এতে বরং সাংগঠনিক দিক থেকে কংগ্রেসের অনেক লাভ হচ্ছে। যার সুফল আজ না হলেও ভবিষ্যতে ঘরে তুলবে কংগ্রেস। ফোনে দলীয় কর্মীকে কোনও নির্দেশ দিতে ব্যস্ত হওয়ার আগে এমনটাই জানিয়ে দিলেন এই কংগ্রেস প্রার্থী।