উপস্থিত বুদ্ধি ও সময়োচিত সিদ্ধান্তে শত্রুদমন ও কর্মে সাফল্য। ব্যবসায় গোলযোগ। প্রিয়জনের শরীর-স্বাস্থ্যে অবনতি। উচ্চশিক্ষায় ... বিশদ
বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রে ঘাঁটি গেড়ে থাকা বামেদের ২০০৯ সালে পরাজিত করেন তৃণমূলের তারকা প্রার্থী শতাব্দী। ২০১৪ সালেও জয় ছিনিয়ে নেন তিনি। এবার তিনি হ্যাট্রিকের ব্যাপারে ১০০ শতাংশ আশাবাদী। সেইমতো নিজের কেন্দ্রে প্রায় দেড়মাস ধরে চুটিয়ে প্রচার সেরেছেন। গত দশবছর ধরে তিনি সংসদীয় রাজনীতিতে থাকার সুবাদে অভিনেত্রীর পাশাপাশি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন। তাই এবার তারকা প্রার্থীকে দিয়ে লাগোয়া ঝাড়খণ্ডের বাংলা বলয়ে প্রচারে ঝড় তুলতে মরিয়া তৃণমূল। এদিন সেই ঝড়ও তুললেন শতাব্দী রায়। আজিনা হাইস্কুলের মাঠে শতাব্দী রায়ের বক্তব্য শুনতে প্রায় হাজার পাঁচেক মানুষ জড়ো হন। শতাব্দী পৌঁছতেই তাঁকে ঘিরে উপস্থিত মানুষজন উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন। প্রায় সকলেই শতাব্দী রায়ের ছবি মোবাইল বন্দি করতে থাকেন। বীরভূমের মুরারই থানা লাগোয়া ঝাড়খণ্ডের রাজমহল লোকসভা কেন্দ্র। ১৯মে শেষ দফায় এই কেন্দ্রের নির্বাচন। স্বাস্থ্য পরিষেবা থেকে বাজার সবেতেই লাগোয়া ঝাড়খণ্ডের মানুষজনকে মুরারই অথবা রামপুরহাটে আসতে হয়। অধিকাংশই বাংলাভাষী। এদিন দর্শকাসনে বসে থাকা মানুষজন শতাব্দীকে বাংলায় বক্তব্য রাখার অনুরোধ জানান।
জনসভায় বক্তব্যের শুরুতেই শতাব্দী বলেন, রাস্তা দিয়ে আসার সময়ই বুঝতে পারলাম ঝাড়খণ্ডে ঢুকে পড়েছি। রাস্তা অত্যন্ত বেহাল। বহু গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছছে বলে মনে হয় না। পাশের আমার কেন্দ্রে চলুন, দেখবেন সমস্ত রাস্তা কত ভালো হয়েছে। এখানে পানীয় জলের সমস্যাও রয়েছে। স্বাস্থ্য পরিষেবা নিতে আপনাদের মুরারই অথবা রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজে যেতে হয়। আপনারা অত্যন্ত খারাপ অবস্থায় রয়েছেন। নাম না করে রাজ্যের ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, এখানকার মানুষগুলো কী অপরাধ করেছে যে তাঁদের এভাবে বঞ্চিত করে রাখা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আমি গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছি। এখন সেই গ্রামের উন্নয়ন দেখে আসুন। আপনাদের এখানে যদি তৃণমূলের সংসদ সদস্য হয়, তাহলে আমরা দু’জনে মিলে কাজ করতে পারব। বাংলার মতোই এই কেন্দ্রেও উন্নয়ন হবে। একবার আমাদের সুযোগ দিন। এই কেন্দ্রে পরিবর্তন আনুন।
উল্লেখ্য, গত লোকসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্রে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির হেমলাল মুর্মকে ৪১ হাজার ৩৯১ ভোটে হারিয়ে জয়ী হন ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার বিজয় হাঁসদা। এবারও তিনি জেএমএমের প্রার্থী। যদিও এই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী মণিকা কিস্কুর দাবি, এবার জেএমএমের সঙ্গে তৃণমূলের লড়াই হবে। কারণ, রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় থাকলেও এখানকার মানুষের কোনও বিকাশ করেনি। তিনি বলেন, জেএমএমও এখানকার উন্নয়নে কোনও নজর দেয়নি। এমপি ল্যাডের ১ কোটি ৮৫ লক্ষ টাকা ফেরত গিয়েছে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পানীয় জল, রাস্তাঘাট সবেতেই পিছিয়ে আমরা। অথচ বাংলার গ্রামগুলিতে উন্নয়ন দেখেই মানুষ পরিবর্তনের ডাক দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চাইছেন। এদিনের সভায় উপস্থিত ছিলেন, দলের ঝাড়খণ্ড রাজ্য সভাপতি অজয় সিং, পাকুড় জেলা সভাপতি আসরাফুল শেখ, শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক, মুরারই বিধায়ক আব্দুর রহমান ও মুরারই-১ ব্লক সভাপতি বিনয় ঘোষ প্রমুখ।