উপস্থিত বুদ্ধি ও সময়োচিত সিদ্ধান্তে শত্রুদমন ও কর্মে সাফল্য। ব্যবসায় গোলযোগ। প্রিয়জনের শরীর-স্বাস্থ্যে অবনতি। উচ্চশিক্ষায় ... বিশদ
পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রচারমঞ্চে আসার আগে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর সঙ্গে একদিন আগেই দিল্লিতে দেখা করেছিলেন অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু। ঠিক হয়েছে আগামী ২১ মে বিরোধীদের জোট প্রক্রিয়াকে নতুন করে মেজেঘষে নেওয়ার চেষ্টা হবে। তবে সেই বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাজিরাই লাখ টাকার প্রশ্ন। কেননা, চলতি জাতীয় রাজনীতিতে মমতা যে আগামীদিনে এক নির্ণায়ক চরিত্র হতে চলেছেন, তা নিয়ে বিজেপির রক্ষণশীল মহলেও কোনও সন্দেহ নেই।
দিল্লিতে বিরোধী নেতাদের এই মহাবৈঠকের সম্ভাবনা তৈরি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বেশ কয়েকটি বিষয় লাট্টুর মতো ঘুরছে রাজনৈতিক মহলে। যেমন, বিজেপি বিরোধী দলগুলির মধ্যে মূলত কোন কোন দলকে আহ্বান জানানো হবে ওই ‘মহাবৈঠকে’? বৈঠকের আহ্বায়কই বা কে?
কারণ, এখানে গুরুত্বপূর্ণ যে আঞ্চলিক দলগুলিকে এক ছাতার তলায়, এক সারিতে, এক পংক্তিভোজ করানোই সব থেকে দুরূহ ব্যাপার। যেটাকে প্রথম থেকেই মূলধন করে প্রচার করে চলেছে বিজেপি। বিশেষত, বিজেপিকে দূরে ঠেললেও বহু আঞ্চলিক দল আছে, যাদের পক্ষে বয়সে নিতান্ত নবীন রাহুল গান্ধীর নেতৃত্ব মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। এবার পড়ে রইল প্রাদেশিক দলগুলির সমঝোতা। সেখানেও বিরাট সমস্যা। একই রাজ্যের রাজনীতিতে পরস্পরের চিরশত্রু দলগুলিকে অতীতের তিক্ততা ভুলে গলায় জড়িয়ে ধরতে গেলেও নিজ নিজ ভোট ব্যাঙ্কের কথা ভেবে দেখতে হবে। উত্তরপ্রদেশ, অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ু, কেরল, পশ্চিমবঙ্গ, মহারাষ্ট্রের প্রাদেশিক দলগুলির পারস্পরিক বৈরিতা এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য। যেমন—অকংগ্রেসি-অবিজেপি সরকার গঠনের প্রক্রিয়ায় সিপিএম যদি থাকে তাহলে তৃণমূল কংগ্রেসের ভূমিকা কী হবে? কিংবা টিডিপি এবং টিআরএস, ডিএমকে এবং এডিএমকে, মায়াবতী-অখিলেশের মধুচন্দ্রিমারও ভবিষ্যৎ কতদিনের?
ফলে, দিল্লিতে ২১ মে’র ‘মহাবৈঠকে’ বিজেপি বিরোধী কোন কোন দল যোগ দেবে সে দিকেই আপাতত তাকিয়ে গোটা দেশ। যদিও রাজনীতির সব সমীকরণই এখন নির্ভর করছে ভোটের ফলের উপর। নির্বাচনের আগে গাঁটছড়া বাঁধার সানাই বাজলেও শেষ পর্যন্ত দশ হাত এক হয়নি। নির্বাচনী প্রচারে তা নিয়ে বিরোধীদের উপহাস করতেও ছাড়েননি গেরুয়া শিবির। বিশেষ করে মায়াবতী রাখঢাক না করেই নিজেকে প্রধানমন্ত্রী পদের দাবিদার হিসেবে তুলে ধরার পরে এই আক্রমণ আরও জোরালো করছে বিজেপি। সেই হিসেবে মহাবৈঠকের বেলুনে এখন থেকেই যে ফুঁ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, শেষমেশ তা কতদূর ফোলে তার উপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। কেননা, বিজেপি যদি এই ভোটে নিজের পায়ে দাঁড়াতে সমর্থ না হয়, তাহলে ওই বৈঠকেই ঠিক হবে আগামীদিনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী কে হবেন? সেক্ষেত্রে ভারতের প্রথম বাঙালি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম উঠে আসে কি না সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছে আপামর বাঙালি।