উপস্থিত বুদ্ধি ও সময়োচিত সিদ্ধান্তে শত্রুদমন ও কর্মে সাফল্য। ব্যবসায় গোলযোগ। প্রিয়জনের শরীর-স্বাস্থ্যে অবনতি। উচ্চশিক্ষায় ... বিশদ
এই পুলিসের বিরুদ্ধেই আবার কখনও গুচ্ছ গুচ্ছ অভিযোগও ওঠে। অনেকেই জানেন বা মনে করেন, পুলিস মনে করলে পারে না এমন কাজ হয়তো নেই! কিন্তু, পুলিসের দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলির ভূমিকাকে অস্বীকার করার উপায়ও নেই। কারণ, বহু ক্ষেত্রেই পুলিসকে নিয়ন্ত্রণ করে কোনও না কোনও রাজনৈতিক দল বা তাদের নেতারা। এবং, কর্মক্ষেত্রে পদোন্নতির আশায় অনেক সময়ই পুলিস সেই নিয়ন্ত্রণ মেনে নিয়ে নেতাদের তুষ্ট করতে মরিয়া হয়ে ওঠে এবং একপেশে আচরণও করে। বাম জমানায় পুলিসকে দলদাসে পরিণত করার বিষয়টি ছিল বহুচর্চিত। বাস্তবে দেখা যায়, যখন যে দল ক্ষমতায় আসে তারা পুলিসকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা অব্যাহত রাখে। আর, সেকারণে পুলিসের বিরুদ্ধে দলদাসে পরিণত হওয়ার অভিযোগটি ওঠে। তাই তাদের নিরপেক্ষ ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন। তবে ব্যতিক্রম যে নেই তা বলা যায় না। ব্যতিক্রম থাকলেও পুলিসের নিরপেক্ষ ভূমিকা চ্যালেঞ্জের মুখে। এই কারণে সাধারণ মানুষও অনেক সময়ই পুলিসের উপর আস্থা হারিয়ে ফেলছে। এমনকী কেউ কেউ আইনও নিজের হাতে তুলে নিতে পিছপা হচ্ছে না, যা সমাজের পক্ষে ক্ষতিকর। দেখা যাচ্ছে, কখনও-বা পুলিসের উপর আক্রমণ নেমে আসছে। এমনটা কেন হবে? কোনও পুলিস কর্মীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির বা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ থাকলে এবং তা প্রমাণিত হলে সেটাও তো শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তাই পুলিসের বিরুদ্ধে ওঠা নানা অভিযোগের কালিমা ঘুচিয়ে স্বচ্ছ ভাবমূর্তি তৈরিতে উদ্যোগী হতে হবে পুলিসকেই। এই আইনরক্ষকরাই কিন্তু সাধারণ মানুষের ভরসাস্থল। সেই ভরসার জায়গাটিতে যাতে এতটুকু ফাঁক না-থাকে সেজন্য তাদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
যে দু’-তিনটি ঘটনার কথা উল্লেখ করা হল তা ভালো দৃষ্টান্ত। একটিতে পুলিসের মানবিক মুখ প্রকাশ পেয়েছে। পুলিস কর্মী হয়ে উঠতে পেরেছেন দুর্ঘটনায় আহত যুবকের অতি আপনজন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও পুলিসকে এমন মানবিক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বার বার। চুঁচুড়ার ঘটনাটিতে পুলিস তার দায়িত্বের পরিচয় রেখেছে। আসলে বলাগড় পাণ্ডুয়া গ্রামীণ এলাকায় মাটি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য নতুন ঘটনা নয়। সেই লরি ধরার পরিণতিতেই পুলিসের উপর চড়াও হয়েছে তারা। খবরে প্রকাশ, ট্রাফিক আইন ভাঙা ডাম্পারকে ধরতেই চালক ফোন করে অন্য মাফিয়াদের এনে পুলিসের উপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ। আইনরক্ষকদের উপর এমন হামলা কাম্য তো নয়ই, নিন্দনীয়। এটা প্রতিরোধ হওয়া দরকার। তবে, পুলিস যদি সত্যিই তার কাজেকর্মে ঠিক পথে থাকে তাহলে শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের সহযোগিতাও যেমন তারা পাবে তেমনি তাদের উপর আস্থাও মানুষের বাড়বে। এর জন্য পুলিসকে নিরপেক্ষ এবং দুর্নীতিমুক্ত হতে হবে। তবে সেই পুলিসই যদি আক্রান্ত বা গণপিটুনির শিকার হয় তাহলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার প্রশ্নটিও স্বাভাবিকভাবেই উঠে পড়বে। রাজনৈতিক দলগুলিকেও এবিষয়টি মাথায় রেখে পুলিসকে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে। এটা না-হলে পুলিসের উপর ভরসা হারাবে মানুষ, যা রাজ্যের পক্ষে মঙ্গলজনক হবে না।