বিদ্যার্থীদের বেশি শ্রম দিয়ে পঠন-পাঠন করা দরকার। কোনও সংস্থায় যুক্ত হলে বিদ্যায় বিস্তৃতি ঘটবে। কর্মপ্রার্থীরা ... বিশদ
তবে হরিশ্চন্দ্রপুরের কংগ্রেস বিধায়ক মোস্তাক আলমের দাবি, নিখোঁজ রয়েছেন অন্তত ১৫জন। তাঁদের মধ্যে চাঁচল ছাড়াও বিহারের বারসই এলাকার বেশ কয়েকজন বাসিন্দাও রয়েছেন।
বুধবার সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ চাঁচল ১ ব্লকের জগন্নাথপুর ঘাট থেকে নৌকায় করে উত্তর দিনাজপুরের ইটাহার থানার মুকুন্দপুরের দিকে যাচ্ছিলেন বেশ কিছু বাসিন্দা। নৌকায় প্রায় ৪০ থেকে ৪৫জন যাত্রী ছিলেন। তা ছাড়াও নৌকাতে তোলা হয়েছিল ছয়টি মোটরসাইকেল সহ বেশ কিছু সাইকেলও। বেসরকারি মতে অবশ্য নৌকাটিতে যাত্রীর সংখ্যা ছিল ৭০জনেরও বেশি।
পুলিস সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, নৌকাটি যখন বিহারের কাটিহার জেলার উত্তর আবাদপুরের চাপাঘর ঘাট এলাকায় বাঁক নিচ্ছিল তখনই সেটি উল্টে যায়। ইতিমধ্যে সন্ধ্যা নেমে এসেছিল। তার মধ্যে এই আকস্মিক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় তিনজনের। জলে খাবি খেতে থাকা যাত্রীদের উদ্ধারে ছুটে আসেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কেউ কেউ সাঁতরে পারে ওঠেন। কিন্তু অনেকেই নিখোঁজ রয়ে যান। বৃহস্পতিবার রাতেই উদ্ধার হয় মাজেদা বিবি (৪২), হাজেরা বিবি (৬৫) এবং বেঙ্গাই শেখের (৮০) নিথর দেহ। মৃতদেহগুলি ময়না তদন্তে পাঠানো হয়েছে বলে পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
নৌকাডুবির খবর পেয়ে রাতেই চাঁচলে যান জেলাশাসক, পুলিস সুপার সহ পদস্থ কর্তারা। ঘটনাস্থলে আগাগোড়াই ছিলেন চাঁচলের মহকুমাশাসক সব্যসাচী রায় ও মহকুমা পুলিস আধিকারিক সজলকান্তি বিশ্বাস। দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছন তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভানেত্রী মৌসম নুর। চলে আসেন উত্তর মালদহের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মুও। শুক্রবার সকালে ঘটনাস্থলে আসেন পঞ্চায়েত দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী গোলাম রাব্বানি। তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিষয়টি নিয়ে তাঁকে বিস্তারিত রিপোর্ট দিতে বলেছেন। প্রতিটি মৃতের ও নিখোঁজ থাকা ব্যক্তির পরিবারের পাশে রয়েছে রাজ্য সরকার।
দুর্ঘটনায় নিখোঁজ থাকা ব্যক্তিদের সন্ধানে রাতেই নামানো হয় জাতীয় ও রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের বাহিনীকে। গভীর রাত পর্যন্ত চলে তল্লাশি অভিযান। রাতে কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ থাকলেও এদিন সকাল ছ’টা থেকে উদ্ধারকারী দল নেমে পড়ে মহানন্দায়। এরপরে দুপুরে উদ্ধার হয় আরও একটি দেহ।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ইটাহারের কাছে মুকুন্দপুরে বাইচ প্রতিযোগিতা ছিল বৃহস্পতিবার। তাছাড়া একটি ঝাড়ি গানের আসরও ছিল। এই আসরটি বছর পাঁচেক বন্ধ থাকার পরে এবারই নতুন করে আবার শুরু হয়েছিল। তা উপভোগ করতে বৃহস্পতিবার দুপুর থেকেই নৌকা করে মুকুন্দপুরের দিকে রওনা হয়েছিলেন অনেকেই।
তবে এইভাবে নৌকায় বিপুল সংখ্যক মানুষকে চাপানো নিয়ে পুলিসের নজরদারির শিথিলতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এদিকে নিখোঁজের সংখ্যা নিয়েও বিভ্রান্তি রয়েছে। জেলা প্রশাসনের মতে মাত্র চারজন নিখোঁজ থাকার দাবি মানতে নারাজ অনেকেই। জেলাশাসক কৌশিক ভট্টাচার্য বলেন, ঠিক কী কারণে নৌকাডুবি হয়েছে তা জানতে পুলিস ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে। উদ্ধার কাজ অব্যাহত রয়েছে। নিখোঁজদের খুঁজে পেতে সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।