বিতর্ক বিবাদ এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। প্রেম পরিণয়ে মানসিক স্থিরতা নষ্ট। নানা উপায়ে অর্থ উপার্জনের সুযোগ। ... বিশদ
পুলিস ও আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, নাবালিকার পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে শালবনী থানার পুলিস তদন্তে নামে। ঘটনার পাঁচদিনের মাথায় মেদিনীপুর রেল স্টেশন থেকে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে চার্জশিট জমা দেওয়া হয়। এই ঘটনায় ১৩জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। এরপর চার্জগঠন হয়। আদালত অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করে। মামলাটি মেদিনীপুরে পকসো আদালতে চলছিল। এরপর শুক্রবার সাজা ঘোষণা করে আদালত। রায় শুনে কিশোরীর বাবা প্রদীপ মাহাত বলেন, ও তো আমাদের আত্মীয়ই হতো। ওই টুকু মেয়ের উপর এত বড় অন্যায় কী করে ও করেছিল, সেটা এখনও আমরা ভাবতে পারি না। যাবজ্জীবন সাজা হয়েছে দোষীর। তবে ফাঁসি হলে আমরা আরও খুশি হতাম।
২০১৫ সালের ১৮ মার্চ শালবনীর ঢেঙ্গাশোল গ্রামে এক কিশোরীর বস্তাবন্দি দেহ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল ছড়ায়। মৃতার বয়স তখন ছিল ১৪ বছর। সে শালবনী নিচু মঞ্জুরি গালর্স হাইস্কুলে পড়াশুনা করত। ওই দিন বিকেল থেকেই সে নিখোঁজ ছিল। বাড়ির লোকজন খোঁজাখোঁজি শুরু করেন। রাত পর্যন্ত বাপ্পাদিত্য বাকিদের সঙ্গেই খোঁজাখুঁজিতে ব্যস্ত থাকার ভান করে। ওই নাবালিকার বাড়ির একেবারে পাশেই তার বাড়ি।
দীর্ঘক্ষণ খোঁজাখুঁজির পর প্রতিবেশীরা বাপ্পাদিত্যকে বলে, ঘর খুলে একবার দেখতে যদি কোনওভাবে তার ঘরে ঢুকে থাকে। এতে কিছুটা সুর চড়েছিল বাপ্পাদিত্যর। তাতে পাড়া প্রতিবেশীর সন্দেহ হয়। কিন্তু, সকলের অনুরোধে ঘর খুলতে একপ্রকার বাধ্য হয় সে। এরপর মৃতের মা সুভদ্রা মাহাত নিজেই সারা ঘর খুঁজে দেখেন। একটি বস্তায় হাত দিতেই তিনি বুঝতে পারেন, তাতে অস্বাভাবিক কিছু রয়েছে। সবকিছু বুঝে ওঠার আগেই চম্পট দেয় বাপ্পাদিত্য। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিস জানতে পারে, খুনের আগে ধর্ষণও করা হয় ওই নাবালিকাকে। দ্রুত অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে আদালতে চার্জশিট জমা দেয় পুলিস।
ধৃতের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২, ৩৭৬ (২, আই), ২০১, ৩৪১ ও পসকো অ্যাক্টের ৬ ধারায় মামলা রুজু হয়। সরকারপক্ষের আইনজীবী শীর্ষেন্দু মাইতি বলেন, নাবালিকাকে ধর্ষণের মামলায় ওই আত্মীয়ের বিরুদ্ধেই অভিযোগ দায়ের হয়। আদালত তাকে বৃহস্পতিবারই দোষী সাব্যস্ত করে। এরপর এদিন আদালত তার আজীবন সশ্রম কারাদণ্ড, সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। পসকো আদালতের সরকারি আইনজীবী গৌতম মল্লিক বলেন, ঘটনাটি সত্যিই বেদনার। সরকারপক্ষের তরফে কড়াভাবে এই মামলায় লড়ে যাওয়া হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই দুই পরিবারের সম্পর্ক একেবারেই স্বাভাবিক ছিল। বাপ্পাদিত্য বিবাহিত। তার একটি ছেলেও রয়েছে। প্রতিবেশী বিশ্বনাথ মুর্মু, ছত্রধর মাহাত বলেন, আজও আমরা ভাবতে পারি না, আমাদের গ্রামে এরকম একটি ঘটনা ঘটেছিল।