বিতর্ক বিবাদ এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। প্রেম পরিণয়ে মানসিক স্থিরতা নষ্ট। নানা উপায়ে অর্থ উপার্জনের সুযোগ। ... বিশদ
ধৃতের নাম নাম সঞ্জীব ঘোষ। তার বাড়ি হুগলির চুঁচুড়ায়। পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক মাস আগে কৃষ্ণনগর কোতোয়ালি থানার পাশের একটি ফ্ল্যাটে ঘাঁটি গাড়ে সঞ্জীব। পোস্ট অফিস মোড়ে থাকা একটি বেসরকারি গোল্ড লোন সংস্থার অফিসে তাকে দেখা গিয়েছিল একবার। শহরের বেকার যুবক-যুবতীদের সে অফিসার হিসেবে পরিচয় দিয়েছিল। অভিযোগ, সঞ্জীব টোপ দেয়, এই সংস্থার আরও একটি অফিস হবে কৃষ্ণনগরে। এর জন্য বেশ কয়েকজনকে নিয়োগ করা হবে। নতুন অফিসে চাকরি দেওয়ার নামে ২৫জন বেকার যুবক-যুবতীর কাছ থেকে সঞ্জীব পাঁচ হাজার করে টাকা নিয়েছিল বলে অভিযোগ। টাকা নেওয়ার পর নিজের ফ্ল্যাটে চাকরি প্রার্থীদের কয়েকদিন ট্রেনিং দেয়। ট্রেনিংয়ের সময় গোল্ড লোন সংস্থার লোগো ছিল। তাতে চাকরি প্রার্থীদের অনেকটা বিশ্বাস অর্জন করে।
বেকার যুবক-যুবতীদের অভিযোগ, পাঁচ হাজার টাকা নেওয়ার কয়েক দিন পর সবাইকে বলা হয়, মহিলাদের গোষ্ঠী তৈরি করতে হবে। যারা সাবান ও লজেন্স বিক্রি করবে। সাবান বাবদ ৫০টাকা ও লজেন্স বাবদ ১০০টাকা নেওয়া হয় মহিলা পিছু। এক-একজন চাকরিপ্রার্থী ১৬০জন মহিলার কাছ থেকে ওই টাকা আদায় করেন। সব মিলিয়ে ৪০০০জনের কাছ থেকে ১৫০টাকা করে আদায় করা হয়। সব টাকা নেয় সঞ্জীব।
৭জানুয়ারি ২৫জনকে চাকরির নিয়োগপত্র দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, সঞ্জীব কাউকেই নিয়োগপত্র দিতে পারেনি। তাদের বলা হয়, ১৬জানুয়ারি নিয়োগপত্র দেওয়া হবে। এরপরে চাকরি প্রার্থীদের সন্দেহ হয়। তাঁরা পোস্ট অফিস মোড়ের বেসরকারি গোল্ড লোন সংস্থার অফিসে গিয়ে জানতে পারেন, সঞ্জীব ঘোষ ওই অফিসের অফিসার নয়। ওই অফিসে একবার গোল্ড লোনের ব্যাপারে জানতে এসেছিল।
এটা জানার পরই ২৫জন বেকার যুবক-যুবতী মঙ্গলবার সঞ্জীবের ফ্ল্যাটে হানা দেন। সেখানে তাকে পাওয়া যায়নি। শুক্রবার সকালে স্টেশন পাড়া সংলগ্ন সুভাষনগরের একটি বাড়ি থেকে তাকে পাকড়াও করে যুবক-যুবতীরা। গণধোলাই দেওয়ার পর পুলিসের হাতে তুলে দেওয়া হয় তাকে।
পূজা দাস নামে এক যুবতী বলেন, আমাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে চাকরি দেওয়ার নামে ৫হাজার করে টাকা নিয়েছিল সঞ্জীব ঘোষ। ওই টাকা ডাক মারফৎ পেয়ে যাব বলে জানিয়েছিল। প্রত্যেককে মহিলা গোষ্ঠী তৈরি করতে বলে। প্রত্যেকের কাছ থেকে ১৫০ টাকা করে নেওয়া হয়। মহিলারা সাবান ও লজেন্স বিক্রি করবেন বলে জানিয়েছিলেন। ৪০০০জনের কাছ থেকে ১৫০টাকা করে নেওয়া হয়। আমাদের চাকরি দেওয়া তো দূরের কথা, পালিয়ে গিয়ে সুভাষনগরে আত্মগোপন করেছিল সঞ্জীব। আমরা তাকে ধরে পুলিসের হাতে তুলে দিয়েছি। পুলিসের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি।
অভিযুক্ত সঞ্জীব বলে, এখানে শেয়ার মার্কেট, গোল্ড লোনের একটা কোম্পানি করার জন্য অফিস করতে এসেছিলাম। ১০-১২জনের কাছ থেকে ৫বা ৬হাজার করে টাকা নিয়েছি। ১৬জানুয়ারি ওদের নিয়োগপত্র দেব বলে জানিয়েছিলাম। ২০-২২জনকে চাকরি দেওয়ার কথা ছিল। ওরা এখন টাকা ফেরত চাইছে। এখনও টাকা দিতে পারিনি।
জেলার পুলিস সুপার রূপেশ কুমার বলেন, চাকরি দেওয়ার নামে টাকা নেওয়ার অভিযোগে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।