বিদ্যার্থীদের বেশি শ্রম দিয়ে পঠন-পাঠন করা দরকার। কোনও সংস্থায় যুক্ত হলে বিদ্যায় বিস্তৃতি ঘটবে। কর্মপ্রার্থীরা ... বিশদ
রাশিয়ায় নেতাজির অবস্থানের ব্যাপারে কোনও নির্দিষ্ট তথ্য না জানানোয় সেই রাষ্ট্রে ভারতের এই মহান দেশপ্রেমিকের পরিণতি সম্পর্কে রটে থাকা যাবতীয় ‘গল্প’র অবসান ঘটবে কি না, সেনিয়ে অবশ্য পর্যবেক্ষকরা নিশ্চিত নন। তবে যারা রাশিয়ায় নেতাজিকে খুন করার তত্ত্বে বিশ্বাসী, তাদের কাছে নিঃসন্দেহে তা যথেষ্ট ধাক্কার বলে পর্যবেক্ষকদের অভিমত। নেতাজি গবেষকদের কাছেও রাশিয়া সরকারের এহেন অবস্থান নতুন করে ভাবনাচিন্তার জন্ম দেবে বলেও তাঁদের ধারণা। এমনকী, আগামীদিনে কমিউনিস্ট সরকারের জমানায় নেতাজির রাশিয়ায় অবস্থান ও তাঁর শেষ পরিণতি সম্পর্কে ওঠা বিতর্ক নিয়ে কেউ কেউ সিনেমা বানানোরও পরিকল্পনা করেছেন। তাঁদেরকেও এনিয়ে দু’বার ভাবতে হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
নেতাজিকে নিয়ে রাশিয়া সরকারের অবস্থানের বিষয়টি সম্প্রতি সামনে এসেছে এক বাঙালি সুভাষপ্রেমীর করা আরটিআই-এর পরিপ্রেক্ষিতে। মস্কোর ভারতীয় দূতাবাস থেকে সরাসরি এই তথ্য কলকাতা নিবাসী নেতাজি-গবেষক সায়ক সেনকে লিখিত আকারে জানানো হয়েছে আরটিআই মারফত করা প্রশ্নের উত্তরে। দূতাবাসের কাউন্সেলর (এইচওসি) অ্যান্ড অ্যাপিলেট অথরিটি টিজে সুরেশ সায়কবাবুকে জানিয়েছেন, নেতাজির বিষয়টি রাশিয়া সরকারকে বহুবার জানানো হয়েছে। বিভিন্ন পর্যায়ের সরকারি আলোচনায় বিষয়টি তোলা হয়েছে। এমনকী, বিদেশমন্ত্রীর স্তরেও একবার কথা হয়েছে। যদিও গোপনীয়তার কারণে এই সব আলোচনা বিস্তারিতভাবে প্রকাশ করা যাবে না। সর্বশেষ ২০১৭ সালের ৯ নভেম্বর রাশিয়ার বিদেশ মন্ত্রকের কাছে এবিষয়ে লিখিতভাবে জানতে চাওয়া হয়। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ভারতীয় দূতাবাসকে পাঠানো লিখিত উত্তরে রাশিয়া সরকার জানায়, ভারত সরকারের অনুরোধে অতিরিক্ত তদন্ত চালিয়েও ১৯৪৫ সালের ১৮ আগস্টের পর সুভাষচন্দ্রের সে দেশে থাকা বা পরিণতি নিয়ে কোনও নথি বা তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। উল্লেখ্য, টিজে সুরেশের পাঠানো উত্তরের সঙ্গে রাশিয়া সরকারের সেই চিঠির কপিও জুড়ে দেওয়া হয়েছে সায়কবাবুর কাছে।
ভারতীয় দূতাবাসের তরফে সায়কবাবুকে পাঠানো এই নথি সম্বলিত উত্তরের পরিপ্রেক্ষিতে রাশিয়ায় নেতাজির অবস্থান নিয়ে কোনও প্রামাণ্য তথ্য সরকারিভাবে পাওয়া যাবে না বলেই ধরে নিয়েছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। কূটনৈতিক কারণেই সম্ভবত রাশিয়া এই ধরনের অবস্থান নিয়েছে বলে তাঁদের অনুমান। তবে সায়কবাবু বলেছেন, কিছুদিন আগে সংসদে দেওয়া বিদেশ প্রতিমন্ত্রী ভি মুরলীধরণ এই মর্মে একটি বিবৃতি দিয়েছিলেন। তার পরিপ্রেক্ষিতেই তিনি সরাসরি মস্কোর দূতাবাসের কাছে আরটিআই করেন। এখন রাশিয়া সরকারের নথি জুড়ে পাঠানো উত্তরে কেন্দ্র বুঝিয়ে দিল যে, নেতাজির রাশিয়ায় থাকা বা চরম পরিণতি নিয়ে যা কিছু রটনা রয়েছে, তার পিছনে কোনও নির্দিষ্ট ভিত্তি নেই। তবে দুই সরকারের মধ্যে এই ইস্যুতে হওয়া দফাওয়ারি আলোচনার তথ্য আড়াল করার পাশাপাশি গত দেড় বছরে এবিষয়ে আর কোনও উচ্চবাচ্য না করায় ভারত সরকারের ভূমিকাও বিতর্কের ঊর্ধ্বে নয়।