দক্ষিণবঙ্গ

সংগ্রামীদের গোপন আখড়া নেপপাড়ার জ্ঞানানন্দ মঠ

গণেশ মজুমদার, কালনা: স্বাধীনতা আন্দোলনের ঢেউ আছড়ে পড়েছিল কালনাতেও। কালনা শহর ও প্রত্যন্ত গ্রামে স্বাধীনতা আন্দোলনের নানা ইতিহাস ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। কালনায় স্বাধীনতা সংগ্রামীদের গোপন আখড়া ছিল নেপপাড়ার জ্ঞানানন্দ মঠ। মঠের প্রতিষ্ঠাতা স্বামী নিত্য গৌরবানন্দ ছিলেন একাধারে আধ্যাত্বিক চেতনার মানুষ। অন্যদিকে দেশ মাতৃকাকে শৃঙ্খল মুক্ত করতে স্বাধীনতা অন্দোলনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অংশ গ্রহণ করেছিলেন। এলাকার যুবকদের একত্রিত করে স্বাধীনতা আন্দোলনে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে তিনি সোচ্চার হয়ে ছিলেন। 
আশ্রমিকদের কথায়, শুধু আন্দোলনের কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে সংগ্রামী ভাবধারা সীমাবদ্ধ ছিল না। বন জঙ্গলে ঘেরা মঠের আঠারো বিঘা জমিতে চলত শরীর গঠনের কসরত, লাঠি খেলা। যোগ সাধনা। বন জঙ্গলে ঘেরা মঠে স্বাধীনতার আন্দোলনের পাঠ তে শেখানো হতো, বাইরে থেকে তা বোঝার উপায় ছিল না। ইংরেজরাও টের পায়নি। স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশ গ্রহণকারী দেশপ্রেমীদের কাছে গোপন আস্থানা হিসেবে গড়ে উঠেছিল জ্ঞানানন্দ মঠ।
স্বামী নিত্য গৌরবানন্দর সঙ্গে যোগাযোগ ছিল নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু সহ আরও বাংলার প্রথম সারির স্বাধীনতা সংগ্রামীদের। ১৯৩০ সালে নেতাজি আসেন জ্ঞানানন্দ মঠে। একদিন দুই রাত্রি তিনি মঠে কাটান। দিনে ভাত ও রাতে রুটি খেয়েছেন। স্বাধীনতার আন্দোলনের বিষয়ে নিত্য গৌরবানন্দ সহ অন্যান্য স্বাধীনতা সংগ্রামীদের সঙ্গে আলোচনা করেন। মঠে নেতাজির আগমনের কথা জানতে পেরে যায় ব্রিটিশরা। রোশানলে পড়েন স্বামী নিত্যগৌরবানন্দ। নিত্যগৌরবানন্দের সাংগঠনিক ক্ষমতা ও আন্দোলনের সহযোগিতায় ভয় পেয়ে যায় ব্রিটিশরা। ১৯৩০ সালে জুলাই মাস নাগাদ ব্রিটিশরা তাঁকে গ্রেপ্তার করে দমদম সেন্টাল জেলে নিয়ে যায়। জেলে বসেই স্বামী নিত্যগৌরবানন্দ মঠের এক আশ্রমিককে পোস্ট কার্ডে চিঠি লিখে সকলকে সাহস জুগিয়ে ছিলেন। সেই চিঠি আজও মঠে সংরক্ষিত আছে। জীবদশায় তিনি দেশের স্বাধীনতা তিনি দেখে যেতে পারেননি। তবে তিনি বুঝতে পেরেছিলেন ভারতমাতার শৃঙ্খল মুক্ত হতে আর বেশি দেরি নেই। তাই মৃত্যুর আগে পর্যন্ত শিষ্য ও স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত দেশপ্রেমী যুবদের বলতেন, দেশে শীঘ্রই স্বাধীনতার সূর্য উঠবে। পরাধীনতার মুক্তি ঘটবে।  
১৯৪২ সালে ৫৩ বছর বয়সে স্বামী নিত্যগৌরবানন্দ ইহলোক ত্যাগ করেন। আজও কালনা হাসপাতালের উল্টোদিকে এসটিকেকে রোডের ধারে নেপপাড়ায় জ্ঞানানন্দ মঠে নেতাজির ব্যবহৃত চৌকি, চেয়ার টেবিল সংরক্ষিত আছে। সারা বছর আশ্রমের ভক্ত থেকে সাধারণ মানুষ জ্ঞানানন্দ মঠে  আসেন। ঘুরে দেখেন নেতাজির ব্যবহৃত সামগ্রী। ১৫ আগস্ট, ২৬ জানুয়ারি থেকে নেতাজির জন্ম দিবস সাড়ম্বরে পালিত হয় মঠ প্রাঙ্গণে। হাজিন হন সমাজের বিশিষ্ঠরা। প্রতি বছর মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ মঠে এসে নেতাজির মূর্তিতে শ্রদ্ধা জানান। নেতাজি স্মৃতি রক্ষায় মঠের প্রবেশ দ্বারে তোরণ তৈরি করা হয়েছে।
মঠের বর্তমান মহারাজ নিত্যপ্রেমানন্দ অবধুত বলেন, সংরক্ষণের অভাবে বহু প্রাচীন চিঠি, বই ও পাণ্ডুলিপি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। নেতাজির পদ ধূলিতে ধন্য মঠে তাঁর ব্যবহৃত চেয়ার টেবিল ও ঘুমানোর চৌকি স্মৃতি হিসেবে সংগ্রহশালা করা হয়েছে। আমরা চাই মঠের উন্নয়নে বেসরকারি বা সরকারি উদ্যোগ নেওয়া হোক।
1Month ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

অতিরিক্ত কর্মের চাপ গ্রহণ করে বেকায়দায় পড়তে পারেন। নতুন কর্মলাভের সম্ভাবনা। আয় বাড়বে।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮২.৬৮ টাকা৮৪.৪২ টাকা
পাউন্ড১০৯.৫৩ টাকা১১৩.১১ টাকা
ইউরো৯১.৭৫ টাকা৯৪.৯৫ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
21st     September,   2024
দিন পঞ্জিকা