দক্ষিণবঙ্গ

বিপ্লবী বিমলপ্রতিভা দেবী শেষজীবন কাটান হীরাপুরে

সুমন তেওয়ারি, আসানসোল: ভগৎ সিংয়ের স্নেহভাজন বিপ্লবী বিমলপ্রতিভা দেবীর স্মৃতিচিহ্ন মুছে গিয়েছে শিল্পাঞ্চল থেকে। ভগৎ সিং যখন নওজওয়ান সভার জাতীয় সভাপতি তখন প্রদেশ সভাপতির দায়িত্ব সামলেছেন বিমলপ্রতিভাদেবী। অসহযোগ আন্দোলন থেকে ভারত ছাড়ো আন্দোলনের নেত্রীর শেষ জীবন কেটে ছিল শিল্পাঞ্চলের হীরাপুর থানার দামোদরের পাড়ে। নিঃসঙ্গ জীবনের সেই স্মৃতিচিহ্নটুকু রক্ষা করার তাগিদ নেই কারও। কুমিল্লায় ম্যাজিস্ট্রেটকে হত্যা ও বিপ্লবীদের অর্থ সংগ্রহের জন্য ডাকাতির মতো অভিযোগ এনে ইংরেজরা তাঁকে ছ’বছর জেলে রেখেছিল। ওই মহিলা বিপ্লবীর গুণগান করেই দায় সেরেছে কেন্দ্রীয় সরকারও। স্বাধীনতার ৭৫ তম বর্ষ উপলক্ষ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় অমৃত মহোৎসব পেজে কেন্দ্রীয় সরকার বীর স্বাধীনতা সংগ্রামী হিসেবেই তুলে ধরেছে তাঁকে। কিন্তু তাঁর স্মৃতি রক্ষায় কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। 
১৯০১সালের ওড়িশার কটকে বাঙালি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। বাবা সুরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় সরাসরি না হলেও বিপ্লবীদের নানাভাবে সাহায্য করতেন। বাড়ির সেই মেয়ের মনে তখন থেকেই বিপ্লবের বীজ বিকশিত হতে থাকে। মেয়ের আচরণের বদল দেখেই তাঁকে সংসারী করে বিপ্লবীর জ্বর নামাতে উদ্যোগী হয় সম্ভ্রান্ত পরিবারটি। কলকাতার চারুচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর বিয়ে দেওয়া হয়। ঘরের মেয়েরা বিপ্লবী আন্দোলনে অংশ নিক, তা পছন্দ করত না ওই পরিবার। যাঁর মনে একবার স্বাধীনতা সংগ্রমের বীজ বপণ হয়েছে তাঁকে কী সংসারের বাঁধন আটকাতে পারে! ১৯১৮সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে বিপ্লবী কর্মকাণ্ডে সরাসরি যুক্ত হয়ে যান তিনি। নানা বিপ্লবীর সংস্পর্শে আসেন। যোগ দেন জাতীয় কংগ্রেসে। পাশাপাশি তিনি দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাসের বোন উর্মিলাদেবীর নারী কর্মমন্দির সংগঠনেও যুক্ত হন। কংগ্রেসে যোগ দিলেও বিমলপ্রতিভাদেবী সশস্ত্র বিপ্লবের পক্ষেই ছিলেন। তখনই বিপ্লবী ভগৎ সিংয়ের নজরে পড়েন। মহান এই দেশনায়ক তাঁকে ডেকে পাঠান। তারপর থেকেই তিনি ভগৎ সিংয়ের গঠিত নওজওয়ান সভার সদস্য হয়ে যান। সাধারণ সদস্য থেকে যোগ্যতাবলে কয়েক বছরের মধ্যেই ১৯২৭ সালে তিনি প্রদেশ সভাপতি হয়ে যান। চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠনের জন্য অর্থ সংগ্রহও করতে থাকেন। বিপ্লবীদের অর্থ সাহায্য করার জন্য নানা পন্থা অবলম্বন করেছিলেন তিনি। ১৯৩০ সালে ত্রিপুরায় কংগ্রেসের অধিবেশনে যোগ দেওয়া সময় ডাকাতির মামলায় ইংরেজরা তাঁকে গ্রেপ্তার করে। পরে ১৯৩১ সালে ম্যাজিস্ট্রেটকে খুনের মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। এত মামলা ও গ্রেপ্তারি সত্ত্বেও তাঁকে অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দেওয়া থেকে আটকানো যায়নি। ১৯৪২সালে ভারতছাড়ো আন্দোলনে যোগ দেওয়ার পর ১৯৪৫সাল পর্যন্ত ব্রিটিশ সেনাবাহিনী তাঁকে জেলে বন্দি করে। তিনি ফরওয়ার্ড ব্লকেও যোগদান করেন। ১৯৪৫সালেই তিনি স্বামী ও পুত্রহারা হন। 
এরপর থেকে তাঁর দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু হয়। জানা যায়, তিনি রানিগঞ্জ খনি অঞ্চলের বস্তিতে চলে আসেন। সেখানে ‌ইং঩রেজদের অত্যাচার হলেই ছুটে যেতেন। ঘোড়ায় চেপে কোমরে বন্দুক গুঁজে অন্য হাতে চাবুক নিয়ে তিনি এপ্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে প্রতিবাদ করতেন। কার্যত ইংরেজদের ঘুম কেড়ে নেন। পরে দেশ স্বাধীন হওয়ায় পর তিনি কার্যত অজ্ঞাতবাসে চলে যান। সেইসময় হীরাপুর থানার নির্জন সূর্যনগর-ঢাকেশ্বরী এলাকায় জঙ্গল ঘেরা এলাকায় একটি বাড়িতে বসবাস শুরু করেন। বাম শ্রমিক আন্দোলনের সঙ্গে ওতোপ্রতোতভাবে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৭৮ সালে এখানেই মারা যান। যদিও বামেরা তাঁর নামে একটি রাস্তার নামকরণ ছাড়া কিছুই করেনি। তৃণমূল সরকার বা পুরসভাও তাঁর স্মৃতি রক্ষায় উদ্যোগী হয়নি। এলাকার বিধায়ক বিজেপির অগ্নিমিত্রা পল বলেন, বিষয়টি আমার নজরে ছিল না। নিশ্চয়ই উদ্যোগী হব।
কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বিমলপ্রতিভাদেবীর স্মৃতি রক্ষা করা স্বাধীন দেশবাসীর কর্তব্য। চিকিৎসক অরুনাভ সেনগুপ্ত বলেন, জেলে বসেই ঩তিনি একাধিক বই লিখেছেন। তিনি আমাদের শিল্পাঞ্চলের গর্ব।-নিজস্ব চিত্র
28d ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

যে কোনও ব্যবসায়িক কর্মে অতিরিক্ত অর্থলাভের প্রবল সম্ভাবনা। শিল্পীদের পক্ষে শুভদিন।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.১৪ টাকা৮৪.৮৮ টাকা
পাউন্ড১০৮.২৩ টাকা১১১.৭৮ টাকা
ইউরো৯১.১৫ টাকা৯৪.৩৪ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা