সম্পাদকীয়

বেচারা নকলনবিশরা

২০২১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মানবিক সরকার বাংলার মেয়েদের জন্য ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ প্রকল্প চালু করেছিল। মূলত গরিব মহিলাদের আর্থিকভাবে অধিক সনির্ভর করে তোলাই ছিল মুখ্যমন্ত্রীর এই অনবদ্য ভাবনার নেপথ্যে। প্রকল্পটি গৃহীত হওয়ার পর থেকে বেনিফিসিয়ারি বা সুবিধাপ্রাপকের সংখ্যা বেড়েছে ধাপে ধাপে। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রাপকের সংখ্যাটি এখন ২ কোটি ১৬ লক্ষের কাছাকাছি। এই প্রকল্পে রাজ্য সরকার এখনও পর্যন্ত ৪০ হাজার কোটি টাকার মতো খরচ করে ফেলেছে। প্রকল্পটির জনপ্রিয়তার কথা এখন আর উপেক্ষা করতে পারে না দেশের ডান, বাম কোনও দলই। ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে কিংবা ফিরে পেতে রাজ্যে রাজ্যে বিজেপিও এই প্রকল্প আঁকড়ে ধরেছে। বিজেপি পরিচালিত একাধিক রাজ্য সরকার মমতার লক্ষ্মীর ভাণ্ডার টুকে নতুন প্রকল্প চালু করছে। সব মিলিয়ে মমতার সরকারের অপব্যয়ের যে গেরুয়া তত্ত্ব বিজেপি চালাতে চেয়েছিল, সেটা তারা নিজ হাতেই শিকেয় তুলে রেখেছে। পদ্মপার্টির নানা স্তরের নেতাকে এখন ভোটের ময়দানে উল্টে গলাবাজি করতে হচ্ছে, ‘আমরা ক্ষমতা পেলে মহিলাদের সরাসরি আর্থিক সহায়তার পরিমাণ দ্বিগুণ করে দেব’! ফেলা থুতু চাটার এর চেয়ে নিকৃষ্ট নিদর্শন ভারতীয় রাজনীতি যে কমই দেখেছে, তাতে সন্দেহ কী?
তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ইনক্লুসিভ পলিটিক্স’ শুধুমাত্র পূর্ণবয়স্ক মহিলাদের কথাই ভাবেনি, সমাজের অন্যসকল দুর্বল মানুষের কথাও ভেবে থাকে সমানভাবে। যেমন স্কুল-কলেজ পড়ুয়া মেয়েরা পায় কন্যাশ্রী প্রকল্পের সহায়তা। বিবাহযোগ্য তরুণীদের দেওয়া হয় রূপশ্রী প্রকল্পের টাকা। এর বাইরে রয়েছে ৬০ বছর বা তদূর্ধ্ব মহিলাদের জন্য বয়স্ক বা বার্ধক্য ভাতার সুবিধা। এমনকী বার্ধক্য ভাতার বেনিফিসিয়ারা হলেন লিঙ্গনির্বিশেষে সব শ্রেণির বয়স্ক মানুষ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়দের সরকার ২০২১ সালে সমস্ত দপ্তরের বার্ধক্য ভাতা ‘জয় বাংলা’ নামক একটি ছাতার নীচে নিয়ে এসেছে। মাসিক বার্ধক্য ভাতা বেড়ে বেড়ে এখন এক হাজার টাকায় উন্নীত হয়েছে। গত তিনবছরে প্রায় এক কোটি মানুষকে জয় বাংলার অধীনে আনা হয়েছে। বিধবা এবং বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন নাগরিকদেরকেও রাজ্য সরকার এই প্রকল্প মারফত প্রতিমাসে নিয়ম করে পর্যাপ্ত ভাতা দিয়ে থাকে।
বুধবার ছিল বাংলাজুড়ে কোজাগরী লক্ষ্মী পুজো। ওই বিশেষ দিনে নবান্ন থেকে বাংলার লক্ষ্মী মায়েদের পাশাপাশি অন্য দুর্বল শ্রেণির জন্যও দেওয়া হয়েছে বিরাট সুখবর। রাজ্যের নিয়মিত বার্ধক্য ভাতার তালিকায় এবার যুক্ত হবেন প্রায় দেড় লক্ষ নতুন উপভোক্তা। পুজোর ছুটির পর রাজ্য সরকারি অফিস খুললেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। ২০২১ সালে পঞ্চায়েত, সমাজকল্যাণ, কৃষিসহ বিভিন্ন দপ্তরের আওতাধীন একগুচ্ছ প্রকল্পকে একছাতার তলায় এনে ‘জয় বাংলা’ নাম দেয় রাজ্য সরকার। এর মধ্যে রয়েছে জয় জোহার, তফসিলি বন্ধু, বিধবা ভাতা, মানবিক, ওল্ড এজ পেনশন, বয়স্ক তাঁতিদের পেনশন, বয়স্ক শিল্পীদের পেনশন, প্রবীণ মৎস্যজীবীদের পেনশন এবং বয়স্ক কৃষকদের পেনশন প্রকল্প। তখনই এসব প্রকল্পের মাসিক ভাতা বাড়িয়ে এক হাজার টাকা করা হয়। বর্তমানে ‘জয় বাংলা’ প্রকল্পের আওতায় রাজ্যের প্রায় এক কোটি মানুষ বার্ধক্য ভাতা, বিধবা ভাতা এবং বিশেষভাবে সক্ষম নাগরিকরা প্রতিমাসে ১০০০ টাকা হারে ভাতা পেয়ে থাকেন। এই টাকার মধ্যে ন্যাশনাল সোশ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স প্রোগ্রামের (এনএসএপি) অধীনে যৎসামান্য কিছু দেয় কেন্দ্র। তবু তা নিয়েই মোদি সরকারের হাঁকডাকের বহর বিরাট! রাজ্যের এই ভাতা নতুন করে কারা পাবেন, তা চূড়ান্ত করতে পুজোর আগেই প্রয়োজনীয় সমীক্ষার কাজ শেষ করা হয়েছে। তার ভিত্তিতেই প্রায় দেড় লক্ষ প্রবীণ নাগরিককে বার্ধক্য ভাতার উপভোক্তা তালিকায় আনার সুযোগ তৈরি হয়েছে। রাজ্যের সামাজিক সহায়তা প্রকল্পগুলির সুবিধা স্বচ্ছতার সঙ্গে সর্বাধিক সংখ্যক দুর্বল মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়াই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের প্রধান লক্ষ্য। সেই কাজটি যে পদ্ধতিতে এবং যতটা দ্রুততার সঙ্গে চলছে, তার জন্য কোনও প্রশংসাই যথেষ্ট নয়। কোনও সংশয়ের অবকাশ নেই যে, রাজ্যের শাসক দল মানুষের প্রাণঢালা আশীর্বাদ বার বার পাচ্ছে এই কারণেই। বিষয়টি বিলম্বে হলেও অনুধাবন করে বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেসসহ সমস্ত কুচুটে রাজনৈতিক দল বাংলার জননেত্রীর অনবদ্য প্রকল্প-ভাবনার বিরুদ্ধাচারণে অবশেষে ক্ষান্ত দিয়েছে। ভোট কুড়োবার জন্য তারাই এখন বেচারা নকলনবিশের ভূমিকায়!
4h 4m ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে বাধায় চিন্তা ও উদ্বেগ। বেকারদের ভালো প্রতিষ্ঠানে কর্মপ্রাপ্তির প্রবল যোগ।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.২৩ টাকা৮৪.৯৭ টাকা
পাউন্ড১০৮.০৬ টাকা১১১.৮৬ টাকা
ইউরো৮৯.৯১ টাকা৯৩.৩২ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
17th     October,   2024
দিন পঞ্জিকা