সম্পাদকীয়

পাক সফরে ভারতের অবস্থান স্পষ্ট

ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে অচলায়তন কি কাটতে চলেছে? সেই প্রশ্ন তুলেই আগামী ১৫-১৬ অক্টোবর সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশনের শীর্ষ বৈঠকে যোগ দিতে ইসলামাবাদ যাচ্ছেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। দুই প্রতিবেশী দেশের কয়েক যুগের পাথরচাপা সম্পর্ক কি টলবে জয়শঙ্করের এই সফরে? কারণ দীর্ঘ নয় বছর পর কোনও ভারতীয় বিদেশমন্ত্রী পা রাখতে চলেছেন পড়শি দেশ পাকিস্তানে। এর আগে ২০১৫ সালে শেষ বার পাকিস্তানে গিয়েছিলেন তৎকালীন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। এবার সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশনের সভাপতিত্ব করছে পাকিস্তান। তাই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। কিন্তু, মোদি পাকিস্তানে যাচ্ছেন না, তাঁর জায়গায় শীর্ষ বৈঠকে যোগ দিতে যাচ্ছেন বিদেশমন্ত্রী। এসসিও-র সম্মেলনে কোনও দেশের রাষ্ট্রনেতাকেই উপস্থিত থাকতে হবে, এমন কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। এর আগের এসসিও সম্মেলনে গোয়ায় এসেছিলেন পাক বিদেশমন্ত্রী বিলাওল জারদারি ভুট্টো। সাউথ ব্লক সূত্রের খবর, শুধু মাত্র পাকিস্তানকে এড়ানোর জন্য রাশিয়া-চীনসহ ১০টি গুরুত্বপূর্ণ ইউরোশিয়া রাষ্ট্রের সঙ্গে সংযোগকে ছিন্ন করা উচিত হবে না বলেই মনে করছে ভারত সরকার। তবে বিদেশ মন্ত্রকের তরফে এ-ও জানানো হয়েছে যে, পাকিস্তানে শুধু সম্মেলনেই যোগ দেবে প্রতিনিধি দল। প্রতিবেশী দেশের সরকারের সঙ্গে ভারতের দ্বিপাক্ষিক কোনও বৈঠকে বসার সম্ভাবনা নেই।
১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার পর থেকেই ভারত-পাকিস্তান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের কোনও দিন উন্নতি হয়নি। বিশেষত পাক অধিকৃত কাশ্মীর ও কাশ্মীরের আজাদি নিয়ে বছরের পর বছর ধরে দু’দেশের মধ্যে আলোচনায় বরফ গলেনি। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে পুলওয়ামা হামলার পর থেকে দুই দেশের সম্পর্কে বিরাট ফাটল ধরে। ওই ঘটনার পরে পাকিস্তানের বালাকোটে ঢুকে জঙ্গি গোষ্ঠীর প্রশিক্ষণ শিবিরে হামলা চালায় ভারতীয় সেনা। ওই বছরের আগস্টেই কাশ্মীর থেকে অনুচ্ছেদ ৩৭০ তুলে নেওয়ার মাধ্যমে বিশেষ মর্যাদা লোপ করার পর পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক আরও তলানিতে নামে। পাকিস্তান ভারতের রাষ্ট্রদূতকে ফিরিয়ে দিয়ে কার্যত সমস্ত কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে। ভারত অবশ্য নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে জানিয়ে দেয়, জম্মু ও কাশ্মীর দেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাই এই অঞ্চল নিয়ে যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার তাদের হাতেই রয়েছে। এই নিয়ে পাকিস্তানের মতামত থাকতে পারে না। তার উপর কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে পাক বাহিনী ও তাদের চর সংস্থা আইএসআইয়ের প্রত্যক্ষ যোগের অসংখ্য প্রমাণ দিয়েছে ভারত। শুধু তাই নয়, পাকিস্তানের জমিকে ব্যবহার করে আন্তর্জাতিক জঙ্গিরা ভারত বিরোধী কাজকারবার চালিয়ে গিয়েছে। যদিও কোনও অভিযোগই পাকিস্তান মানতে চায়নি।
সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে সঙ্গত কারণেই নয়াদিল্লি একচুল পিছু হটতে নারাজ। বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেই রেখেছেন, পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো করতে গিয়ে আমরা কখনওই সন্ত্রাসবাদকে উপেক্ষা করতে পারি না। পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদ শিল্পের পর্যায়ে পৌঁছেছে। ভারত কোনওভাবেই এ ধরনের হুমকি বরদাস্ত করবে না। পাকিস্তান বরাবর আন্তর্জাতিক সীমান্তে সন্ত্রাসমূলক কর্মকাণ্ড ঘটিয়ে ভারতকে আলোচনার টেবিলে বসানোর চেষ্টা করেছে। কিন্তু সন্ত্রাসবাদ প্রসঙ্গে ভারত কখনওই আলোচনায় বসবে না। সন্ত্রাসবাদকে প্রশ্রয় দিয়ে কিছু দেশ এমন পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে যা তাদের আর নিয়ন্ত্রণে নেই। তার অন্যতম উদাহরণ প্রতিবেশী পাকিস্তান। তাদের কুকাজের ফল অন্যদের, বিশেষত প্রতিবেশীদের ভুগতে হয়। পাকিস্তানের নীতির ফলে তাদের সমাজে ধর্মান্ধতা দেখা দিয়েছে। ফলে তাদের জিডিপি মাপা যায় মৌলবাদ দিয়ে। আর তাদের রপ্তানির পরিমাপ হয় সন্ত্রাসে। ওই মৌলবাদ তাদের সমাজকেই গ্রাস করেছে। এটা তাদের কৃতকর্মেরই ফল। যদিও কূটনৈতিক মহলের মতে, পাকিস্তানের সঙ্গে আমাদের বহু বছরের পুরনো আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদের সমস্যা রয়েছে। তাই সেই সমস্যা সমাধানের পথ খুঁজতেই হবে। ভারতের লক্ষ্য সীমান্তে শান্তি বজায় রাখা। দীর্ঘ দিন ধরেই ভারত এবং পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে শীতলতা রয়েছে। চলতি বছরে দুই দেশে নতুন সরকার এলেও সেই শীতলতা কাটেনি। তবে আগামী দিনে বরফ গলার আশা রয়েছে। জয়শঙ্কর শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানে গেলে প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সম্পর্ক কিছুটা হলেও হয়তো সহজ হবে। সম্প্রতি নিউ ইয়র্কে একটি আলোচনায় বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্করও ভারতের সঙ্গে এসসিওভুক্ত রাষ্ট্রগুলির সংযোগের সুফলকে তুলে ধরেছেন। তাঁর কথায়, ‘চরমপন্থা এবং সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয় এসসিও। এই নীতিতেই এসসিও-র যাত্রা শুরু হয়েছিল। আঞ্চলিক স্থায়িত্ব ও সমৃদ্ধির জন্য সাংহাই কোঅপারেশন অর্গ্যানাইজেশন (এসসিও)-এর সদস্যদের উচিত একসঙ্গে কাজ করা।’ আর তাই প্রতিবেশীকে এড়িয়ে যাওয়া নয়, বরং দ্বিপাক্ষিক বল পাকিস্তানের কোর্টে ঠেলে দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বহুপাক্ষিক প্রতিশ্রুতিগুলি পূরণ করার সুযোগ হাতছাড়া করতে নারাজ ভারত।
12d ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে বাধায় চিন্তা ও উদ্বেগ। বেকারদের ভালো প্রতিষ্ঠানে কর্মপ্রাপ্তির প্রবল যোগ।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.২৩ টাকা৮৪.৯৭ টাকা
পাউন্ড১০৮.০৬ টাকা১১১.৮৬ টাকা
ইউরো৮৯.৯১ টাকা৯৩.৩২ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
17th     October,   2024
দিন পঞ্জিকা