পিতার স্বাস্থ্যহানী হতে পারে। আর্থিক ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় অর্থের অভাব হবে না। পঠন-পাঠনে পরিশ্রমী হলে সফলতা ... বিশদ
দ্বিতীয় দিনের অনুষ্ঠান শুরু করেন মৌসুমী ভট্টাচার্য শ্যাম কল্যাণ রাগে বিলম্বিত একতাল ও দ্রুত তিনতালে দুটি চমৎকার বন্দিশ গেয়ে। বন্দিশ দুটিই বিপ্লব ভট্টাচার্যের রচনা। বিপ্লবের তবলা সঙ্গত অনবদ্য। পণ্ডিত অরুণ ভাদুড়ীর সুরে মিশ্র মাণ্ড রাগে একটি মীরার ভজন গেয়ে শিল্পী তাঁর অনুষ্ঠান শেষ করেন। হারমোনিয়ামে রতন ভট্টাচার্য আগাগোড়া নির্ভরতা দেন। পরবর্তী ও শেষ শিল্পী তীর্থঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় রামদাসী মল্লার রাগে আলাপ, জোড় এবং ঝালার পর নায়কি কানাড়াতে যথাক্রমে মধ্যলয় ও দ্রুত তিনতালে দুটি বন্দিশ বাজিয়ে শোনান। দুটি গান্ধার ও নিষাদের সঠিক প্রয়োগ রাগরূপ উদ্ভাসিত করে। শেষ নিবেদন ছিল মিশ্র মাণ্ড। তবলায় বিপ্লব ভট্টাচার্যের বুদ্ধিদীপ্ত ও পরিমিত তবলাসঙ্গত উল্লেখ্য।
সম্মেলনের তৃতীয় দিনের একমাত্র শিল্পী ছিলেন প্রখ্যাত বংশীবাদক রাজেন্দ্র প্রসন্ন। বাঁশিতে স্বল্পশ্রুত শ্রী এবং সুরমল্লার শোনা উপরি পাওনা। ছোট আলাপের পর শিল্পী প্রথমে একতাল ও পরে তিনতালে গৎ বাজিয়ে শোনান। সুরদাসী মল্লারে তিনতাল বন্দিশের পর যথাক্রমে কাজরী, একটি ভজন ও সর্বশেষে ভৈরবী বাজিয়ে এদিনের অনুষ্ঠান শেষ করেন। অসাধারণ সুরেলা,গায়কী অঙ্গের বাজনা শ্রোতারা প্রাণভরে উপভোগ করেন। তবলায় অশোক মুখোপাধ্যায় এবং বাঁশিতে অভিজিৎ চক্রবর্তী বিশ্বস্ত সহযোগিতা করেন।
চতুর্থ দিনে বিদুষী শুভ্রা গুহের সুযোগ্য শিষ্যা সংযুক্তা বিশ্বাস ও সাবিনা মুমতাজ ইসলামের দ্বৈত কণ্ঠসঙ্গীতের সূচনায় বহুশ্রুত নন্দ এ মধ্যলয় এবং পরে দেশ, গৌড় মল্লার, মিশ্র কাফি ঠুমরি, ঝুলা এবং রাগ ভৈরবীতে টপ্পা ও ভজন গেয়ে এদিনের অনুষ্ঠান শেষ করেন। শিল্পীদ্বয়কে তবলায় অশোক মুখোপাধ্যায় এবং হারমোনিয়ামে হিরণ্ময় মিত্র সুন্দর সঙ্গত করেন।
পঞ্চম ও শেষ দিনের অনুষ্ঠানের প্রথম শিল্পী ছিলেন সরোদিয়া সিদ্ধার্থ ভোসে। মুলতানি রাগে আলাপ, জোড় এবং ঝালার পর প্রথমে বিলম্বিত ও পরে তিনতালে দুটি গৎ পরিবেশন করেন। শিল্পীর হাতের টিপও তৈয়ারি লক্ষণীয়। ধন ধান্য পুষ্পে ভরা গানটি বাজিয়ে শিল্পী অনুষ্ঠান শেষ করেন। প্রতিশ্রুতিমান তবলিয়া সৌরভ গোহর তবলাসঙ্গত প্রশংসনীয়। সম্মেলনের শেষ শিল্পী ছিলেন জয়পুর অত্রঅলি ঘরানার অত্যন্ত প্রতিশ্রুতিমান কণ্ঠসঙ্গীতশিল্পী রুচিরা কেদার। শিল্পী তিনখানি বন্দিশ পরিবেশন করেন। পরবর্তী নিবেদনে বসন্ত রাগে দুটি বন্দিশ এবং শেষে একটি কাজরী এবং রাগ ভৈরবীতে একটি মারাঠি আভঙ্গ গীত গেয়ে এদিনের তথা সম্মেলনের অনুষ্ঠানের পরিসমাপ্তি করেন। তবলায় সুজিত সাহা এবং হারমোনিয়ামে প্রদীপ পালিতের সঙ্গত শিল্পীকে আগাগোড়া নির্ভরতা দেয়। পরিশেষে একটি কথা বলতেই হয়, সঙ্গীতসাধক যদুভট্টের স্মৃতিবিজড়িত এই মন্দির প্রাঙ্গনে দেড়শো বছরেরও বেশি সময় ধরে এই নিরবচ্ছিন্ন শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের আসর অত্যন্ত সফলভাবে উপস্থাপিত করার জন্য ঝুলনবাড়ির সকল সদস্যের অকুণ্ঠ সাধুবাদ প্রাপ্য।
অমিত চক্রবর্তী ছবি : প্রতিবেদক