বিতর্ক বিবাদ এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। প্রেম পরিণয়ে মানসিক স্থিরতা নষ্ট। নানা উপায়ে অর্থ উপার্জনের সুযোগ। ... বিশদ
তাহলে এই প্রথম কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় সিক্যুয়েল বানালেন।
(হেসে) ঘটনাচক্রে বানিয়ে ফেললাম। একটা বড় গল্পের ছোট্ট অংশ নিয়ে ‘বিসর্জন’ তৈরি হয়েছিল। দর্শক বারবার চরিত্রগুলোর জীবন সম্পর্কে জানতে চাইছিলেন। তবে ‘বিজয়া’ যেখানে শেষ হবে সেখানেও কিন্তু প্রচুর প্রশ্ন থেকে যাবে যার উত্তর হয়তো আবার পরে পাওয়া যাবে। দায়িত্ব নিয়ে বলছি আমার কাছে ‘বিসর্জন’ এর তুলনায় অন্তত তিনগুণ প্রিয় ছবি ‘বিজয়া’।
‘বিসর্জন’ এর সিক্যুয়েল কি একজন শিল্পীর আবেগের ফল নাকি সুপরিকল্পিত ব্যবসায়িক ফল?
ছবি মানেই তার সঙ্গে ব্যবসা জড়িয়ে থাকে। আমাদের আশা ‘বিসর্জন’ যখন দর্শকের এত পছন্দ হয়েছে তাহলে নিশ্চয়ই ‘বিজয়া’ও পছন্দ হবে। বলা যায় ‘বিসর্জন’ এর সাফল্য ‘বিজয়া’ বানাতে আমাদের অনেকটা নিরাপত্তা দিয়েছে। আরও একটা কথা বলি?
অবশ্যই।
আমি অন্তত ব্যবসায়িক সাফল্যের কথা ভেবে ছবি তৈরি করি না। পরিচালকের দায়িত্ব আরও বড়। আজকে এই অশান্ত সামাজিক পরিবেশে যখন ধর্মের নামে হিন্দু-মুসলমান নিয়ে কদর্য রাজনীতি চলছে তখন ‘বিজয়া’র মতো ছবি বানিয়ে পরিচালক হিসেবে আমি গর্ববোধ করছি।
এটা কি ট্রিলজি হতে পারে?
অবশ্যই। ‘বিসর্জন’এর আগে একটা গল্প রয়েছে। আবার ‘বিজয়া’র পরেও একটা অংশ রয়েছে।
সিক্যুয়েল মানেই কিন্তু সফল নয়। ভয় করেনি?
অনেকক্ষেত্রে হয়েছে নিশ্চয়ই তবে সবসময় নয়। ‘পথের পাঁচালী’র তুলনায় আমার কিন্তু ‘অপরাজিত’ অনেক বেশি পছন্দ। দেখুন ফাঁকিবাজি বন্ধ করে মন দিয়ে ছবি করলেই আর ভয় করবে না (মুচকি হাসি)।
এবারে পদ্মা, নাসের আলি এবং গণেশ মণ্ডলকে কীভাবে পাওয়া যাবে?
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনটে চরিত্রই আরও বেশি পরিণত হয়েছে। পুরনো প্রসঙ্গও সুন্দরভাবে রাখা হয়েছে। ফলে যাঁরা ‘বিসর্জন’ দেখেননি তাঁদেরও ছবিটা দেখতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।
‘বিসর্জন’ এ আবিরকে যথেষ্ট জায়গা না দেওয়ার জন্য অনেকেই অভিযোগ তোলেন। এবার কি তিনটি চরিত্রের জন্য সমান জায়গা রেখেছেন?
আগেরবার আবিরকে ইচ্ছে করেই কম জায়গা দিয়েছিলাম এবং আমরা তার ফলও পেয়েছি। এখন তো আবিরকে আমরা গোয়েন্দা হিসেবেই বেশি দেখি! এই ছবিতে আবির কিন্তু স্বমহিমায়।
আবিরকে জমি ছেড়ে দেওয়া মানে তো পর্দায় আপনার দৈর্ঘ্য কমবে!
‘চতুষ্কোণ’ বা ‘বাস্তুশাপ’ এ অতটুকু জায়গা পেয়েছিলাম। তবে চরিত্রগুলো কিন্তু দর্শকের মনে জায়গা করে নিয়েছে। আসলে ভালো অভিনয় করলে চরিত্রের দৈর্ঘ্য কখনও সমস্যা হয় না।
অন্য প্রসঙ্গ। ‘রসগোল্লা’য় উজানের অভিনয় কেমন লাগল?
খুব ভালো লেগেছে। ও প্রচণ্ড পরিশ্রম করেছে। ওকে এতটা ভালোবাসার জন্য আমি দর্শকের কাছে কৃতজ্ঞ। আমি আর চুর্ণী কখনই সম্তানকে নিয়ে বিহ্বল নই। অভিনয়ের কোথায় কোথায় উজান আরও উন্নতি করতে পারবে সেগুলো ওকে আমরা বলেছি। সাফল্য-ব্যর্থতা থাকবেই। আমি চাই মানুষ হিসেবে উজান যেন সকলের মন জয় করতে পারে।
এখন অনেকেই বলছেন প্রসেনজিৎ ও আপনি একটা ‘জুটি’। পরপর ছবি করছেন।
পরমব্রতর সঙ্গে তিনটে ছবি করার সময়ে আমাকে একই কথা শুনতে হয়েছে। আবার আবিরের সময়েও শুনতে হয়েছে যে আমি নাকি আবির ছাড়া ছবি করি না। টালিগঞ্জে ‘জুটি’ বলে কিছু হয় না!
এসভিএফ এর সঙ্গে আপনার বরফ কি গলেছে?
দেখুন মিডিয়ার কাজই হল যে কোনও ‘দূরত্ব’কে বিচ্ছেদ হিসেবে দেখা। দূরত্ব কিন্তু ভালোবাসারও হতে পারে। ওরা আমার দীর্ঘদিনের বন্ধু। নতুন একটা ছবি নিয়ে অনেকদিন ধরেই কথাবার্তা চলছে। চিত্রনাট্য লেখা শেষ হলে শ্রীকান্তকে (মোহতা) শোনাব। বল মারতে গেলে ব্যাট পিছিয়ে যায়। আমার সঙ্গে এসভিএর দূরত্বটাও সেরকম। ব্যাট আবার এগিয়ে আসবে এবং ছক্কা হাঁকাবে (মুচকি হাসি)।
‘জেষ্ঠপুত্র’র চিত্রনাট্য সত্ত্ব নিয়ে তো বেশ জলঘোলা হল। কী বলবেন?
প্রতীম (ডি গুপ্ত) আমার দীর্ঘদিনের বন্ধু। বিষয়টা নিয়ে আমি নিজেও খুবই বিব্রত। আমাকে সত্ত্ব দিয়েছেন ঋতুদার (ঋতুপর্ণ ঘোষ) ভাই ইন্দ্রনীল ঘোষ। দেখুন একটা কথা বলি। ২২টা মৌলিক চিত্রনাট্য নিয়ে ছবি করার পর মনে হয় না আমাকে অন্যের চিত্রনাট্য ধার করে ছবি করতে হবে।